অমর একুশে গ্রন্থমেলা-২০১৮’র শেষ দিনে বাংলা একাডেমির পরিচালক ড. জালাল আহমেদ বলেছিলেন, এবার বইমেলায় মোট চার হাজার ৫৯১টি বই প্রকাশ হয়েছে। যার মধ্যে ৪৮৮টি বই ‘মানসম্পন্ন’। বাংলা একাডেমির এই ‘মানসম্পন্ন’ বই নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে ঝড় ওঠে। ফেসবুকে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে পোস্ট দেন লেখক-প্রকাশকরা। অনেকে অভিযোগ করেন, এত অল্প সময়ে সাড়ে চার হাজার বই পড়া হলো কিভাবে? বই না পড়ে বইয়ের মান যাচাই করা হলো কিভাবে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ড. জালাল আহমেদ চ্যানেল আই অনলাইনকে বলেন: আমাদের একটা গবেষক দল প্রাথমিকভাবে এটা বিচার করেছে। ২৮ দিনের মধ্যে সাড়ে চার হাজার বই তো পড়া সম্ভব না। তাই বইয়ের বানান, সম্পাদনা, বইয়ের নাম, প্রচ্ছদ, কভার, এসব দিক বিবেচনা করে বইয়ের মান নির্ণয় করা হয়েছে।
তিনি বলেন: বই না পড়েও বোঝা যায় কোন বইটা মানহীন।
ভবিষ্যতে মান নিশ্চিত করার জন্য বিস্তর গবেষণা বা মান নির্ণয় পদ্ধতি চালুর কোনো পরিকল্পনা আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন: নিশ্চয়ই আছে। তবে সেই পদ্ধতির বিষয়ে কিছু বলতে পারেননি তিনি।
বাংলা একাডেমির এই মানদণ্ডের বিষয়ে লেখক, প্রকাশক মঈনুল আহসান সাবের ফেসবুকে লিখেছেন: মানসম্পন্ন বই বা মানসম্পন্ন না, বোঝার জন্য বাংলা একাডেমি কী ধরনের মেশিন ব্যবহার করে?
অন্যপ্রকাশের প্রকাশক মাজহারুল ইসলাম লিখেছেন: বাংলা একাডেমি কি ৪৮৮ টি মানসম্পন্ন বইয়ের তালিকা প্রকাশ করতে পারবে? তাহলে ভুল করে নিম্নমানের বই কেনার ঝুঁকি থেকে রেহাই পেতাম!
লেখক ওয়ালিউল সাকিব লিখেছেন: বইমেলায় প্রকাশিত বই ৪ হাজার ৫৯০টি, এর মধ্যে মানসম্পন্ন বই ৪৮৮ টি। ‘প্রকাশনা শিল্প’ বাংলা সাহিত্যকে ঠিক কোথায় নিয়ে যাচ্ছে, সেটা বুঝতে খুব একটা বেগ পেতে হয় না!
লেখক মনিরুল হক এমরান লিখেছেন: এবারের বই মেলায় মানসম্পন্ন বই নাকি ৪৮৮টি। বাকি ৪ হাজার ১০২টি বইয়ের নাকি মানসম্মান জলে গেছে! দাবী হলো, এই মানসম্মান না থাকা বইগুলোর প্রকাশককে জরিমানা করা হোক। যাতে আগামীতে ওইসব প্রকাশনী বই প্রকাশের আগে পাণ্ডুলিপি পড়ে দেখে। একইভাবে ধোঁকা দেয়া প্রকাশনীগুলো বন্ধ করে দেয়ার উদ্যোগ নেয়া হোক।