দুইদিন আগে এক পাঠাও চালকের সঙ্গে পরিচয় হয় জীবিকা হিসেবে অ্যাপভিত্তিক রাইড শেয়ারিং বেছে নেওয়া শাহনাজ আক্তার পুতুলের। ওই চালক তাকে একটা স্থায়ী চাকরি দিবে বলে রাজধানীর খামার বাড়িতে নিয়ে আসেন। তারপর অভিনব কৌশলে তার স্কুটিটি ছিনতাই করে নেন।
মঙ্গলবার দুপুর আড়াইটা থেকে তিনটার ভেতর এ ঘটনাটি ঘটে বলে জানান শাহনাজ আক্তার পুতুল।
বিষয়টি জানতে চাইলে শাহনাজের মুঠোফোনে রিং হওয়ার পর সে প্রতিবেদকের পরিচয় জানার পর কেঁদে উঠেন, তিনি বার বার বলতে থাকেন ভাই আমার স্কুটিটা খুঁজে দেন, আমি ভিক্ষা করে খাই না, কষ্ট করে খাই’।
তিনি বলেন, স্কুটি কেনার ধারের টাকা এখনো শোধ হয়নি, এরমধ্যে আজ ছিনতাই হলো। আপনারা যেভাবে পারেন বাইকটি খুঁজে দেন।
ঘটনার পর থেকে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন শাহনাজ। মুঠো ফোনেও ঠিকমতো কথা বলতে পারছিলেন না। এ ঘটনায় শেরে বাংলা নগর থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে ঢাকা মহানগর পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের সিনিয়র সহকারি পুলিশ কমিশনার (এসি) আবু তৈয়ব মোহাম্মদ আরিফ চ্যানেল আই অনলাইনকে বলেন, ওই পাঠাও চালক জনি নামে পরিচিত হয়েছিল শাহনাজের সঙ্গে। ওই চালকের ব্যাপারে পাঠাও কর্তৃপক্ষের কাছে কোনো রেকর্ড নেই। আমরা সাধ্যমতো চেষ্টা করছি তার বাইকটি উদ্ধার করার জন্য।
এরই মধ্যে শাহনাজের অভিযোগ গ্রহণ করে শেরেবাংলা নগর থানায় একটি মামলা (নং- ১৪) দায়ের করা হয়েছে।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, সম্প্রতি শ্যামলীতে জনি নামের এক ব্যক্তির সঙ্গে পরিচয় হয় শাহনাজের। জনি নিজেকে পাঠাও রাইডার পরিচয় দিয়ে শাহনাজকে একটি স্থায়ী চাকরির ব্যবস্থা করে দেবে বলে আশ্বাস দেয়।
এজন্য মঙ্গলবার শাহনাজকে খামারবাড়ি এলাকায় যেতে বলে। কথা অনুযায়ী শাহনাজ খামারবাড়িতে গেলে জনি তাকে নিয়ে বিমানবন্দর যেতে বলে। এভাবে বিমানবন্দর থেকে বিভিন্ন এলাকা ঘুরিয়ে আবার মানিক মিয়া এ্যাভিনিউ রাজধানী স্কুলের সামনে এসে দুইজন চা খায়।
তখন জনি বলে, স্কুটি কিভাবে চালাতে হয়? শাহনাজকে একটু দেখার কথা বলে স্কুটির চাবি নিয়ে নেয়। এরপর সেই ব্যক্তি স্কুটি নিয়ে দ্রুত পালিয়ে যায়।
এজাহারে জনির একটি মুঠোফোন নম্বরও উল্লেখ করা হয়েছে।
শেরে বাংলা নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোপাল গণেশ বিশ্বাস চ্যানেল আই অনলাইনকে বলেন, অসহায় একটা মেয়ের বাইকটি ছিনতাইয়ে জড়িতকে ছাড় দেয়া হবে না। আমরা মামলা নিয়েছি, ইতিমধ্যে তল্লাশি শুরু হয়েছে।
মিরপুর সাড়ে এগারোতে বাসরত শাহনাজ আক্তার পুতুল প্রায় ২ মাস ধরে স্মার্টফোনের অ্যাপভিত্তিক রাইড শেয়ারিং নেটওয়ার্কের মাধ্যমে মোটরবাইক চালাচ্ছেন। বাইক শেয়ারিংয়ে নারী-পুরুষে তিনি ভেদাভেদ করতেন না। আর এ কারণে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকের কল্যাণে তিনি বেশ পরিচিতি পেয়েছেন।