আরেকটি শেষ ওভারের হারের মুখে পড়েছে মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স। রোববার রাজস্থান রয়্যালস ম্যাচ জিতে নিয়েছে ৩ উইকেটে। মোস্তাফিজ দারুণ শুরু করেও শেষঅবধি ৪ ওভারে দিয়েছেন ৩৫ রান, সংগ্রহে উইকেট একটি।
জয়পুরে শুরুতে ব্যাট করে বড় সংগ্রহের সম্ভাবনা জাগিয়েও নির্ধারিত ওভারে ৭ উইকেটে ১৬৭ রানের বেশি যেতে পারেনি মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স। জবাবে ৩ উইকেট আর ২ বল অক্ষত রেখে লক্ষ্য ছুঁয়ে ফেলে রাজস্থান রয়্যালস।
প্রথম ওভারেই লুইসকে (০) হারানো মুম্বাই সুরিয়াকুমার যাদব ও ঈশান কিষাণের ব্যাটে প্রতিরোধ গড়ে। দুজনে ১২৯ রান যোগ করে বিচ্ছিন্ন হন। ঈশান ফেরেন ৫৮ রানে, ৪ চার ও ৩ ছক্কায় ৪২ বলে।
যাদব ইনিংসটা ৭২ পর্যন্ত টেনে নেন ৪৭ বল খেলে, ৬ চার ও ৩ ছক্কায় সাজিয়ে। দুজনে ফেরার পরই পথ হারায় ইন্ডিয়ান্সরা। শেষদিকে ২০ বলে ২১ করে অপরাজিত থাকেন পোলার্ড। ক্রিজে আসা বাকিদের কেউ দুঅঙ্ক ছুঁতে পারেনি।
জবাব দিতে এসে দেখেশুনেই এগোতে থাকে রাজস্থান। মোস্তাফিজ বল হাতে পান চতুর্থ ওভারে। প্রথম দুটি বল ডট করেন, ব্যাটে ছিলেন স্যামসন। পরের বলে চার হাঁকান এ ব্যাটসম্যান। ওয়াইডঅফে পেয়ে কাভার দিয়ে সীমানা ছাড়া করেন। চতুর্থ বলে নেন এক। ওভারের শেষ দুটি বলের একটি ডট দিয়ে অন্যটিতে রাহানে এক রান আদায় করে নেন। ওভার ৬ রানের।
ফিজের আবার ডাক পড়ে অষ্টম ওভারে। প্রথম বলে সিঙ্গেল নেন স্যামসন। পরের বলে ভয়ঙ্কর স্টোকসকে ডট করান প্যাডে বল লাগিয়ে। জোড়াল আপিল করেন মুম্বাইয়ের ফিল্ডাররা। আম্পায়ারের সাড়া না পেয়ে রিভিউ নেন রোহিত। অবশ্য বেঁচে যান স্টোকস। ইংলিশ অলরাউন্ডার তার পরের বলে সিঙ্গেল নিয়ে প্রান্ত বদলান। স্যামসন ও স্টোকস মিলে শেষ তিন বলেও এক রান করে বের করে নেন। মোট ৫ রানের ওভার কাটে।
ইনিংসের ১৪তম ওভারে মোস্তাফিজের শরণাপন্ন হন রোহিত। প্রথম বলে আসে ২ রান। স্টোকস সেসময় পয়েন্টে ধরা পড়ছিলেন প্রায়! কিন্তু মার্কান্দের সামান্য ওপর দিয়ে বল চলে গেলে বেঁচে যান। পরের বলে কাভারের ওপর দিয়ে চার হাঁকিয়ে চাপ কমান স্টোকস। শর্ট এন্ড ওয়াইড বলটি ফিজ যেন করেছিলেন শট খেলার আমন্ত্রণ জানিয়েই। তাতে স্টোকস সাড়া দেন পুরো হাত খুলেই। সফলও হন।
ওই ওভারের পরের তিন বলে একটি করে রান বের করে নেন স্টোকস ও স্যামসন। শেষ বলে স্যামসনের থেকে ডট আদায় করে নেন মোস্তাফিজ। ৯ রানের ওভার কাটে।
বুমরাহর ডাবল উইকেট ওভারে ম্যাচ ততক্ষণে জমে উঠেছে। মোস্তাফিজ ১৮তম ওভারের প্রথম বলে ক্লাসেনকে সাজঘরে পাঠিয়ে সেটি আরও জমিয়ে তোলেন। অ্যাঙ্গেল বলটি ব্যাটে চুমু দিয়ে বেরিয়ে গেলে শরীর অনেকটা এলিয়ে দিয়ে বল গ্লাভসবন্দী করেন উইকেটরক্ষক ঈশান কিষাণ।
পরের বলে এক নেন গৌথাম। তৃতীয় বলটি নো করে বসেন ফিজ। ফ্রি-হিটের বলটিতে অবশ্য বেশি রান আসেনি, কেবল এক-ই নিতে পারেন আর্চার। পরের বলে গৌথাম নেন দুই। পঞ্চম বলে মিডল স্টাম্পের গুডলেংথের বলটি যখন উড়িয়ে বাউন্ডারি ছাড়া করলেন এ ব্যাটসম্যান, রোহিত হতাশই হন। ফিজও হতাশ, সেটাই কিনা পরের বলে চার হজম করে নিজের কোটা শেষ করাল কাটার মাস্টারকে। ১৫ রানের ওভার।
সেই যে রানের চাকা ঘুরল, আর থামেনি। ১৯তম ওভারে ১৯ রান খরচ করেন বুমরাহ। কমতে কমতে শেষ ওভারে ১০ রান দরকার পড়ে রাজস্থানের। হার্দিক প্রথম বলে উইকেট নিলেও দ্বিতীয় বলে চার আর চতুর্থ বলে ছয় দিয়ে ম্যাচের ইতি ঘটান দুই বল বাকি থাকতেই।
জয়ের পথের কারিগর সাঞ্জু স্যামসনের ৩৯ বলে ৫২, বেন স্টোকসের ২৭ বলে ৪০ ও কৃষানাপ্পা গৌথামের ১১ বলে ৩৩ রানের ঝড়ো ইনিংস। ৪ চার ও ২ ছক্কায় সাজানো গৌথামের ইনিংসটি শেষের আঁচরটুকু দিয়েছে রাজস্থানের জয়ের ক্যানভাসে।