তরুণ এক বন্ধু সাংবাদিক বস্তুতই একটি সাংঘাতিক ভ্রম ধরিয়ে দিলেন। কিছুকাল আগে দুনিয়া জুড়ে একটি ডিম্ব দিবস পালিত হলো, অথচ রম্য-টম্য কিছু উৎপাদনে সক্ষম হলাম না কেন, এই অনুযোগ স্নেহভাজন ভায়ার। এই এক জীবনে কতো বস্তিতে, কতো হাটে, কতো গঞ্জে, কতোখানে গিয়ে ‘বিপ্লব আর মুক্তির’ স্বপ্নবাজ ফেরিওয়ালা হিসাবে ঘুরেছি, ভেবেছি, লিখেছি, ‘অক্ষমতার মিনার’ গড়েছি, ভাইয়াতো আর সে খবর রাখেননা। জানেননা। আন্তরিকতার অভাব ছিলোনা। মহান অক্টোবর বিপ্লবের মূল সংগঠকবৃন্দ নিশ্চয়ই ভাবেননি ‘আজি হতে শতবর্ষ পরে’ উত্তরসূরীরা এমন পরিস্থিতিতে নিপাতিত হবেন। মূল জীবন কাটিয়ে দিয়েছি ওই অক্টোবর বিপ্লবের মরীচিকায়। এমনি ‘মহা অক্ষম’ যদি সামান্য ‘বিশ্ব ডিম্ব দিবস ২০১৭’ উপলক্ষে একটি লঘু তথা হাল্কা রম্য টুকরা রচনায় সময়মতো উৎপাদনে অক্ষম হই, তাতে আর মানবসভ্যতার কীইবা আসে যায়। তবুও তরুণদের প্রতি আমার প্রবল পক্ষপাত। সামান্য একটু ডিম্ব-রম্যের আবদার। দেখিইনা অক্ষম অক্ষর উৎপাদনে সক্ষম হই কিনা! সময় বয়ে গেছে, তাতে কী!
তবে তরুণ ভ্রাতাকে বলিনি যে, মনটা মেঘলা হয়ে আছে বেশ কিছুকাল। ব্যক্তিগত পারিবারিক ভুবনের আকস্মিক কিছু কারণে। কিছুই ভালো লাগেনা। তবুও চলতে হয় প্রাকৃতিক নিয়মে। নিজের শরীরও প্রতিকূল হয়ে পড়ছে। লিখার মান সম্পর্কে সদা সচেতন আছি, তবুও অক্ষর-আবর্জনা উৎপাদনের নেশা আমার ছাড়েনা। সেই নেশাও যেন কেমন টুটে গেছে। নিজের কষ্ট নিজেই বুকে চেপে চলি। এখানে সেখানে যাই। সভার সভাপতি হয়েও চপলতা করি, মুরগীর ‘কক্ কক্’ ডিম পাড়া শব্দের মতো কলকল করে উঠি। হা! কোথায় বিশ্ব ডিম্ব দিবস আর কোথায় স্বীয় কষ্টবিম্ব বিলাপ! মাফ করবেন হে তরুণ ভায়া!
