দেউলিয়া হওয়ার দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে গেছে বার্সেলোনা। পরিস্থিতি এতটাই সংকটাপূর্ণ, আগামী জানুয়ারিতে খেলোয়াড়দের বেতন কীভাবে হবে তা নিয়ে প্রকট দুশ্চিন্তায় ভারপ্রাপ্ত সভাপতি কার্লেস টেসকুয়েটস।
ক্লাবের এই করুণ অবস্থার জন্য সাবেক সভাপতি জোসেপ মারিয়া বার্তেমেউকে সরাসরি দোষ দিচ্ছেন টেসকুয়েটস। তার দাবি, গত দলবদলে লিওনেল মেসিকে বিক্রি করে দিলে দুর্দিন দেখতে হতো না বার্সাকে!
বায়ার্ন মিউনিখের কাছে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে ৮-২ গোলে বিধ্বস্ত হওয়ার পর বার্সা ছাড়ার ইচ্ছার কথা জানান দেন মেসি। ৭০০ মিলিয়ন ইউরো রিলিজ ক্লজ আর আইনি লড়াইয়ের হুমকি দিয়ে আর্জেন্টাইন ফরোয়ার্ডকে আটকে রেখেছিলেন সাবেক বিগত প্রেসিডেন্ট বার্তেমেউ। প্রিয় ক্লাবকে কাঠগড়ায় নিতে চান না বলে আরেকটা মৌসুম থেকে যাওয়ার পক্ষে রায় দেন মেসি নিজেও।
মেসিকে যদি তখন যেতে দিতেন বার্তেমেউ, বছরে তাকে অন্তত ১০০ মিলিয়ন ইউরো বেতন দেয়ার দুশ্চিন্তায় পড়তে হতো না বার্সাকে। এ মুহূর্তে বিশ্বের সবচেয়ে দামি স্কোয়াড চালাচ্ছে বার্সা। যার মোটা অংশ যায় কেবল আর্জেন্টাইন অধিনায়কের পকেটেই।
যদিও কাটছাঁটের করে খেলোয়াড়রা কম বেতন নিতে রাজি হয়েছেন। তাতেও দুশ্চিন্তা কমছে না। কারণ ৩০ শতাংশ কম পাওয়ার পরও যে বেতন হবে মেসির, সেটা দিয়ে একটা মাঝারি মানের দল চালানো বেশি সহজ। সোজাভাবে বলতে গেলে, বার্সার জন্য একটা বোঝা হয়ে গেছেন ৩৩ বছর বয়সী ফরোয়ার্ড। তিনি ক্লাব ছাড়লেই বরং অনেকে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলবেন।
বার্সা যে এতটা করুণ অবস্থায় আছে, জানার পরও বিষয়টা লুকিয়ে মেসিকে ধরে রাখার প্রত্যয় নিয়ে নিজেদের প্রচারণা চালাচ্ছেন প্রেসিডেন্ট প্রার্থীরা। টেসকুয়েটসের সে চিন্তা নেই। তাই সোজাসুজি বলতে পারছেন ক্লাবের কতটা ক্ষতি করে গেছেন আগের প্রেসিডেন্ট বার্তেমেউ। তার জায়গায় হলে মেসিকে ধরে রাখার কোনো চেষ্টাই করতেন না বলে রেসওয়ানকে জানিয়েছেন টেসকুয়েটস।
‘যদি আর্থিক দিক থেকে বলি, বলবো মেসিকে ছেড়ে দেয়াই হতো বুদ্ধিমানের কাজ। এই দৃষ্টিকোণ থেকে মেসিকে বিক্রি করে দেয়াটাই হবে কাম্য।’
এই যখন পরিস্থিতি, উঠে আসছে আরেকটি প্রশ্নও। মেসির বেতনই যখন দিতে পারছে না বার্সা, নেইমারকে আনবে কীভাবে?
ব্রাজিলিয়ান তারকা নিজেই বুধবার জানিয়েছেন, আরও একবার খেলতে চান প্রিয় বন্ধুর সঙ্গে। টেসকুয়েটস জানিয়েছেন, অর্থ খরচ করে নেইমারকে আনার সামর্থ্য এখন একদমই নেই তাদের।
‘যদি সে(নেইমার) ফ্রি এজেন্ট হিসেবে আসতে চায়, তাহলে আমরা বিবেচনা করে দেখবো। আর যদি না হয়, তাহলে দলবদলের জন্য কোনো টাকা নেই। যদি না নতুন প্রেসিডেন্টের হাতে অলৌকিক কিছু থেকে থাকে। আর যদি আমরা খেলোয়াড় বিক্রি করতে পারি, আর কোচরা রাজী হন, তাহলে কেন নয়?’