চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ

বড়পুকুরিয়া হোক দুর্নীতিবিরোধী অবস্থানের বড় প্রমাণ

বিদ্যুৎ উৎপাদনের ক্ষেত্রে সরকার যখন সফলতার কথা বলছে, তখন যেন বজ্রপাত হিসেবে এল বড়পুকুরিয়া তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র বন্ধের খবর। ৫ শতাধিক মেগাওয়াটের এই বিদ্যুৎ কেন্দ্র বন্ধের কারণ ছিল কয়লা দুর্নীতির ফল। এক যুগেরও বেশি সময় ধরে চলা দুর্নীতি বন্ধ করতে না পারার কারণে শেষ পর্যন্ত এই বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি বন্ধ হয়ে গেছে।

তবে এক্ষেত্রে আশার খবর হলো- ব্যাংকিং কিংবা অন্যান্য খাতের মতো এখানে দুর্নীতির পর সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করেনি। প্রধানমন্ত্রী স্বয়ং এ বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে দায়ীদের শাস্তি এবং বিকল্প ব্যবস্থায় বিদ্যুৎ কেন্দ্র চালুর নির্দেশ দিয়েছেন বলেও গণমাধ্যমের খবরে জানা গেছে। এরপর থেকে এ বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের তৎপরতা লক্ষণীয়।

এরই ধারাবাহিকতায় বিকল্প ব্যবস্থায় বড়পুকুরিয়ার তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র চালু করতে কয়লা আমদানির সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এজন্য কমিটিও গঠন, একইসঙ্গে খনির অন্য স্থান থেকে কয়লা উত্তোলনের প্রক্রিয়াও চলছে। তবে মজুদ থাকা কয়লা দিয়ে ঈদের সময় বিদ্যুৎ কেন্দ্র চালু রাখা হবে বলে জানা গেছে।

কিন্তু দিনের পর দিন এভাবে কয়লা চুরি হলেও তা দমনে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় এবং বিভাগ পুরোপুরি ব্যর্থ হয়েছে। বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি বন্ধ হওয়ার আগে কেন তারা এ বিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারল না? ভবিষ্যতে এ ধরনের কর্মকাণ্ড বন্ধ করতে এসব প্রশ্নের উত্তর খোঁজা জরুরি। তারপরেও অনেক দুর্নীতির মতো এটা যে একেবারে চাপা পড়ে যায়নি সেটা প্রশংসার যোগ্য।

চলতি বছর নির্বাচনের বছর। সরকারের মেয়াদের শেষের দিকে এমন গুরুতর দুর্নীতির কারণে একেকটি প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যাওয়ার খবর নিশ্চয়ই তাদের জন্য সুখকর নয়। অন্তত এ কারণে হলেও সরকারের দুর্নীতিবিরোধী মনোভাবে বড়পুকুরিয়া কেলেঙ্কারি রোল মডেল হতে পারে। এক্ষেত্রে দুদককে কার্যকর প্রতিষ্ঠানে রূপান্তরের কোনো বিকল্প নেই। যেকোনো ধরনের দুর্নীতির বিষয়ে এখনই জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করতে আমরা সংশ্লিষ্ট সবাইকে আহ্বান জানাচ্ছি।