তা রচনার শুরুতে সেই আদি সওয়ালের মুখোমুখি হলাম নিজেরই কাছে। ‘মুরগী আগে না ডিম্ব আগে!’ এই প্রশ্নে কর্তৃকারকের অভাব নেই, কিন্তু কর্মকারকের দুর্ভিক্ষ! ছোটবেলা থেকেই জবাবটি আর মিলছিল না। আর আমাদের সেকালের-একালের ডিম্ব ব্যাপারিদের কাছে এহেন প্রশ্ন যে পাত্তা না পেয়ে মুহূর্তে গোত্তা খেয়ে পড়বে, তাতে আশা করি পাঠকের তিলমাত্র সন্দেহ না রহিবেক।
তা ‘মুরগী আগে না ডিম্ব আগে’ এই জটিলতায় কালক্ষেপণে কাজ নেই। অদ্যকার বক্ষ্যমান রচনা হলো বিশ্ব ডিম্ব দিবস ২০১৭। এ ব্যাপারে বিশ্ব ডিম্ব দিবস সংগঠকেরা কোন কোন ডিম্বকে দিবসের আওতাভুক্ত করেছেন, একালের ওয়েবসাইট তন্ন তন্ন করে অন্নভোজনে বিলম্ব করবার ধৈর্য ছিলোনা। তবে ভাবে সাবে মনে হয় ডিম্ব ব্যাপারিরা মেগা উষ্ট্র পাখি কিংবা মিনি কোয়েল পাখির ডিম্ব নিয়ে এই দিবস উদ্যাপনে উৎসাহিত হননি। তবে সেকালের কার্ল মার্কস আর একালের মার্ক জুকারবার্গ তত্ত্বে আর বাস্তবে যা বুঝাতে বা দেখাতে চেয়েছেন, তাতে মনে হয় দিবসটির নাম ‘বিশ্ব মুরগী ডিম্ব দিবস’ হলেই খাপে খাপ মমতাজের বাপ হয়ে যেতো।
বিংশ শতাব্দীর অন্তিম দশকে রাজনৈতিক দায়িত্বে ‘পি পি ২১’ নামে সৃষ্ট একটি উদ্যোগে যুক্ত হয়ে থাইল্যান্ড গিয়েছিলাম। কর্মসূচির অংশ হিসাবে ব্যাংকক থেকে তিনশ মাইল অতি মসৃণ মহাসড়কে ভ্রমণ করতে গিয়ে দু’পাশের গ্রামে-গঞ্জেও বিদ্যুতায়িত উন্নয়ন নির্মাণ দেখে গাইডকে জিজ্ঞেস করলাম, ১. ওসব কী! ২. সারা পথেই এমন বিটকেলে গন্ধ কেন! সদাপ্রস্তুত গাইড বললেন, আমাদের দেশে এখন অগণিত পোল্ট্রি খামার। এখন আর আমাদের নারীদের শরীর বেচে চলতে হয়না তেমন, এখন মুরগী বেচি, আন্ডা বেচি। আমরা এখন দক্ষিণপূর্ব এশিয়া অর্থনীতিতে একযোগে বিল্লি থেকে টাইগার হয়ে উঠছি। কথা শুনে একটু বজ্রপাতের বিকট শব্দে যেমন থমকে চমকে ঠান্ডা মেরে যাই, ওই আন্ডা-তথ্যও তেমনটা করে দিলো। বললাম, তোমাদের উন্নয়নকে সেলাম জানাই, এই ডিম্ব-ক্যালোরিতে তোমাদের অর্থনীতির স্বাস্থ্য সমুজ্জল হোক; তবে আপাতত একটু টিস্যু দাও, এতো বিশ্রী গন্ধ এই টাইগার পোল্ট্রি অর্থনীতির, নাসিকায় ঠেঁসে ধরে উন্নয়নের প্রাথমিক দুর্গন্ধ সামলাই।
কিন্তু ভায়েরা আমার, বোনেরা আমার, অচিরেই পোশাক শিল্পের মতো পোল্ট্রি শিল্পও যে সুনামির মতো আমাদের দেশখানিকে দখল করে নেবে, তা ভাবতেও পারিনি। আশ্চর্য! ইতোমধ্যে পোল্ট্রি শিল্পের মোরগ-মুরগীর প্রাকৃতিক বর্জ্যরে গন্ধও যে আকাশ-বাতাস জুড়ে বিরাজমান ছিলো, তার বেশ খানিকটা সমাধান হয়ে গেছে। বাংলাদেশের নিভু নিভু অর্থনীতিও যে এমন জ্বল জ্বল করে উঠবে, পৃথিবী জুড়েই তা সংশ্লিষ্ট পর্যবেক্ষকদের অক্ষিগোলককে চমকে দিলো।
