ভারতের পশ্চিমবঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির আল্টিমেটামের প্রতিবাদে ধর্মঘটে অংশ নেয়া সরকারি হাসপাতালের ৩০০ চিকিৎসক পদত্যাগ করেছেন।
পদত্যাগের শুরু সাগর দত্ত মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল দিয়ে। তারপর থেকেই রাজ্য জুড়ে সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসকদের গণপদত্যাগ চলছে।
ধর্মঘটের উৎপত্তিস্থল নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল (এনআরএস), উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ, আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ, এসএসকেএম, ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজের মতো অনেকগুলো সরকারি হাসপাতাল থেকেই চিকিৎসকদের পদত্যাগের খবর আসছে।
চাকরি ছেড়ে দেয়া এই প্রায় ৩শ’ চিকিৎসকের মধ্যে রয়েছেন কলকাতা, বর্ধমান, দার্জিলিং এবং উত্তর ২৪ পরগণাসহ কয়েকটি জেলার মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের বিভাগীয় প্রধানরা। তারা মেডিক্যাল শিক্ষা বিভাগের রাজ্য পরিচালক বরাবর ইতোমধ্যে ইস্তফাপত্র পাঠিয়ে দিয়েছেন।
বৃহস্পতিবারই গুঞ্জন ছড়িয়েছিল, শুধু সাগর দত্ত মেডিক্যাল কলেজে নয়, গোটা রাজ্যেই গণ ইস্তফা দেয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন চিকিৎসকদের একটা বড় অংশ।
ওই আশংকাকে সত্যি করে দিয়ে ওইদিনই পদত্যাগপত্র জমা দেন এনআরএসের অধ্যক্ষ এবং সুপার। শুক্রবার দুপুরে গণপদত্যাগের চিঠি স্বাস্থ্য ভবনে পাঠিয়ে দিয়েছেন চিকিৎসকরা।
আন্দোলনরত চিকিৎসকদেরকে কাজে ফিরে যাওয়ার জন্য শুক্রবার দুপুর ২টা পর্যন্ত সময় বেঁধে দেয়া হলেও মুখ্যমন্ত্রীর এই আল্টিমেটাম মেনে নেননি কোনো চিকিৎসকই। উল্টো বরং ধর্মঘট তুলে নেয়ার জন্য ছয়-দফা দাবি জানিয়েছেন। এর মধ্যে রয়েছে মমতার নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা।
মমতা ব্যানার্জি অবশ্য আগের মতোই আবারও এই আন্দোলনকে ‘বহিরাগত’দের অপচেষ্টা বলে চিহ্নিত করেছেন।
তবে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষ বর্ধন আঙ্গুল তুলেছেন মমতার দিকে। বলেছেন, এমন পরিস্থিতি মমতার ‘মমতা’ দিয়েই সামলানো দরকার ছিল। তিনি অভিযোগ করেন, জুনিয়র ডাক্তারদের ওপর হামলাকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে উল্টো মমতা সেই ডাক্তারদেরকেই আল্টিমেটাম দিয়েছেন। তাদেরকে হুমকি দিয়েছেন। আর এর ফলেই শুধু পশ্চিমবঙ্গ নয়, ক্ষেপে গিয়েছে পুরো ভারতের চিকিৎসকরা।
ইতোমধ্যে পশ্চিমবঙ্গের চিকিৎসকদের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করে ভারতের বিভিন্ন রাজ্যের সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসকরা কর্মবিরতি ও প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করছেন।
শুক্রবার থেকে ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল এসোসিয়েশনের দেশজুড়ে ডাকা প্রতিবাদ কর্মসূচির অংশ হিসেবে সোমবার ভারতজুড়ে ধর্মঘটের ঘোষণাও দেয়া হয়েছে।