বাঙালির প্রাণের উৎসব পহেলা বৈশাখ। জাতি-ধর্ম-বর্ণ সব ভুলে সবাই যেন মিলেমিশে একাকার হয়ে যায় দিনটি বরণ করতে। বর্ণাঢ্য আয়োজনে পালিত হয় বছরের প্রথমদিন।
কিন্তু এবার প্রেক্ষাপট ভিন্ন। বৈশাখ যেন একটু ব্যতিক্রম। চিরায়ত বর্ষবরণের দৃশ্য এবার একদম নেই। মরণব্যাধী করোনাভাইরাস যেন কেড়ে নিয়েছে বৈশাখের সবটুকু রঙ। বাধ্য হয়েই সবাইকে ঘরে থাকতে হচ্ছে। এ পরিস্থিতিতে ঘরবন্দি থেকেই এক ভিডিও বার্তায় বৈশাখ নিয়ে কথা বললেন জয়া আহসান।
নববর্ষ নিয়ে স্মৃতিকাতর জয়া বলেন, শুভ নববর্ষ। পহেলা বৈশাখ এলো। কিন্তু আমরা সকলের ঘরে স্বেচ্ছাবন্দি হয়ে আছি। নববর্ষের দিনটা ঘরে বন্দি হয়ে থাকার দিন নয়। মনটা কেমন করছে না? হ্যাঁ, আমারও করছে। এবারের রমনার বটমূল একেবারে নির্জন। গানে গানে কেউ স্বাগত জানায়নি পহেলা বৈশাখকে। চারুকলায় মঙ্গল শোভাযাত্রা কিন্তু বের হয়নি। গ্রামে গঞ্জে কোথাও হাটবাজার, পথ উপচে পড়েনি ভিড়ে। লাল সাদা শাড়ি পড়া মানুষজন দেখা যায়নি। সত্যি মনটা কেমন করছে। পৃথিবীর যেখানেই থাকি এই সময়টা চাইনা দেশের বাইরে থাকি। সবসময় চেষ্টা করি পরিবার পরিজন ঘনিষ্ঠজন দেশের মানুষের সাথে বছরের প্রথমদিনটা উদযাপন করতে।
বর্তমান পরিস্থিতির কথা তুলে ধরে এই অভিনেত্রী বলেন, এবার সেই সুযোগটা নেই। কারণ করোনা ভাইরাসের কঠিন বাস্তবতা আমাদের মেনে নিতে হবে। পথে ঘাটে যে নির্জনতা, এটা আমাদের জন্যই। আমরা যদি নিজেদের নিরাপদে রাখতে পারি তাহলেই পাশের মানুষটি, বাড়ির মানুষটি, কমিউনিটির মানুষ সকলকে নিরাপদে রাখতে পারবো।
আশাবাদ ব্যক্ত করে জয়া বলেন, আমরা কত বিভৎসতা, মহামারি, যুদ্ধ পাড়ি দিয়ে এসেছি, আমি নিশ্চিত এবারও পারবো। করোনায় বাস্তবতা সত্য। কিন্তু বৈশাখ সেও তো সত্য। করোনা এসেছে উৎকণ্ঠা, আর বৈশাখ আমাদের দেয় নতুন ভবিষ্যতের প্রত্যাশা। সব বিভেদ ভুলে সবাইকে এক হতে বলে।
ঘরে বসে সবাইকে বৈশাখের আনন্দ উদযাপনের কথা বলেন জয়া। ভিডিও বার্তায় তিনি বলেন, ঘরবন্দি বলে আমরা বৈশাখের ডাকে সাড়া দেবনা তা তো হয়না! নিশ্চয়ই দেব। সমস্ত উৎকণ্ঠা মাড়িয়ে চলুন আমরা আমাদের মতো করে বৈশাখ উদযাপন করি। বাড়িতে বসে যা করা সম্ভব আমরা তাই করবো।
ঘরের দরোজা বন্ধ করলেও সবাইকে মনের দরোজা খোলা রাখতে বলেন জয়া। তার ভাষ্য: পরিবারের সাথে সময় কাটাব, গান শুনবো, কবিতা পড়বো, গাছে পানি দেব, বাগানের পরিচর্যা করবো, জানালা খুলে বুক ভরে শ্বাস নেব, আকাশ দেখব। স্বজনদের সাথে দেখা না হলেও তাদের সাথে যোগাযোগ করবো। আমরা ঘরের দরোজা বন্ধ করে আছি, কিন্তু মনের দরজা তো বন্দ করে দেইনি। নিশ্চয়ই নতুন বছর আমাদের জন্য ভালো কিছু বয়ে আনবে।