ভুলের কারণে যা হারায় সেটা কখনো অাসলে ছিলই না তোমার। পথ হারাতে পারে, কিন্তু গন্তব্য হারিয়ে যাবার নয়। অার ভালবাসা কোন অর্থেই হারিয়ে ফেলবার বা জোড়া লাগাবার কোন জিনিস নয়। তৃপ্তি অার অানন্দের মধ্যে পার্থক্য রেখাটা পড়তে পারা মানুষের জন্য পৃথিবীটা কঠিন, তবে অ-জেয় নয়। চোখের দেখা দৃশ্যও কখনো অসত্য হয়।
অাবার, প্রবল সকল সুন্দরেই মিথ্যে থাকে। সত্য ও সুন্দর একসাথে বলা সহজ হলেও সত্য অার সুন্দরে একসাথে হলে সংঘাত অাসে। অসুন্দর সেখানে অাঘাত হানেই। অাবার অসুন্দরের ঝড়ে সম্পর্কের টিকে থাকবার যে অনুভূতি, সেটাই ভালবাসা।
জীবন কখনো অামাদের অানন্দের অধ্যায় খুলে পড়ায়, কখনো বেদনার। অামরা যে যে ভাবেই দিন যাপন করি না কেন, যে পেশায়, যে দেশে, সবখানে। দিনশেষে কিন্তু অামাদের সবাইকে সমস্যা-সংকট পোহাতে হয়। অানন্দের মুহূর্তগুলির উদযাপনের শ্রেণি বা রুচিভেদ হয়তো অামাদের সবাইকে ‘এক কাতার’- এ অানতে পারে না। কিন্তু, দুঃখের মুহুর্তগুলি অামাদের খুব সহজেই এক করতে পারে। দুঃখের বা শোকের সে বড় এক অদ্ভুত ক্ষমতা।
সমব্যাথা বুঝবার সমবেদনার এক ধরনের অদ্ভুত রকমের সংক্রমণতা অাছে, অন্যের একই ধরনের ব্যথাগুলিকে ছুঁয়ে যাবার।
একটা সময়, সয়ে যায় পুরনো দুঃখ। পুরনো ক্ষত সেরে উঠবার অভিজ্ঞতালব্ধ পথটি তখন প্রেরণা হয়ে ফিরে অাসে। জীবন এগিয়ে চলে তখন পরবর্তী সংকটের সাথে লড়াই করবার জন্য।অার এই সংকটের সাথে নৈতিকতা নিয়ে লড়াই করবার পথ বেয়ে জীবন শুদ্ধ হয়। তৃপ্তির উৎস অার পথ তখন জীবনকে পূর্ণাঙ্গতা দেয়। তখন সময় অামাদের ক্ষমাশীলতা শেখায়, মার্জনার মহত্বের অধ্যায়টি পড়ায় মমতায়।এই যে এক একটা লড়াই সংগ্রামের পর, খানিকক্ষণের যুদ্ধ বিরতি, সেটা পরিণতি নয়।
মৃত্যুর মুহূর্ত অবধি, জীবনের প্রবলতম পরিনতি হলো ‘গতি’। দুঃখকে অভারটেক করে, সংকটকে ভেদ করে জীবনের প্রয়োজনে বা অানন্দের কাজটি করে অাত্মাকে তৃপ্ত করবার প্রয়োজনে ছুটে চলা, লড়াইয়ের ময়দান না ফেলে না পালানো- সেইটাই জীবন।
কর্মের প্রতি ভালবাসা, বিবেকের দায়গুলির প্রতি দায়বদ্ধতা জীবনকে গতির লড়াইয়ে দাঁড় করিয়ে দেয়। মনে রাখি সবসময় ক্ষমাশীলতা, মানবিকতা শুধু একটা ‘অার্ট’ না। অার্ট হলে সবাই অভিনয়ের চেষ্টা করতো। সেটা ঈশ্বরেরও দান।
কাউকে পরামর্শ দেবার যোগ্যতা বা ধৃষ্টতা কোনটাই অামার নেই।
সুন্দর অাসলে খুউব সাধারণে থাকে। সাধারন মানুষগুলিই অসাধারণ সব কাজগুলি করে।
অাপোষ করতে পারা অার না পারার বিষয়টা মেরুদণ্ডে থাকে। শেষবধি তৃপ্তি নিয়ে বেঁচে থাকবার থাকবার চেষ্টা করি। হেরে যাওয়া এবং পেরে যাওয়ার মধ্যখানে কিছু নেই। জীবনের এটা বড় ট্রাজেডি।
পুরুষ হিসেবে নয়, মানুষ হিসেবে ভাবি নিজেকে। অার পুরুষ বেশি স্বাপ্নিক, পুরুষ কিছুটা দায়িত্বহীন প্রকৃতিগতভাবেই। অাবার নারীর মধ্যে যেমনি লক্ষ্মী রূপ থাকে, তেমনি থাকে উর্বশী রূপও। জীবন অাসলে নদীর মতন। কখনো পদ্মার মতো প্রমত্ত তটিনীর রূপ থাকে, কখনো স্রোতহীন। অাবার, প্রত্যেক জীবনেরও জোয়ার-ভাটার ক্ষণ অাসে, প্রতিটি অায়ুস্মানের একটি শ্রেষ্ঠ সময় নির্ধারণ করে দেন করুণাময়।
তবু বলি, জীবনের মহাসড়কে একবার ট্রাক-অাউট হলেই শেষ। অতএব, অভিষ্ট গন্তব্যের পানে লড়াইয়ে নিজের গতি ধরে রেখ বন্ধু। সামলে রেখো অাবেগের পাল। দেখবে, জীবন তোমাকে ঠকাবে না। কখনোই, কোনভাবেই।
ফার্স্টবয়দের যে দেশে অাত্মহত্যাও করতে হয়, সেদেশেও বিবেকের কাছে সৎ থাকবার অানন্দ তোমাকে তৃপ্ত করবে।
জীবনের সাথে মনের যে কখনো ভিন্নমত সেটাই বাস্তবতা। জীবন নিজেই অামার কাছে মাঝে মধ্যে অানন্দ নিতে অাসে।
(এ বিভাগে প্রকাশিত মতামত লেখকের নিজস্ব। চ্যানেল আই অনলাইন এবং চ্যানেল আই-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে প্রকাশিত মতামত সামঞ্জস্যপূর্ণ নাও হতে পারে।)