অবশ্য এমনতরো উন্নয়নে অনেকেরই মন ভরছেনা। অর্থনৈতিক বৈষম্য আর অসাম্যের কথায় তারা প্রবৃদ্ধি সূচককে বৃদ্ধাঙ্গুষ্ঠ দেখিয়েই চলছেন। একজন বন্ধু অর্থনীতিবিদ অবশ্য একটি কথা বললেন ঘুরিয়ে, আর্থিক অসাম্য অবশ্যই বেড়েছে, কিন্তু গরীব আর আগের মতো গরীব নেই। গ্রামাঞ্চলে ‘কুঁড়েঘর’ প্রায় অদৃশ্য। ‘কুঁড়েঘর’ মার্কা এদেশের নতুন গ্রাম-প্রজন্মও চিনতে পারবেনা। গ্রামে মেহনতী মজুর মেলেনা। ডাব-নারকেল পাড়তে হলেও মজুরের দুর্ভিক্ষ। কৃষিতে মজুরের বিকল্পে যন্ত্রের ঘর্ঘর বাড়ছেই। রিকশা হারিয়ে যাচ্ছে অটো ইজি বাইকের গতি তরঙ্গে। তা উন্নয়ন ঝগড়াঝাটিতে মত্ত হবার মতো মস্ত কেউ নই আমি। মস্তকের গভীরতা নেই। সাদা বোকা চোখে যা দেখি তাই বলি। জ্ঞানী গুণী গভীর বিপ্লবীরা মাফ করে দেবেন এই অগভীর তথা লঘু রম্য মক্শোকারীকে।
তবে দু’দশকেই চোখের সামনে থেকে সর্ষে তেল দিয়ে ছোট্ট দেশি মুরগীর ডিম্ব ভাজির স্বাদ হারিয়ে গেল বুঝি চিরতরে। বেশ কয়েকটি গ্রামের বিয়েতে দেশি মোরগ-মুরগীর বদলে ফার্মের বড় বড় চিকেনের মশলাদার রান্না চাখলাম। দেশি মুরগী দেশি ভায়েরা উষ্ণমূল্যে বিক্রি করে দেয়। আজ দেশ জুড়ে এখানে ওখানে সেখানে পোল্ট্রি। খামারীদের বিরাট সংগঠন। ডিম্বের মূল্য পড়ে গেলে প্রতিবাদের মানবীয় কক্ কক্ কক্ দেশ জুড়ে।
পোল্ট্রির বিপদ ঘটে কয়েক বছর পর পর। হঠাৎ হঠাৎ এমন এমন ‘ভাইরাস’ আসে যে লাখ লাখ চিকেন মরে যায়, খামারীরা মুহূর্তে হয়ে পড়ে সর্বহারা। সে বিপদ মোকাবেলায়ও তাই নানারূপ প্রতিরোধ-ঔষধেরও এখন বিপুল কারবার। পোশাক শিল্পকে ঘিরে যেমন, পোল্ট্রি শিল্পকেও ঘিরে কতো রকমের তেজারতি তেলেসমাতি। পোশাকশিল্পের বর্জ্য ঝুটের ব্যাপারীরা প্রায়শ রণযুদ্ধে মেতে পরাণ খোয়ায়। কয়েক দশক ধরে দেখছি, যখন যারাই ক্ষমতাসীন, তারাই ‘ঝুট’ হ্যায়! অর্থাৎ ঝুটের ব্যবসা ক্ষমতাসীনদের ক্যাডার-ছাওয়ালদেরই হাতে। তবে ডিম্বশিল্পের সর্বশেষ সংবাদে জানলাম, পোল্ট্রি বর্জ্যওে নাকি হতে পারে নতুন কিছু মূল্যবান দ্রব্য তৈরি। তাহলেতো চিকেনের হাগু হয়ে যাবে এখন ক্ষমতাসীনদের ক্যাডারগোষ্ঠীর নব তাকবিন্দু।
এবারকার বিশ্ব ডিম্ব দিবস নিয়ে বাংলাদেশেও বেশ জোরে, শোরে, গুরু গুরু গুরুতর ডম্বরুতে আয়োজন হয়েছিল। তার আগে বলি ডিম্ব নিয়ে বয়েসী মানুষদের চিত্তবিম্বের কথা। এখন ফেসবুকের যুগ। সেখানে খোলা হাওয়া, খোলা জানালা। কতো যে কথা। কতো যে গবেষণা। কতো যে উপদেশ। সবটা কারো কানেও যায়না, মনেও ধরেনা। তবে যেইনা একদিন ফেসবুকে কেউ জানালো ‘ডিম্ব ভক্ষণ করিলে কোনই বিপদ নাই, চাহিলে দিনে দুইটাও কুসুমসহ খাইতে পারিবেন’, অমনি সকালে বিকালে হাঁটার সাক্ষীদের রাঙ্গা বদন দেখি। সকলেই দিনে কমপক্ষে একটি ডিম কুসুমসহ নিয়মিত ভক্ষণ করছেন ফেসবুকের আহা বেশ বেশ উপদেশ মেনে। এসব গবেষণার পেছনে বিশ্ব পোল্ট্রি সমিতিরা কাজ করছেন কিনা জানিনা। তবে নিমেষে এদেশে ডিম্বভীতি ফসফরাসের মতো উবে গিয়েছে।
