শীতে ভোলার উপকূল ও দুরবর্তী বিভিন্ন চরে চলছে অতিথি পাখি নিধন। এক শ্রেনীর পাখি শিকারী বিষ ও নানা রকমের ফাঁদ পেতে ধরছে অতিথি পাখি। স্থানীয় বন-বিভাগ ও প্রশাসনের কার্যকরি নজরদারি না থাকায় শিকারীদের দৌরাত্ম বেড়েই চলেছে।
অনুকুল পরিবেশ বুঝে শীতপ্রধান অঞ্চলের পাখি এদেশের যে জায়গাগুলোতে অস্থায়ী আবাস গড়ে তার মধ্যে অন্যতম ভোলা উপকুল। দৌলতখানের নেয়ামতপুর, মদনপুর, চরফ্যাশনের তারুয়া, কুকরী-মুকরী, ঢালচর, চর পালিতাসহ ২০-৩০টি চরে এবার এসেছে বিভিন্ন প্রজাতির লাখ লাখ অতিথি পাখি। পাখিদের কলতানে মুখর হয়ে উঠেছে চরগুলো।
কিন্তু দুর্গম চরাঞ্চলে গত কয়েক বছর ধরেই বাড়ছে পাখি শিকারীর উপদ্রব। রং বেরংয়ের পাখা মেলা পাখি প্রতিনিয়ত ধরা পড়ছে শিকারীদের হাতে। প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছে ধানের সঙ্গে ওষুধ মিশিয়ে পাখিদের খাওয়ানো হয়।এই ওষুধ খেয়ে কিছু পাখি মরে যায়, আর কিছু পাখি মানুষজন ধরে নিয়ে যায়। শিকারী চক্র অতিথি পাখি নিধনের পর বিক্রি করে বিভিন্ন হোটেলে ও বাসাবাড়িতে।
স্থানীয়রা বলছেন, শিকারীদের উপদ্রবের কারণেই এ বছর পাখির আগমন কমে গেছে। বিষপ্রয়োগ করে নিধন করা এসব অতিখি পাখির মাংস খেলে জটিল রোগের আশংকা রয়েছে বলে জানাচ্ছে স্বাস্থ্য প্রশাসন।
ভোলার সিভিল সার্জন ডা: ফরিদ আহমেদ বলেন, বিষ প্রয়োগের পর এই পাখির মাংস খেয়ে মানুষের লিভার অথবা কিডনী নষ্ট হতে পারে।
বন বিভাগ ও প্রশাসনের দাবি, পাখি নিধন বন্ধে তৎপরতা রয়েছে তাদের।
ভোলার উপকূলীয় বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো: রুহুল আমিন বলেন, কেউ যেন অতিথি পাখি নিধন করতে না পারে সেজন্য দুটি রেঞ্জে একটি করে টহলদার নিযুক্ত রয়েছে।
ভোলা দক্ষিন জোন কোস্টগার্ডের অপারেশন অফিসার নুরুদ্দিন মো: খালিদ বলেন, আমাদের মোবাইল টিম মাঠে নিযুক্ত রয়েছে, যে কোন অভিযোগ পেলেই আমরা যথাযথ ব্যবস্থা নিব।
ভোলার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান বলেন, আমরা এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য নির্দেশ প্রদান করেছি ।
স্থানীয়রা বলছেন, পাখি শিকার বন্ধে কঠোর ব্যবস্থা না নেয়া হলে প্রাকৃতিক ভারসাম্য নষ্ট হওয়ার পাশাপাশি ম্লান হয়ে যাবে উপকূলের প্রাকৃতিক ঐশ্বর্য্য।