চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

বেকারদের উদ্যোক্তায় পরিণত করতে এসএমই খাতে বাংলাদেশ ব্যাংকের বিশেষ পরিকল্পনা

কৃষি ঋণের মতো ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প (এসএমই) খাতের ঋণ বিতরণের ক্ষেত্রেও লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে দেয়া হবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির।

শিক্ষিত বেকাররা চাকরির সন্ধানে না ঘুরে নিজেরাই যেনো ক্ষুদ্র শিল্প গড়ে তুলতে পারে সেই জন্যই এই উদ্যোগ নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।

রোববার রাজধানীর প্যান প্যাসেফিক সোনারগাঁও হোটেলে জনতা ব্যাংকের বার্ষিক সম্মেলন-২০১৭ অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা জানান।

গভর্নর বলেন, ‘ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প (এসএমই) আমাদের ভবিষ্যত। এর মাধ্যমে বেকারত্ব দূর করতে হবে। কারণ প্রতি বছরে চাকরির বাজারে প্রায় ১৮ লাখ বেকার যুবক প্রবেশ করে। কিন্তু চাকরি পায় ৪ লাখের কিছু বেশি। সেই হিসেবে শিক্ষিত যুবকদের বিরাট একটা অংশ চাকরি থেকে বঞ্চিত হয়। তাই এসএমই খাতে জোর দিতে হবে। যাতে চাকরির সন্ধানে বেকারদের না ঘুরতে হয়। বরং নিজেরাই যেনো ক্ষুদ্র শিল্প গড়ে তোলে স্বাবলম্বি হতে পারে সে বিষয়ে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে’।

তিনি বলেন, ‘ভবিষ্যতে কৃষি ঋণের মতো ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প (এসএমই) খাতের ঋণ বিতরণের ক্ষেত্রেও ব্যাংকগুলোকে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে দেয়া হবে। এ বিষয়ে পর্যালোচনা চলছে। এসএমইর বিকাশে বাংলাদেশ ব্যাংক অল্প সময়ে এই উদ্যোগ গ্রহণ করবে’।

ব্যাংকগুলোর উদ্দেশে গভর্নর বলেন, ‘প্রত্যেক ব্যাংকে সাইবার সিকিউরিটি নিশ্চিত করা বাধ্যতামূলক। এই জন্য সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের দক্ষতা বাড়ানোর প্রতি গুরুত্ব দিতে হবে’।

খেলাপী ঋণ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘খেলাপী ঋণ আদায়ে উদ্যোগ নেয়া জরুরী। জনতা ব্যাংকের ব্যাংকের লোকসানী শাখার সংখ্যা কমিয়ে আনাসহ শীর্ষ ২০ ঋণ খেলাপীর কাছ থেকে কাঙ্খিত পর্যায়ে ঋণ আদায়ে ব্যাংকের সকল কর্মকর্তাকে নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালন করতে হবে। পাশাপশি এখন ঋণ দেয়ার ক্ষেত্রে বিবেচনা করতে হবে, যেনো এসব ঋণ ভবিষতে খেলাপীর কাতারে না পড়ে’।

এছাড়া অর্থঋণ আদালতে যেসব মামলা রয়েছে সেগুলো নিষ্পত্তি করার বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান গভর্নর।

সম্মেলনে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, জনতা ব্যাংকের চেয়ারম্যান শেখ মো. ওয়াহিদ-উজ-জামান, ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো: আব্দুস সালামসহ পরিচালনা পর্ষদের সদস্যরা ।

জনতা ব্যাংকের চেয়ারম্যান শেখ মো. ওয়াহিদুজ্জামান বলেন, রাষ্ট্রীয় ব্যাংকগুলোর মধ্যে গত বছর সর্বোচ্চ এক হাজার ১০ কোটি টাকা মুনাফা অর্জন করে জনতা ব্যাংক; যা লক্ষ্যমাত্রার ১১২ শতাংশ। এছাড়া ২০১৬ সালে সর্বোচ্চ করদাতা জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের ট্যাক্স কার্ড ও সম্মাননা পেয়েছে ব্যাংকটি। প্রভিশনাল (প্রাথমিক) হিসাব অনুযায়ী জনতা ব্যাংকের কোনো মূলধন ঘাটতি নাই, শ্রেণিকৃত ঋণের হারও নিম্নমুখী। নাই কোনো তারল্য সংকট।

ব্যাংকের সিইও ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আবদুস সালাম বলেন, ব্যাংকের মোট ৯১০ টির মধ্যে ৭৬৪টি শাখা অনলাইনের আওতায় রয়েছে। চলতি বছরের জুনের মধ্যেই সবগুলো শাখা অনলাইনের অধীনে চলে আসবে। এছাড়া বর্তমানে ব্যাংকের শেনিকৃত ঋণের হার ১০ দশমিক ৪০ শতাংশ। যা গত বছরে ছিল ১২ দশমিক ৩৪ শতাংশ। ২০১৬ সালে লোকসানী শাখার ৭৪টি থেকে ৪৮টি নামিয়ে আনা হয়েছে। এই সংখ্যা আরো কমিয়ে আসবে।

একই সঙ্গে শীর্ষ ২০ ঋণ খেলাপীর কাছ থেকে কাঙ্খিত পর্যায়ে ঋণ আদায়ে পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে বলে জানান তিনি।