চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ

মখসুম আজম থেকে ‘মাশরাফী’

বাংলাদেশ ওয়ানডে দলের অধিনায়কের আসল নাম কী? সেই নামের সঠিক বানানই বা কী? দেশের অধিকাংশ মানুষই সেটা জানেন না। পত্র-পত্রিকায় লেখা হয় মাশরাফি বিন মর্তুজা। সঠিক বানান হবে ‘মাশরাফী বিন মোর্ত্তজা।’ অধিনায়কের নাম বিভ্রাটের সমাধান করতে যেয়ে জানা গেল আরেক তথ্য। শুরুতে তার নাম ছিল মখসুম আজম!

মাশরাফীর বাবা গোলাম মোর্ত্তজা চ্যানেল আই অনলাইনকে নিজেই এই তথ্য দিয়েছেন, ‘সবাই ওর নামের বানানটা ভুল লেখে। আমি অনেকবার বলেছি। কিন্তু কাজ হয়নি। প্রথমে নাম ছিল মখসুম আজম। এটা ওর চাচার রাখা নাম। পরে আমরা মাশরাফী বিন মোর্ত্তজা ঠিক করি। আরেকটা নাম কৌশিক। মাশরাফী শব্দের অর্থ বিনয়ী বা ভদ্র।’

হঠাৎ অধিনায়কের নাম নিয়ে আলোচনার কারণ কী? দুটি কারণ। প্রথমত, একজন কিংবদন্তির সঠিক নাম সাধারণ মানুষ জানবে না, সেটা হতে পারে না। দ্বিতীয়ত, মাশরাফী সম্প্রতি নিজেই নামের সঠিক বানান নিয়ে সাংবাদিকদের আড্ডায় কথা বলেছেন।

কীভাবে তিনি দিনের পর দিন ‘মাশরাফি’ নামে পরিচিত হলেন? তার দায় পুরোপুরি সংবাদ মাধ্যমকে দেয়া যায় না। কারণ মাশরাফী নিজে বিষয়টি নিয়ে খুব একটা প্রশ্ন তোলেননি।

মাশরাফী দীর্ঘদিন দেশের প্রথমসারির গণমাধ্যম প্রথম আলোয় কলাম লিখছেন। সেখানে তাকে ‘মাশরাফি’ হিসেবেই উপস্থাপন করা হয়। পত্রিকাটির ক্রীড়া সম্পাদক উৎপল শুভ্র চ্যানেল আই অনলাইনকে বলেন, ‘আমাদের পত্রিকায় যখন কলাম লিখতেন, তখন দু-একবার বলেছেন। কিন্তু অত জোর দিয়ে বলেননি। তাই আমরাও বানানটা মাশরাফি লিখে গেছি। এটা তো প্রায় প্রতিষ্ঠিত। কেউ নতুনভাবে ব্যবহার করলে করতে পারে।’

মাশরাফীকে নিয়ে লেখা বই

‘মাশরাফি’কে নিয়ে বই লিখেছেন দৈনিক ইত্তেফাক পত্রিকার জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক দেবব্রত মুখোপাধ্যায়। বইয়ের নাম ‘মাশরাফি’। এই বই মাশরাফী নিজে পড়ার পর প্রকাশের অনুমতি দেন। সেখানে কোথাও ‘মাশরাফী’ বানান লেখা হয়নি।

‘আমি যখন বই লিখেছি তখন উনি নিষেধ করেননি। তাই মাশরাফি বানানটা ব্যবহার করেছি। এখন নিয়ম হচ্ছে, ব্যক্তি যেভাবে নামটা লেখেন, সেভাবে লেখা উচিত,’ বলেন ক্রীড়া লেখক ও সাংবাদিক দেবব্রত মুখোপাধ্যায়।

তারকাদের নামের বানান নিয়ে বিভ্রান্তি নতুন কিছু নয়। ধারাভাষ্যকার আতহার আলী খানকে অনেকে ‘আতাহার’ বলেন। ২০১৫ সালে মিরপুর বসে এই প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপকালে নিজেই বলেছিলেন, ‘‘আমার নামের বানানটা কিন্তু ‘আতা’হবে না। হবে ‘আত’। আসলে অজ্ঞতাবশত অনেকে আমাকে আতাহার বলে ডেকে ফেলেন। এমনকি পত্রিকায়ও লেখা হয় দেখেছি!’’

এর আগে মুমিনুল হককে লেখা হতো ‘মমিনুল’ হিসেবে। মুমিনুল একদিন সাংবাদিকদের অনুরোধ করেন বানানটা ঠিক করে লিখতে। ওই ঘটনা তার ক্যারিয়ারের শুরুতে। তাই তিনি ‘মমিনুল’ থেকে ‘মুমিনুল’ হিসেবেই পরিচিতি পেয়েছেন। কিন্তু ক্যারিয়ারের পড়ন্ত বিকেলে থাকা মাশরাফীর বেলায় কী হবে?

তার কোনও ভক্ত বলতেই পারেন, নাম শুনে যার শিহরণ জাগে, তার বানানে কীইবা আসে যায়। হোক তিনি ‘মাশরাফি’ কিংবা ‘মাশরাফী’। শব্দটা কোটি হৃদয়ে নায়ক হিসেবেই গেঁথে থাকবে, ‘মাশরাফি’।

স্যরি। মাশরাফী!