মুক্তিযুদ্ধকালীন মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় টাঙ্গাইলের মাহবুবুর রহমানের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দিয়েছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
এই মামলায় দানবীর রণদা প্রসাদ সাহা ও তার ছেলে ভবানী প্রসাদ সাহাসহ ৬২ জনকে হত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে।
আগামী ২২ এপ্রিল সূচনা বক্তব্য ও সাক্ষ্য গ্রহণের দিন ধার্য করে বিচারপতি শাহিনুর ইসলামের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল বুধবার আদেশ দেয়।
তিনটি গনহত্যাসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের তিনটি অভিযোগ গঠন করা হয়েছে এই মামলার আসামি টাঙ্গাইলের মাহবুবুর রহমানের বিরুদ্ধে।
আজ আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন প্রসিকিউটর তুরিন আফরোজ, রেজিয়া সুলতানা চমন ও তাপস কান্তি বল। আসামি মাহবুবুর রহমানের পক্ষে ছিলেন, আইনজীবী আব্দুস সাত্তার পালোয়ান।
এর আগে গত ১১ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল মাহবুবুর রহমানের বিরুদ্ধে অভিযোগ আমলে নিয়ে আদেশ দেন
আসামি মাহবুব একাত্তরে মির্জাপুর শান্তি কমিটির সভাপতি বৈরাটিয়া পাড়ার আব্দুল ওয়াদুদের ছেলে। আর মাহবুব ও তার ভাই আব্দুল মান্নান রাজাকার বাহিনীতে ছিলেন।
সেই সাথে মাহবুব একসময় জামায়াতে ইসলামীর সমর্থক ছিলেন বলে জানায় তদন্ত সংস্থা।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থার প্রধান সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান খান এর আগে বলেন, “আসামি মাহবুবুর রহমান ১৯৭১ সালের ৭ মে মধ্যরাতে নারায়ণগঞ্জের স্থানীয় রাজাকারদের সহায়তায় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর ২০-২৫ জন সদস্যকে নিয়ে রণদা প্রসাদ সাহার বাসায় অভিযান চালায়।
তারা রণদা প্রসাদ সাহা, তার ছেলে ভবানী প্রসাদ সাহা, রণদা প্রসাদের ঘনিষ্ঠ সহচর গৌর গোপাল সাহা, রাখাল মতলব ও রণদা প্রসাদ সাহার দারোয়ানসহ ৭ জনকে তুলে নিয়ে হত্যা করে তাদের লাশ শীতলক্ষ্যায় ফেলে দেয়। তাদের লাশ আর পাওয়া যায়নি।”
রণদা প্রসাদ সাহার পৈত্রিক নিবাস ছিল টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে। সেখানে তিনি একাধিক শিক্ষা ও দাতব্য প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন। এক সময় নারায়ণগঞ্জে পাটের ব্যবসায় নামেন রণদা প্রসাদ সাহা। তখন তিনি থাকতেন নারায়ণগঞ্জের খানপুরের সিরাজদিখানে।
মানবহিতৈষী কাজে ওতপ্রোতভাবে সম্পৃক্ত থাকায় ব্রিটিশ সরকার রায় বাহাদুর খেতাব দিয়েছিল রণদা প্রসাদ সাহাকে।