গতকাল রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক এ এফ এম
রেজাউল করিম সিদ্দিকীকে দুর্বৃত্তরা জবাই করে হত্যা করার পর শিক্ষক
বুদ্ধিজীবীদের মাথা বেচে টাকা আয়ের প্রবণতার বিষয়টি ফেসবুকে স্ট্যাটাসের
মাধ্যমে জানিয়েছেন একটি প্রবাসী শিক্ষক আমিনুল ইসলাম।
তিনি তার স্ট্যাটাসে লিখেছেন, সাত-আট মাস আগের কথা। ঢাকার গুলশানের মতো এলাকায় একজন বিদেশী নাগরিককে হত্যা করা হয়েছিলো! এর পর একজন জাপানী নাগরিককেও হত্যা করা হয়েছিলো। বিদেশী দূতাবাসগুলো সরকারকে চাপ দিতে শুরু করলো এবং সব রকম বিদেশি সংস্থা গুলো বাংলাদেশ থেকে নিজেদের গুটিয়ে নেয়ার চিন্তা ভাবনা শুরু করলো।
শুধু তাই না, অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেট দল বাংলাদেশে খেলতে আসলো না। ইংল্যান্ড ও আমেরিকা তাদের নাগরিকদের বাংলাদেশ ভ্রমণে সতর্কতা আরোপ করলো। সরকার যখন বুঝতে পারলো এভাবে চলতে থাকলে সমস্যা হয়ে যাবে; তারা কিন্তু ঠিকই ব্যবস্থা নিয়েছে।
এই আট মাসে কিন্তু আর কোন বিদেশী নাগরিককে হত্যা করা হয়নি বা এই ধরনের কোন সংবাদও আমরা শুনিনি। এর কারণ হচ্ছে সরকার এই বিষয়টিকে গুরুত্বের সাথে নিয়ে তড়িৎ ব্যবস্থা নিয়েছে!
তিনি আরো লিখেছেন, ২০১৩ সাল থেকে একের পর এক লেখক ও বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করা হচ্ছে। গত বছর’ই অনেককে হত্যা করা হয়েছে। এই বছর সর্বশেষ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষককে হত্যা করা হলো গতকাল। এর কিছুদিন আগে আরেকজনকেও হত্যা করা হয়েছে পুরান ঢাকার মতো এলাকায়! তাহলে এই সব হত্যাকাণ্ড বন্ধ হচ্ছে না কেন?
বিদেশী হত্যা তো বন্ধ হয়ে গেছে!
তবে তিনি শিক্ষক, বুদ্ধিজীবী হত্যার কারণ জানিয়ে লেখেন, একটা কারণ অবশ্য আমি বলে দিতে পারি। বিদেশী হত্যাকাণ্ডের পর বিদেশী দূতাবাস এবং এই দেশে অবস্থিত বিদেশী সংস্থা গুলো সরকারকে চাপ দিতে পেরেছে। সেই চাপে পড়েই সরকার বাধ্য হয়েছে তাদের নিরাপত্তা দিতে এবং এই নিয়ে আলাদা করে ভাবতে।
আর এই দেশের লেখক ও বুদ্ধিজীবী’রা? এরা কেউ আছে ইতিহাস লিখতে ব্যস্ত; সেই ইতিহাস কেউ লিখে নিজের জন্য; কেউ আবার অন্যকে ছোট করার জন্য! তবে ইতিহাস নতুন করে লেখা এদের বন্ধ হয় না মোটেই!
কেউ আবার ব্যস্ত কিভাবে এক জন আরেকজনকে হেনস্থা করা যায় সেই চিন্তা নিয়ে। এই হেনস্থা করতে গিয়ে এরা এমন সব ভাষা ব্যাবহার করে, যা কোন সভ্য সমাজে ব্যাবহার যোগ্য না! এর পরও এরা এই সমাজে প্রগতিশীল হিসেবে পরিচিত!
আর বাদ বাকীরা যে যার মত করে বিভিন্ন মহাজনের কাছে মাথা বেচে দিচ্ছে, আর এ কারণেই তাদের মাথাপিছু আয়ও বাড়ছে!
যেই দুই একজন মাথা উঁচু করে বাঁচতে চেয়েছিলো; তাদের মাথা’ই আসলে মাটি’তে পড়ে আছে! কেউ বুঝতেই পারছে না- আসলে তাদের মাথা নয়, মাটিতে লুটিয়ে আছে এই সমাজ ও রাষ্ট্র!