করোনাভাইরাস নিয়ে নতুন এক গবেষণায় দাবি করা হচ্ছে, বিভিন্ন বয়সের মানুষ এবং নারী ও পুরুষের মধ্যে ভাইরাসটির সংক্রমণের প্রাথমিক পর্যায়ে আলাদা আলাদা লক্ষণ দেখা যায়।
যুক্তরাজ্যের করা ওই গবেষণা থেকে এমন তথ্য পাওয়া গেছে।
ল্যানসেট ডিজিটাল হেলথ জার্নালে বৃহস্পতিবার প্রকাশিত ওই গবেষণাটি লন্ডনের কিংস কলেজের কয়েকজন গবেষক পরিচালনা করেছেন।
তারা জো কোভিড নামে একটি উপসর্গ গবেষণা অ্যাপ থেকে তথ্য নিয়ে এই গবেষণা করেছেন।
তারা ১৯ টি উপসর্গ নিয়ে গবেষণা করেছেন, তার মধ্যে খুবই সাধারণ কিছু লক্ষণ যেমন: স্থায়ী কাশি, ঘ্রাণশক্তি হারানো, পেটে ব্যথাও ছিল।
গবেষকরা বলেছেন, সময়মতো সেলফ আইসোলেশন এবং জরুরি পরীক্ষা নিশ্চিত করার জন্য প্রাথমিকভাবে নিজে বলা লক্ষণগুলির ভিত্তিতে ব্যক্তির করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হওয়ার সম্ভাবনা অনুমান করার লক্ষ্য ছিল আমাদের।
গবেষণা বলছে, ৬০ বছরের বেশি বয়সীরা তেমন একটা ঘ্রাণশক্তি হারাননি, আর ৮০ বছরে বেশি বয়সীদের ক্ষেত্রে তো মোটেও ঘ্রাণশক্তি যায়নি। তবে বেশি বয়সীদের ডায়রিয়া হওয়ার প্রবণতা বেশি ছিলো।
যাদের বয়স ৪০- ৫৯, তাদের মধ্যে দীর্ঘস্থায়ী কাশি দেখা যায় এবং ৮০ বছর বা তার বেশি বয়সীদের তুলনায় সর্দি বা কাঁপুনি প্রাসঙ্গিকভাবে কম ছিল। ৬০ থেকে ৭০ বছর বয়সীদের বুকে ব্যথা, অস্বাভাবিক পেশী ব্যথা, শ্বাসকষ্ট এবং ঘ্রাণশক্তি হারানো সবচেয়ে প্রাসঙ্গিক বৈশিষ্ট্য ছিল।
তাছাড়া পুরুষরা করোনায় আক্রান্ত হলে বেশি শ্বাসকষ্ট, দুর্বলতা, কাঁপুনি ও জ্বর দেখা যায়, আর নারীদের ক্ষেত্রে ঘ্রাণশক্তি হারানো, বুকে ব্যথা বা দীর্ঘস্থায়ী কাশি দেখা দেয়।
কিংস কলেজ লন্ডনের গবেষকদের একজন ক্লারি স্টিভস বলেন, করোনার প্রাথমিক লক্ষণগুলো যে বিস্তৃত এবং পরিবার বা পরিবারের প্রতিটি সদস্যের জন্য আলাদা হতে পারে তা জানা সবার জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
তিনি যোগ করেন, পরীক্ষার দিকনির্দেশনা আপডেট করা উচিত যাতে আগেই সংক্রমণ হয়েছে কিনা তা বোঝা যায়। বিশেষ করে নতুন ভ্যারিয়েন্টের ক্ষেত্রে যেটা অত্যন্ত সংক্রমণযোগ্য। সেই পরীক্ষার মধ্যে মূল নয় এমন সব লক্ষণ থাকলে ল্যাটেরাল ফ্লো পরীক্ষা করার পরামর্শও থাকবে।
গবেষণাটি উপসংহারে বলেছে, এই মডেলের উপর ভিত্তি করে প্রাথমিক শনাক্তকরণ করোনাভাইরাসের বিস্তার রোধ করার এবং দক্ষতার সাথে চিকিৎসাসেবা দেওয়ার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।