পাকিস্তানের বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী মাশাল খান হত্যা মামলায় তদন্তের জন্য বিচার বিভাগীয় কমিশন গঠন করতে পেশোয়ার হাইকোর্টকে বাধা দিয়েছেন দেশটির সর্বোচ্চ আদালত।
একই সঙ্গে বিচার বিভাগীয় তদন্ত চাওয়ার কারণে আদালত খাইবার পাখতুনখাওয়া প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী পারভেজ খাত্তাকের প্রতি বিরক্তি প্রকাশ করেছেন। মন্ত্রীকে কারণ দর্শাতে বলাতে হয়েছে, ইতোমধ্যে প্রাদেশিক পুলিশ প্রধানের নেতৃত্বে গঠিত একটি যৌথ তদন্ত দল তদন্তের কাজ চালিয়ে যাওয়া সত্ত্বেও কেন তিনি প্রাদেশিক অধিবেশনে পেশোয়ার হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির কাছে বিচার বিভাগীয় আরেকটি কমিটি গঠনের দাবি জানিয়েছেন।
সর্বোচ্চ আদালতের প্রধান বিচারপতি মিয়া সাকিব নিসারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের একটি বেঞ্চ স্ব-প্রণোদিত হয়ে করা মামলাটিতের বুধবার শুনানি করেন। শুনানির সময় খাইবার পাখতুনখাওয়া প্রদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) সালাহউদ্দিন মেহসুদসহ সংশ্লিষ্ট অন্যান্য পুলিশ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
ওই শুনানিতে আইজিপি আদালতকে জানান, এসপি’র নেতৃত্বে তিন পুলিশ কর্মকর্তাসহ ইন্টিলিজেন্স ব্যুরোর গোয়েন্দাদের নিয়ে একটি যৌথ তদন্ত দল হত্যাকাণ্ডটি নিয়ে কাজ করছে। এর মধ্যে ৮০ শতাংশ কাজ সম্পন্ন হয়েছে এবং এর চালান খুব শিগগিরই আদালতে জমা দেয়া হবে।
পাকিস্তানের মারদান শহরের আবদুল ওয়ালি খান ইউনিভার্সিটির সাংবাদিকতা ও গণযোগাযোগ বিভাগের শিক্ষার্থী মাশাল খানকে ব্লাসফেমি বা ধর্ম অবমাননার অভিযোগে ১৩ এপ্রিল তার বিশ্ববিদ্যালয়েরই বহু শিক্ষার্থী মিলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে পিটিয়ে হত্যা করে। হত্যার পর মৃতদেহ পুড়িয়ে ফেলার চেষ্টা করতে গেলে বাধা দেয় পুলিশ। এই হত্যার নিন্দা জানান দেশটির প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরীফ।
এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত মোট ২৪ জনকে মাশাল খান হত্যায় জড়িত সন্দেহে গ্রেফতার করা হয়েছে। জড়িতের তালিকায় মোট ২৮ জন রয়েছে বলে জানিয়েছে খাউবার পাখতুনখাওয়া পুলিশ।
নিহত মাশাল খানকে যারা চিনতেন, সতীর্থ, বন্ধু ও শিক্ষক, তারা জানান, মাশাল ছিলেন একজন তীক্ষ্ণ বুদ্ধিসম্পন্ন কৌতুহলী শিক্ষার্থী, যিনি প্রকাশ্যে ইসলামের প্রতি আনুগত্য জানিয়ে এসেছেন। কিন্তু তিনি প্রশ্ন করতেন অনেক।
১৭ এপ্রিল ওই বিশ্ববিদ্যালয়েরই আরেক শিক্ষার্থী ওয়াজাহাত পুলিশকে দেয়া বিবৃতিতে দাবি করেন, গত ১৩ এপ্রিল তাকে তাদের শ্রেণী প্রতিনিধি মুদাসসির বশির বিশ্ববিদ্যালয়ের চেয়ারম্যানের অফিসে ডেকে নিয়ে যান। সেখানে চেয়ারম্যান তাকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সামনে মাশাল খানের বিরুদ্ধে ধর্ম অবমাননা বা ব্লাসফেমির সাক্ষ্য দিতে বলেন।