দেড় দশক ধরে যুদ্ধ চলে আসা আফগানিস্তানে যে ক্রিকেট খেলা হবে সেটাই ভাবেনি অনেকে। সেই আফগানরা যখন একের পর এক চমক জাগিয়ে, ক্রিকেটবিশ্বের শ্রদ্ধা অর্জন করে টেস্ট স্ট্যাটাস পেল তাতে অবাক অনেকেই। কিন্তু তাতে আফগানদের কী আসে যায়? দেশটির জনগণ এখন মোহাম্মদ নবী, রশিদ খানদের সাদা পোশাক প্রাপ্তির আনন্দ উদযাপনেই ব্যস্ত।
বৃহস্পতিবার ইংল্যান্ডের ওভালে আইসিসির সাধারণ সভায় সদস্য দেশগুলোর সর্বসম্মতিক্রমে একাদশ এবং দ্বাদশ দেশ হিসেবে টেস্ট মর্যাদা পেয়েছে আয়ারল্যান্ড এবং আফগানিস্তান।
তালেবানদের হুমকি-হামলায় জর্জরিত যে দেশ ক্রিকেট খেলার সাহস পেত না এখন তারাই যখন ক্রিকেটের অভিজাত অঙ্গনে পা ফেলেছে আনন্দতো একটু বেশি হবেই। আফগানিস্তান ক্রিকেট বোর্ড প্রধান আতিফ মাশালের কথায় বেরিয়ে এসেছে সেই আনন্দের বহিঃপ্রকাশ, ‘আফগানিস্তানের বহুদিনের লালিত স্বপ্ন এই অর্জন, আমরা অনেক দিন থেকেই ব্যাকুলভাবে চেয়ে ছিলাম এই স্ট্যাটাসের জন্য।’
আফগানিস্তানকে টেস্ট দল হিসেবে স্বীকৃতি দেয়ায় মিশাল ধন্যবাদ জানিয়েছেন সমস্ত টেস্ট দলগুলোকে, ‘আমরা টেস্ট স্ট্যাটাস এবং পূর্ণ সদস্যপদের জন্য সকলের কাছে অত্যন্ত কৃতজ্ঞ। আমি আমাদের ক্রিকেট বোর্ডকে ধন্যবাদ জানাই। এমনকি পুরো দেশকেও।’
কেবল স্বীকৃতি পেলেই যে টেস্ট খেলা যায় না এ নিয়েও এখন ভাবতে হচ্ছে আফগানদের। কাবুলের ২৪ বছর বয়সী তরুণ মোহাম্মদ দাউদ যেমন শঙ্কিত তাদের অবকাঠামো নিয়ে, ‘আফগানিস্তানে আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলার মতো কোনও মাঠ নেই। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে এখানে স্বাগতিকদেরই জীবনের নিরাপত্তা নেই। এর চেয়ে লজ্জার কিছু হতে পারে না যে আপনি টেস্ট খেলার সুযোগ পেলেন অথচ নিজের দেশে আপনাদের খেলার মতো মাঠ নেই।’
গত বছর থেকে শারজাকেই নিজেদের হোম গ্রাউন্ড বানিয়েছে আফগানরা। পাকিস্তানি সাবেক তারকা ব্যাটসম্যান ইনজামাম-উল-হকের জায়গায় কোচ হয়েছেন ভারতের লালচাঁদ রাজপুত। এত কিছুর পরও যদি নিজেদের অবকাঠামো ঠিক করতে না পারে আফগানরা তাহলে কী উঠে আসবে ভবিষ্যতের নবী-রশিদরা? এর সঠিক উত্তর জানা নেই বোর্ড সভাপতি মায়সালেরও।
তবে তার বিশ্বাস পারবে আফগানিস্তান। একাধিকবার বিভিন্ন দেশের কাছে পরাধীনতা বরণ করার পরও যখন হাল ছাড়েনি আফগানরা, মায়সালের স্বপ্ন ক্রিকেট বিশ্বে ঠিকই প্রতিষ্ঠিত হতে পারবে সেই আফগানিস্তান।