চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ

মেয়েরা কেন টুপটাপ এসি আশফাকের প্রেমে পড়ছে?

২৪তম বিসিএসের কর্মকর্তা। সহকারি কমিশনার (এসি) হিসেবে কর্মরত ঢাকা মেট্রোপলিটান পুলিশে। ডিএমপির সোয়াট (স্পেশাল উইপন্স অ্যান্ড ট্যাকটিকস) টিমের দায়িত্বে আছেন। ঘরে তার সন্তানসম্ভবা স্ত্রী। গত তিন সপ্তাহ ধরে  মেয়েরা টুপটাপ টুপটাপ তার প্রেমে পড়ছে।

কিন্তু, কেন?

সুঠাম দেহ, ভরাট কণ্ঠ আর বুদ্ধিদীপ্ত চেহারা! সঙ্গে সৎ, সাহসী এবং নিষ্ঠাবান পুলিশ সদস্যের প্রতিচ্ছবি। পুলিশের ইউনিফর্ম কিংবা সোয়াট বাহিনীর বুলেটপ্রুফ ড্রেস অথবা সাধারণ পোষাক– ‘ঢাকা অ্যাটাক’ এর এসি আশফাককে দেখে নতুন এক অ্যাকশন  হিরোর সন্ধান পেয়েছে বাংলা চলচ্চিত্র। এসি আশফাক চরিত্রে অসাধারণ অভিনয় করা এবিএম সুমন তাই তরুণীদের কাছে নতুন এক সেনসেশনের নাম। বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রী কিংবা কর্পোরেট চাকুরিজীবী, সংস্কৃতিকর্মী কিংবা টেলিভিশন সংবাদ উপস্থাপক– তরুণীরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এসি আশফাকের জন্য উজাড় করে তাদের ভালোবাসা  প্রকাশ করছে।

তাদের সামনে পুলিশের এই সাহসী কর্মকর্তা হিসেবে এবিএম সুমনকে নিয়ে এসেছে ‘ঢাকা অ্যাটাক’।

মুক্তির চতুর্থ সপ্তাহেও প্রেক্ষাগৃহগুলোতে দর্শকের উপচে পড়া ভিড়। আরিফিন শুভ কিংবা শতাব্দী ওয়াদুদের পাশাপাশি সুমনকে দেখতেও অনেকে ছুটে চলেছেন প্রেক্ষাগৃহে। যারা জেনে গেছেন তারা তো বটেই, যারা জানতেন না তারাও সিনেমা দেখার পর বেশি করে সুমনের কথাই আলোচনা করছেন। ‘ঢাকা অ্যাটাক’-এর মতো এবিএম সুমনও জনপ্রিয়তা অর্জন করেছেন দর্শকদের কাছে, মেয়েদের কাছে আরো বেশি।

জঙ্গিবাদবিরোধী অভিযানে সাফল্য দেখানো স্বপ্নের সোয়াট বাহিনীর একজন অফিসার যেরকম হওয়া উচিত বলে দর্শকদের কল্পনা, সুমন তাকেও ছাপিয়ে গেছেন।  চরিত্রটি ফুটিয়ে তোলার জন্য পরিশ্রমও করেছেন অনেক।

ঢালিউড কি তাহলে নতুন অ্যাকশন হিরো পাচ্ছে? এমন প্রশ্নে অনেকেই বলেছেন, পেয়ে গেছে এরইমধ্যে।

এ বি এম সুমন

‘ঢাকা অ্যাটাক’ মুক্তির পর শুধু তার অভিনয়ের প্রশংসা হয়েছে এমন নয়, অনেক নারী দর্শক তার প্রেমে পড়ার কথাও জানিয়েছেন। প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে ‘ঢাকা অ্যাটাক’ দেখার পর তাদের সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে অনুভূতি প্রকাশে।

একাত্তর টেলিভিশনের বিশেষ সংবাদদাতা নাজনীন মুন্নি লিখেছেন: তার নাম আশফাক। সোয়াত টিমের টিম ইনচার্জ। মোটামুটি তার প্রেমে পড়ে হাত পা ভাঙ্গা অবস্থায় আছি। সিনেমার হিরো দেখে প্রেমে পড়ে যাওয়া এখন টিন এজারদেরও হয় না। কিন্তু হিরো না, সাইড এই নায়ক আমাকে মুগ্ধ করে ফেললো। এমন স্মার্ট সুপুরুষ, ব্যক্তিত্ব আর অভিনয়। এই ভদ্রলোক বাংলাদেশী এবং আমি বাংলা সিনেমা দেখছি, আমাকে বারবার তা ভুলিয়ে দিচ্ছিলো। কত বছর, কত যুগ পর বাংলা সিনেমা দেখলাম। কোন সিনেমা এত আনন্দ দিতে পারে, কোনো সিনেমা এতো ভালো লাগা দিতে পারে অবিশ্বাস্য। সিনেমার পরিচালকের রুচিবোধ, প্রতিটি চরিত্রকে কি ভীষণ দূর্দান্ত করে তুলে ধরা (নায়িকার ন্যাকামী বাদে, নিজে সাংবাদিক হিসেবে নিজেই এই ন্যাকামীতে অস্বস্তিতে পড়ছিলাম)।

