আগের দুই ম্যাচের হতাশা পেছনে ফেলে জ্বলে উঠলেন বোলাররা। তাতে মাঝারি পুঁজি নিয়েও বাংলাদেশ পেল বড় ব্যবধানে জয়। সিরিজের তৃতীয় ওয়ানডেতে জিম্বাবুয়েকে ১০৫ রানে হারিয়ে হোয়াইটওয়াশ এড়িয়েছে তামিম ইকবালের দল।
টি-টুয়েন্টি সিরিজের মতো ওয়ানডের সব ম্যাচেও টস হার বাংলাদেশের। সিরিজের ফলাফলেও থাকল না ভিন্নতা। জিম্বাবুয়ের কাছে ২-১ এ সিরিজ হার। শেষটায় এলো সান্ত্বনার জয়।
প্রথম দুই ম্যাচে বড় সংগ্রহ নিয়েও হার সঙ্গী হয় বাংলাদেশের। তবে তৃতীয় ম্যাচে কম পুঁজি নিয়েই সহজ জয় পায় সফরকারীরা। যার কৃতিত্ব বোলারদের।
হারারে স্পোর্টস ক্লাব মাঠে নিজেদের ৪০০তম ওয়ানডেতে আগে ব্যাট করে ৯ উইকেটে ২৫৬ রান তোলে বাংলাদেশ। আক্রমনাত্মক বোলিংয়ের সামনে ৩২.২ ওভারে ১৫১ রানে গুটিয়ে যায় জিম্বাবুয়ে।
একশর আগেই প্রতিপক্ষকে অলআউটের আশা জাগিয়েছিল বাংলাদেশ। ৮৩ রানে ৯ উইকেট হারায় স্বাগতিকরা। দশম উইকেট জুটি জয়ের অপেক্ষা দীর্ঘ করে। রিচার্ড এনগ্রাভা ও ভিক্টর নিয়াউচির ৬৮ রানের জুটিতে দেড়শ পেরিয়ে থামে জিম্বাবুয়ে।
৩১ বলে ২৬ রান করা নিয়াউচিকে বোল্ড করে জয় নিশ্চিত করেন মোস্তাফিজুর রহমান। এ বাঁহাতি পেসার নেন চার উইকেট। এনগ্রাভা ২৭ বলে ৩৪ রানে থাকেন অপরাজিত। জিম্বাবুয়ের মিডলঅর্ডার ব্যাটার ক্লাইভ মাতান্দে করেন ২৪ রান।
দুটি করে উইকেট নিয়েছেন ইবাদত হোসেন ও তাইজুল ইসলাম। জোড়া শিকারে ওয়ানডে অভিষেক রাঙান ইবাদত। হাসান মাহমুদ ও মেহেদী হাসান মিরাজ নেন একটি করে উইকেট।
টস হেরে তৃতীয়বারের মতো ইনিংসের গোড়াপত্তন করা বাংলাদেশের দুই ওপেনার তামিম ইকবাল ও এনামুল হক বিজয় উদ্বোধনী জুটিতে তোলেন ৪১ রান। সেখান থেকে আর ৬ রান যোগ হতেই সাজঘরে ফিরে যান টপঅর্ডারের তিন ব্যাটার।
এনগারাভার করা নবম ওভারের তৃতীয় বলে অফসাইডে বল ঠেলে রান নিতে গিয়েছিলেন বিজয়। অপর প্রান্তের তামিমও অনেকটা পথ দৌড়ে ফেলেন। বল তখন মাধেভেরের হাতে। মাঝপথে থেমে বিজয় আর দৌড়াননি। তামিম ফেরার চেষ্টায় ততক্ষণে অনেক দেরি করে ফেলেছেন। রান আউট হন তামিম। ৩০ বলে ৩ চারে করে যান ১৯ রান।
পরের ওভারে ব্র্যাড ইভান্সের অফ স্টাম্পের বাইরে করা শর্ট বল কাট করেন শান্ত। পয়েন্টে থাকা মাধভেরের হাতে বল জমা পড়ে। শূন্য রানে শান্ত ক্রিজ ছাড়েন। দুই বল পর উইকেট বিলিয়ে আসেন রানের খাতা খুলতে না পারা মুশফিক। ইভান্সের শর্ট বলে করেছিলেন আপার কাট, দৌড়ে দারুণ ক্যাচ নেন এনগারাভা।
চতুর্থ উইকেটে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদকে নিয়ে ৭৭ রানের জুটি গড়ে ধাক্কা সামলান বিজয়। দারুণ ব্যাটিং করে দিয়েছিলেন সেঞ্চুরির আভাস। ৭১ বলে ৬ চার ও ৪ ছক্কায় ৭৬ রানের ইনিংস খেলে বিজয় শেষে জঙ্গের বলে মাদান্ডের গ্লাভসে ধরা পড়েন।
অতি-ধীরগতির ব্যাটিং করে ৬৯ বলে ৩ চারে ৩৯ রান করে ফিরেছেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। তিনি এনগারাভার বল কাট করতে গিয়েছিলেন। বল ব্যাটের নিচের কানায় লেগে স্টাম্পে আঘাত হানে।
হাত খুলে খেলতে পারেননি মেহেদী হাসান মিরাজও। ২৪ বলে ২ চারে ১৪ রান করে সিকান্দার রাজার বলে লেগ বিফোরের ফাঁদে পড়েন। তাইজুল ৫ রান করে রানআউট হওয়ার সময় স্কোর ছিল ৭ উইকেটে ২২০ রান।
একপ্রান্তে একাই লড়াই চালিয়ে যান আফিফ। তাকে রেখে রানের খাতা না খুলে মাঠ ছাড়েন হাসান মাহমুদ ও মোস্তাফিজুর রহমান। বুক চিতিয়ে লড়াই করা আফিফ অপরাজিত থেকে দলকে আড়াইশ রানের গণ্ডি পেরিয়ে নেন।
ষষ্ঠ ব্যাটার হিসেবে মেহেদী হাসান মিরাজ আউট হলে ২৫০ পার হওয়া নিয়েই জেগেছিল শঙ্কা। আফিফ হোসেন ধ্রুবর লড়াইয়ে সেটা পেরোনো গেছে। আফিফের ৮১ বলে ৬ চার ও ২ ছক্কায় ৮৫ রানের অপরাজিত ইনিংসে জিম্বাবুয়েকে ২৫৭ রানের লক্ষ্য দেয় বাংলাদেশ।
জিম্বাবুয়ের পক্ষে দুটি করে উইকেট নিয়েছেন ব্র্যাড ইভান্স ও লুক জঙ্গে। একটি করে উইকেট এনগারাভা ও রাজার দখলে গেছে।