বিশ্ব ইজতেমা উপলক্ষে ইতোমধ্যে দেশ-বিদেশের মুসল্লিরা রাজধানীতে এসেছেন, এখনও আসছেন। ধর্মপ্রচার আর ধর্মীয় রীতিনীতি চর্চার লক্ষ্যে ইতোমধ্যে কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে গেছে টঙ্গীর তুরাগ তীর।
প্রতিবছর বিশ্ব ইজতেমা উপলক্ষে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হলেও এবার বাড়তি নিরাপত্তা গ্রহণের কথা জানিয়েছেন র্যাবের মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদ।
তিনি বলেছেন: আমাদের এবার যে পরিমাণ লোক থাকবে ইউনিফর্মে তার চেয়ে বেশি লোক থাকবে সাদা পোশাকে। আকাশে র্যাবের হেলিকপ্টারের সঙ্গে ড্রোন দিয়েও নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করা হবে। একইসঙ্গে বিশ্ব ইজতেমায় কোনো ধরনের গুজবে কান না দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
এই বাড়তি নিরাপত্তা এবং গুজবে কান না দেওয়ার পরামর্শের কারণ হচ্ছে তাবলীগ জামায়াতের দুই পক্ষের মধ্যকার অনাকাঙ্খিত বিরোধ। এই বিরোধ এতটাই প্রবল হয়েছে যে, এ কারণে একাধিক প্রাণ ঝরেছে। সর্বশেষ গত ডিসেম্বরের ১ তারিখে তাবলীগ জামায়াতের দুই পক্ষের সংঘর্ষে ২ জন নিহত এবং শতাধিক আহত হয়েছেন। এ কারণে নিরাপত্তার স্বার্থে জানুয়ারিতে ইজতেমা অনুষ্ঠিত হয়নি।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সহ সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোর উদ্যোগে তাবলীগ জামায়াতের মধ্যকার এ দ্বন্দ্বের অবসান হয়েছে। এখন ঐক্যবদ্ধভাবে বিশ্ব ইজতেমার ১ম পর্ব ১৫ ফেব্রুয়ারি থেকে ১৬ ফেব্রুয়ারি এবং ২য় পর্ব আগামী ১৭ ফেব্রুয়ারি থেকে ১৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এজন্য আমরা সরকারকে সাধুবাদ জানাই।
এটা স্বীকার করতে হবে যে, সারা পৃথিবীতেই তাবলীগ জামায়াতের মধ্যে এখন দ্বিমত রয়েছে। তার প্রভাব বাংলাদেশেও পড়েছে। তবুও কেউ যাতে কোনো ধরনের গুজব ছড়িয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে হওয়া এই ইজতেমার সুষ্ঠু পরিবেশ নষ্ট করতে না পারে সেই ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। এক্ষেত্রে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে যেমন দায়িত্বশীল হতে হবে, ঠিক তেমনই তাবলীগ জামায়াতের সকল অনুসারীকে এ বিষয়ে সজাগ থাকতে হবে। কারণ, ধর্মের নামে কোনো ধরণের উগ্রবাদ সমর্থন করে না ইসলাম ধর্মসহ কোনো ধর্ম।
তাবলীগ জামায়াতের যেসব অনুসারী দেশ-বিদেশ থেকে ইজতেমায় অংশগ্রহণ করছেন, তাদের সবারই একমাত্র উদ্দেশ্য মহান স্রষ্টার সন্তুষ্টি অর্জন। কিন্তু ইজতেমায় এসে সহিংসতায় জড়ালে পূণ্যের বদলে পাপের ভাগিদার হতে হবে, যা কখনোই কাম্য নয়। তাই সকলকে সহিংসতা ও জনদুর্ভোগ এড়িয়ে নিজেদের মহৎ উদ্দেশ্য সাধনে মনোযোগী হতে আমরা আহ্বান জানাচ্ছি।