বাংলাদেশের ডিম্ব ব্যাপারিরা বোধ করি আইডিয়ার নতুনত্বের বিশ্ব রেকর্ড টুকরো টুকরো করে ফেলেছে। বিশ্ব ডিম্ব দিবসে জনগণকে তারা এক হালি ডিম তিনটাকায় বিক্রি করবে বলে এক বিস্ময়কর ঘোষণা দিল। সব ঘোষণা মানুষ খেয়াল করেনা। কিন্তু এই ঘোষণাটি নানাভাবে নানারূপে ঘরে ঘরে চাউড় হয়ে গেলো। ফার্মগেটের খামারবাড়ির পাশে যেখান থেকে অতি সস্তায় ডিম সরবরাহ করার স্থানটি ঠিক করা হয়েছিল, নির্দিষ্ট সময়ের আগেই হাজার হাজার বীর বাঙালি সেখানে ভিড় জমালো। বিশ্ব ডিম্ব দিবসের সর্বোচ্চ জমায়েতের জন্য এরই মাঝে নরওয়ের নোবেল কমিটি খবর পেয়ে গেলো। সংশ্লিষ্ট নোবেল কমিটির মাথায় হাত। জনগণকে প্রোটিন সরবরাহ করে গণস্বাস্থ্য তাগড়া করে দেহ মনে শান্তি আনার জন্যতো বাংলাদেশ ডিম্ব সমিতিকেই এবার নোবেল পুরস্কারটি দিতে হয়। ওদিকে যে উত্তর কোরিয়াকে দাবিয়ে রাখার জন্য পরমাণু অস্ত্র বিরোধী একটি গোষ্ঠীকে এবার শান্তি নোবেল দেবার সিদ্ধান্ত হয়ে গেছে ট্রাম্প হস্তীর থাবায়। তাহলে কী উপায়?
এহেন সংকটে উদ্ধার করার জন্য বাংলাদেশের অপরাজেয় ডিম্বপন্থী জনতাই যথেষ্ট। লাখ লাখ লোকের জন্য ডিম্ব ব্যাপারীরা মাত্র পঁচাত্তর হাজার ডিম্ব বিক্রয় পরিকল্পনা করেছিলো। সস্তায় ডিম নেবার জন্য মানুষরা বস্তা আর বস্তা প্রস্তুত করে এনেছিলো। তারা যখন দেখল জিহ্বা পিছু একটি ডিম্বও পাওয়ার সম্ভাবনা নেই অমনি শুরু হলো মানবেতিহাসের প্রথম ডিম্ব বিদ্রোহ। অসীম বীরত্বের স্বাক্ষর রেখে মানুষ বিক্রয়যোগ্য সকল ডিম্ব একযোগে রাস্তায় নিয়ে এলো, সকল ডিম্ব ফাটিয়ে দিয়ে রাজপথের ‘গায়ে হলুদ’ ঘটিয়ে দিল। চ্যানেল এবং পত্রিকার প্রথম পাতা হলুদে হলুদময় হয়ে গেলো। সকল ডিম্ব ফাটিয়া গেল, এইভাবে নোবেল পাইবার বিন্দুমাত্র সম্ভাবনা একযোগে ফটফট ফাটিয়া গেলো। ৭ নভেম্বর ১৯৭৫ সনে জাসদের বিপ্লব বিজয় সম্ভাবনা বুঝি এমন ডিম্বের মতো করেই ফেটে গিয়েছিল তিন চার দিনেই।
ডিম্বকুবেররা প্রায় বিনামূল্যে রিলিফ বিতরণের অভিজ্ঞতাবিহীন বলে জনশক্তি কাকে বলে জানেননা। পঁচাত্তর হাজার নয়, পঁচাত্তর লক্ষ ডিম্ব নিয়ে এসেও এই রিলিফ বিতরণের হ্যাপা কী হতে পারে তা তারা বোঝেননি। এখন যখন তখন যাকে তাকে নোবেল পুরস্কার দেবার কমিটির ঘোর ভাবনায় পড়ে যাবার কথা। ডিম্ব কমিটিকে এরকম উদ্ভাবনী ধারণার জন্য নাকি জনশক্তিকে ডিম্ব ফাটিয়ে দেবার জন্য কাকে তারা দেবেন নোবেল পুরস্কার? মাঝখানে মুফতে তা পেয়ে গেল উত্তর কোরিয়ার একজন উন্। কেউ কেউ ওই নামের পাশে ‘মাদ’ যোগ করতেও আনন্দ পায় বটে। উন আসলে পেয়েছে পরোক্ষে। তার পারমাণবিক উন্মাদনার জন্যইতো এ পরমাণু অস্ত্রবিরোধী নিষ্ক্রিয় ধরণের সংগঠনটিকে এবার হাই+লাইটে নিয়ে এলো নোবেল মহাজনবৃন্দ।
