চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

যুক্তরাজ্যকে বাংলাদেশে বিশ্বমানের বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের আহ্বান বাণিজ্যমন্ত্রীর

বাংলাদেশে একটি বিশ্বমানের বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে তোলার জন্য যুক্তরাজ্যের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি।

বৃহস্পতিবার বাংলাদেশে নিযুক্ত যুক্তরাজ্যের রাষ্ট্রদূত রবার্ট চ্যাটার্টন ডিকসন বাণিজ্যমন্ত্রীর সাথে মত বিনিময় করেন। বাণিজ্যমন্ত্রীর সরকারি বাসভবনে ওই মত বিনিময়কালে তিনি এই আহ্বান জানান।

তবে বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের আহ্বানের বিষয়ে কিছু বলেননি যুক্তরাজ্যের রাষ্ট্রদূত। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।

বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থী বৃটেনে পড়া লেখা করেন। অনেকেই উচ্চ শিক্ষা গ্রহণের জন্য বৃটেনে যান। কিন্তু অনেকেই আবার ইচ্চা থাকার পরও আর্থিক সংকটে সেখানে যেতে পারেন না। বৃটেন বাংলাদেশে একটি বিশ্বমানের বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে তুললে বাংলাদেশের আরও অনেক শিক্ষার্থ সেখানে পড়ালেখা করার সুযোগ পাবে।

বাংলাদেশে সাথে যুক্তরাজ্যের বাণিজ্যিক ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক দীর্ঘদিনের উল্লেখ করে টিপু মুনশি বলেন, যুক্তরাজ্য বাংলাদেশের তৃতীয় বৃহত্তম রপ্তানি বাজার। উভয় দেশের মধ্যে বাণিজ্য বাড়ানোর অনেক সুযোগ রয়েছে। যুক্তরাজ্য ইউরোপিয়ন ইউনিয়ন থেকে আলাদা (ব্রেক্সিট) হওয়ার পর নতুন বাণিজ্য নীতিতে বাংলাদেশকে গুরুত্ব দিবে বলে আশা করছি।

তিনি বলেন, ব্রেক্সিট পরবর্তী বাণিজ্য ও বিনিয়োগে যুক্তরাজ্যের আগ্রহে বাংলাদেশ উৎসাহবোধ করছে। নতুন উদ্যমে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সঠিক পথে পরিচালনার জন্য উভয় দেশের মধ্যে বাণিজ্য আলোচনা জরুরি। এ লক্ষ্যে আগামী জানুয়ারি মাসেই উভয় দেশের মধ্যে (জি টু জি) বাণিজ্য বৈঠকের আয়োজন করা হবে।

বাংলাদেশে যুক্তরাজ্যের অনেক বিনিয়োগ রয়েছে, উল্লেখ করে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, যুক্তরাজ্যের আরও বিনিয়োগকে বাংলাদেশ স্বাগত জানাবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্যোগে বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ১০০টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলার কাজ দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে। চীন, জাপান, কোরিয়া, ভারতসহ বেশ কয়েকটি দেশ সেখানে বিনিয়োগে এগিয়ে এসেছে। ব্রিটিশ বিনিয়োগকারীরা এখানে বিনিয়োগ করলে লাভবান হবেন।

বাংলাদেশ সরকার বিদেশি বিনিয়োগের ক্ষেত্রে অনেক সুযোগ-সুবিধার ঘোষণা দিয়েছে। আগামী দিনগুলোতে বাংলাদেশ-যুক্তরাজ্য বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধির ক্ষেত্রে একসাথে কাজ করবে।

বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, আগামী ২০২৪ সালে বাংলাদেশ এলডিসি থেকে বেরিয়ে উন্নয়নশীল দেশে পরিণত হবে। এ সময় যুক্তরাজ্য বাংলাদেশকে বাণিজ্য ক্ষেত্রে চলমান সুযোগ-সুবিধাগুলো প্রদান অব্যাহত রাখবে বলে আশা করছি। বিভিন্ন দেশের সাথে অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য চুক্তি (পিটিএ) এবং মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ) করে বাণিজ্য সুবিধা সৃষ্টির জন্য বাংলাদেশ প্রচেষ্টা শুরু করেছে।

এ সময় যুক্তরাজ্যের রাষ্ট্রদূত বলেন, ব্রেক্সিট পরবর্তী বাণিজ্য ও বিনিয়োগের ক্ষেত্রে বৃটেন বাংলাদেশকে গুরুত্ব দিচ্ছে। উভয় দেশের মধ্যে বাণিজ্য বৈঠক করে এ বিষয়ে বিস্তারিত কার্যক্রম গ্রহণ করা সম্ভব। বাংলাদেশ সরকারের সাথে বৃটিশ সরকার বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধির বিষয়ে আলোচনা করতে আগ্রহী।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের সাথে বৃটেনের চলমান বাণিজ্য ও বিনিয়োগ এবং বাণিজ্য সুবিধা অব্যাহত থাকবে এবং আগামীতে তা আরও বাড়ানোর প্রচেষ্টা থাকবে। বাণিজ্য ও বিনিয়োগের ক্ষেত্রে যুক্তরাজ্য বাংলাদেশকে অধিক গুরুত্ব দেয়।

যুক্তরাজ্য বাংলাদেশে রপ্তানির একটি বড় বাজার। গত অর্থবছর বাংলাদেশ বৃটেনে রপ্তানি করেছে ৩৪৫ কোটি ৩৮ লাখ ৭০ হাজার ডলার মূল্যের পণ্য। একই সময়ে আমদানি করেছে ৪১ কোটি ৮ লাখ ৩০ হাজার ডলার মূল্যের পণ্য। উভয় দেশের মধ্যে এ বাণিজ্য আরও বাড়ানোর সুযোগ রয়েছে।