সিলেটে ব্রিটিশ হাইকমিশনার আনোয়ার চৌধুরীর ওপর গ্রেনেড হামলার ঘটনায় শীর্ষ জঙ্গি নেতা মুফতি আবদুল হান্নানসহ তিন জঙ্গির মৃত্যু পরোয়ানা কারাগারে পৌঁছেছে।
গত শনিবার এ পরোয়ানা সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগার ও কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কারাগারে পৌঁছায় বলে নিশ্চিত করেন সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার মো. সগির মিয়া। তিনি জানান, সিলেটের দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল থেকে শীর্ষ জঙ্গি মুফতি হান্নান, দেলোয়ার হোসেন রিপন ও শরীফ সাহেদুল আলম বিপুলের মৃত্যু পরোয়ানা ইস্যু করা হয়।
রিপন বর্তমানে সিলেট কারাগারে রয়েছে। এছাড়া মুফতি হান্নান ও বিপুল কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কারাগারে থাকায় বিশেষ দূত মারফত তাদের মৃত্যু পরোয়ানা সেখানে পাঠানো হয়েছে।
২০১৬ সালের ২৮ এপ্রিল আলোচিত এ মামলার ১৬৭ পৃষ্ঠার রায় প্রকাশিত হয়। এর আগে ওই বছরের ১১ ফেব্রুয়ারি বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি আমির হোসেনের হাইকোর্ট বেঞ্চ এই রায় দেন। এই মামলার মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলো মুফতি আবদুল হান্নান, হুজির সিলেট অঞ্চলের সংগঠক শরীফ শাহেদুল আলম বিপুল ও দেলোয়ার হোসেন রিপন।
মামলার অন্য দুই আসামি মুফতি হান্নানের ভাই মহিবুল্লাহ ওরফে মফিজুর রহমান অভি এবং মুফতি মঈন উদ্দিন ওরফে আবু জান্দালকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। মুফতি হান্নান নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন হরকাতুল জিহাদ বাংলাদেশের (হুজি-বি) শীর্ষস্থানীয় নেতা।
২০০০ সালে গোপালগঞ্জের কোটালিপাড়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাস্থলের কাছে বোমা পুঁতে রাখার ঘটনায় প্রথমবারের মতো মুফতি হান্নান আলোচনায় আসে। ২০০১ সালে রমনা বটমূলে বোমা হামলা, ২০০৪ সালে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা কিংবা ২০০৫ সালে সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এ এম এস কিবরিয়া হত্যা মামলার মতো উল্লেখযোগ্য নাশকতার ঘটনার অন্যতম সংগঠন ও পরিকল্পনাকারী ছিল মুফতি হান্নান। তারই পরিকল্পনায় ২০০৪ সালের ২১ মে তৎকালীন ব্রিটিশ হাইকমিশনারের ওপর সিলেটের শাহজালাল (র.) মাজারে গ্রেনেড হামলার ঘটনা ঘটে।
তৎকালীন ব্রিটিশ হাইকমিশনার আনোয়ার চৌধুরী সিলেটে হজরত শাহজালালের (র.) মাজার জিয়ারত করতে যান। সেখানে দরগাহ মসজিদে জুমার নামাজ আদায় শেষে বের হওয়ার সময় প্রধান ফটকের কাছে তাকে লক্ষ্য করে গ্রেনেড হামলা চালানো হয়। হামলায় তিনজন নিহত হন। আহত হন আনোয়ার চৌধুরী, সিলেটের জেলা প্রশাসক আবুল হোসেন, জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি আবদুল হাই খানসহ প্রায় ৭০ জন।