সর্বশেষে আপনাদের নিয়ে যাই একসময় পূর্ব বাংলার নাভীকেন্দ্র হিসাবে চিহ্নিত অক্ষমের জন্মপ্রান্তর চাঁদপুর শহরে। বর্তমানে যা কলেজ মাঠ তখন তা ছিল মহকুমা হাকিম ‘এস্ডু’ সাবের নামে ‘আজিজ আহমেদ ময়দান’। ১৯৫৪ সনের যুক্তফ্রন্ট নির্বাচনের আগে প্রচার সভা। সেই সভায় পশ্চিম পাকিস্তানের সে সময়কার জাঁদরেল মুসলিম লীগ নেতা আবদুর রব নিশতার বড় বক্তা। হঠাৎ তার মুখে ক্ষুব্ধ জনতার নিক্ষিপ্ত ডিম্ব এসে হলুদকুসুম বিম্ব ছড়ালো। নিশতার সাহেব নিস্তার পেলেননা গণপ্রতিক্রিয়া থেকে। তিনি পাশে বসা বাংলাভাষী মুসলিম লীগের কাউকে জিজ্ঞাসা করলেন, ইয়ে ক্যায়া হায়! উত্তরে ওই পুঁচকে নেতা বললেন, স্যার ইয়ে পচে আন্ডা হায়। তা বিশ্ব ডিম্ব দিবসের পঁচাত্তর হাজার ডিম্ব ‘পচে’ নাকি ‘টাটকা’ ছিল সেটা অদ্যাবধি জানা যায়নি।
এবার ফিরে আসি শুরুর কথায়। মুরগী আগে না ডিম্ব আগে। এই প্রশ্নের ফয়সালা হয়ে গেলেও আমরা অনেকেই তা জানিনা। দুনিয়ার মহাজ্ঞানী গবেষকদের প্রধান দুর্গ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। সেই পরাশক্তির দেশে একজন প্রেসিডেন্ট রিগান মানবসভ্যতার মহাবিজ্ঞানী ডারউইন সাহেবের বিবর্তনতত্ত্ব পড়ানো নিষিদ্ধ করে দিয়েছিলেন। ওই ডারউইন সাহেবের ওই বিবর্তনতত্ত্ব মুরগী এবং ডিম্বের মাঝে নিয়ে আসুন। তাহলেই পেয়ে যাবেন মুরগী আগে না ডিম্ব আগে। বিবর্তনের ধারা অনুযায়ী আগে মুরগীই এসেছিল, পরে মুরগীর ডিম্ব। এখন মুরগী আর ডিম্বের মধ্যে বাছাই করলে কে পাবে নোবেল পুরস্কারটি? তাহলে স্বয়ং আলফ্রেড নোবেল নাকি তার নামে পুরস্কার, কোনটিকে আমরা অগ্রগণ্য মনে করবো। এ প্রশ্নের উত্তর বাংলাদেশ ডিম্ব সমিতির কাছে রাখাটা কি ঠিক হবে? তবে যিনি প্রথম পঁচাত্তর হাজার ডিম্ব বিতরণের প্রস্তাব রেখেছিলেন, আলফ্রেড নোবেল বেঁচে থাকলে হয়ত নিজ হাতে একটি ডিম্ব ভেজে তাঁকে খাওয়াতেন। কি বলেন সুপ্রিয় পাঠকবৃন্দ! তা সেই ডিম্বটি কিসের হতে পারে? বোধকরি ওটি আলফ্রেডের দেশ সুইডেনের কোনো শ্বেত অশ্বের ডিম্বই হলেও হতে পারে।
(এ বিভাগে প্রকাশিত মতামত লেখকের নিজস্ব। চ্যানেল আই অনলাইন এবং চ্যানেল আই-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে প্রকাশিত মতামত সামঞ্জস্যপূর্ণ নাও হতে পারে)