সম্প্রতি সাউথ আফ্রিকায় করোনাভাইরাসের নতুন ধরন ওমিক্রন শনাক্তের পর তা প্রতিরোধে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা পরামর্শ দিয়েছে আগের দুই দফার সাথে ‘বুস্টার ডোজ’ হিসেবে আরেক দফা ভ্যাকসিন দিতে। এরই মধ্যে বিভিন্ন দেশ সেই কার্যক্রম শুরু করেছে। গবেষকদের দাবি, দুই ডোজ ভ্যাকসিন মানুষকে ওমিক্রনের বিরুদ্ধে সুরক্ষা নিশ্চিত করতে পারে না। সেজন্যই বুস্টার ডোজ প্রয়োজন।
নতুন এই উদ্যোগে পিছিয়ে নেই বাংলাদেশও। এজন্য আগামীকাল মঙ্গলবার থেকে শুরু হচ্ছে বুস্টার ডোজের কর্মসূচি। যদিও পরীক্ষামূলকভাবে গত ১৯ ডিসেম্বর রাজধানীতে ৬০ জনকে বুস্টার ডোজ দেওয়া হয়। যার শুরু হয়েছিল দেশে করোনাভাইরাসের প্রথম ভ্যাকসিন নেওয়া নার্স রুনু ভেরোনিকা কস্তা।
মঙ্গলবার ঢাকায় বুস্টার ডোজ দেওয়া হবে মূলত যাদের বয়স ৬০ বছরের বেশি এবং করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সামনের সারিতে আছেন। তবে তাদের গত ছয় মাসের মধ্যে দ্বিতীয় ডোজ নেওয়া থাকতে হবে। এ জন্য অবশ্য নতুন করে সুরক্ষা অ্যাপে নিবন্ধন করতে হবে না। যারা এই ক্যাটাগরিতে পড়বেন, তাদেরকে এসএমএস দিয়ে জানিয়ে দেওয়া হবে। সেই এসএমএস কেন্দ্রে দেখিয়ে ভ্যাকসিন নেওয়া যাবে।
বাংলাদেশ যেদিন আনুষ্ঠানিকভাবে বুস্টার ডোজ কর্মসূচি শুরু করছে, তার আগের দিন সোমবার করোনাভাইরাস শনাক্তের সংখ্যা আগের দিনের তুলনায় বেড়েছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বলছে, গত এক সপ্তাহে করোনায় মৃত্যুর সংখ্যা কমলেও বেড়েছে শনাক্তের হার। এই সময়ে (এক সপ্তাহে) ২১৭০ জন রোগী শনাক্ত হয়েছে। আগের সপ্তাহে এই সংখ্যা ছিল ১৭৫৮ জন। তার মানে নতুন রোগীর বেড়েছে ২৩ শতাংশেরও বেশি। তবে আশার কথা এই সময়ে আগের তুলনায় মৃত্যুর সংখ্যা কমেছে। আগের সপ্তাহে সারাদেশে মৃত্যুর সংখ্যা ছিল ২০ জন। এই সপ্তাহে তা কমে দাঁড়িয়েছে ১২ জনে।
আমাদের ভয়, শঙ্কা এখানেই। কেননা অতীত অভিজ্ঞায় দেখেছি; করোনার শুরুতে আক্রান্তের সংখ্যা কম থাকলেও প্রথম এবং দ্বিতীয় ঢেউয়ে তা আর নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব হয়নি। যার অন্যতম কারণ ছিল মানুষের গা ছাড়া ভাব। বুস্টার ডোজের পাশাপাশি এই জায়গাতেও জোর দিতে হবে। কেউ ভাবছে করোনা চলে গেছে, কেউ আবার বলছে, করোনা বলে কিছু নেই। এমন অপপ্রচারে করোনা প্রতিরোধে যে লড়াই, তা ক্ষতিগ্রস্থ হতে পারে।
আমরা মনে করি, আরও বেশি জনগোষ্ঠীকে ভ্যাকসিনের আওতায় আনার পাশাপাশি বুস্টার ডোজের সংখ্যাও বাড়াতে হবে। বিশেষ করে ঢাকার বাইরে। একই সাথে স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে হবে। তবেই করোনার বিরুদ্ধে বিজয় সম্ভব।