‘আমি মুগ্ধ। অনেকদিন পর বাংলাদেশ নিয়ে গর্বের অনুভূতি টের পেলাম। অনেকদিন পর আনন্দের কান্না পেলো। এই আশফাক কে কেউ খুঁজে দেন ভাই।’

আফরোজা সোমা নামে একজন লিখেছেন, ‘এমন সুন্দর অভিনয় করে আর এমন সুন্দর কণ্ঠস্বরওয়ালা যুবকের সিনেমা বা অন্য কোন কাজ আগে চোখে পড়ে নাই কেন?’

ফেরদৌসি আহমেদ নামের আরেক দর্শক এর মন্তব্য: সবচেয়ে বেশি ভালো লেগেছে সোয়াত টিমের আশফাককে! এত্ত বেশি হ্যান্ডসাম। ক্রাশ খেয়েছি তার উপর। তার অভিনয়, কথা বলার ধরন সবকিছুই অসাধারণ ছিল’।

সুমনকে নিয়ে এমন হাজারো মন্তব্য সামাজিক মাধ্যম জুড়ে।

 

ভক্তদের মতামত
ভক্তদের মতামত

মডেলিং দিয়ে যাত্রা শুরু করা এ বি এম সুমনের তৃতীয় মুক্তিপ্রাপ্ত চলচ্চিত্র ‘ঢাকা অ্যাটাক’। এর আগে মুক্তি পেয়েছে ‘অচেনা হৃদয়’ আর ‘রুদ্র: দ্য গ্যাংস্টার’। সামনে আসছে আরেকটি চলচ্চিত্র- তানিম রহমান অংশু’র ‘আদি’। এটিও অ্যাকশন ও থ্রিলারধর্মী চলচ্চিত্র। অপেক্ষায় আছেন সোহেল আরমানের ‘ভ্রমর’ আর ‘বিউটি সার্কাস’ নামে আরও দুইটি চলচ্চিত্রের জন্য।

সাত বছর অস্ট্রেলিয়ায় থেকে দেশে ফিরে সুমন নতুনভাবে নিজেকে প্রথমে প্রতিষ্ঠিত করেছেন মডেল হিসেবে। নানা পথ পেরিয়ে ‘ঢাকা অ্যাটাক’ দিয়ে অ্যাকশন মুভিতে আগামীদিনে রাজত্ব করার ইঙ্গিত। সেই পথ ধরে তার এখন লাখো ভক্ত, তাদের বেশিরভাগই মেয়ে।

 

এ বি এম সুমন
এ বি এম সুমন

সময়টা বেশ উপভোগ করছেন এসি আশফাক চরিত্রে অভিনয় করা সুমন। অবশ্য এ ব্যাপারে প্রশ্ন করা হলে একটু লাজুক লাজুক কণ্ঠে বললেন: পর্দার আশফাক আর বাস্তবের সুমন একেবারেই আলাদা। আশফাক চরিত্রের প্রেমে পড়লে ভুল করবেন।

প্রেমে পড়া মেয়েদের জন্য আরো দুঃখজনক খবর: আরো অনেকদিন একা একার জীবন কাটাতে চান সুমন। আপাততঃ এসব নিয়ে ভাবতে চান না। ভাবনার পুরোটা জুড়েই চলচিত্র। বিশেষ করে ‘ঢাকা অ্যাটাক’ এর সিকুয়েল হিসেবে ২০১৯ সালে যে সিনেমাটি আসবে সেই ‘ঢাকা অ্যাটাক এক্সট্রিম’।

সুমনকে নিয়ে আশাবাদী পরিচালক দীপঙ্কর দীপন। ‘ঢাকা অ্যাটাক এক্সট্রিম’ ছাড়াও তার পরের সিনেমাতেও থাকেবেন সুমন। সেখানে তিনি এসি আশফাক হিসেবে না থাকলেও ‘ঢাকা অ্যাটাক এক্সট্রিম’ এ নিশ্চিত করেই থাকবেন আশফাক হিসেবে। তবে, এসি হিসেবেই যে থাকবেন সেটা কেউ নিশ্চিত করতে পারছেন না। যদি বয়স বেশি দেখানো হয় নিশ্চিতভাবেই তাহলে এসি হিসেবে আর থাকবেন না। ভক্তরা কি সেটা চাইবে?