বিপিএলে সবচেয়ে শক্তিশালী দল কোনটি? কেউ বলবেন, সাকিবের ঢাকা ডায়নামাইটস। কেউ হয়ত বলবেন, মাশরাফীর রংপুর রাইডার্স। কেউ কেউ তামিমের কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানসের খেলোয়াড়দের দেখে সেদিকে চোখ রেখেও মাথা দোলাবেন। বিদেশি তারকার সম্ভারে কাগজে-কলমে শক্তিশালী তিনটি দলই। কিন্তু মাঠের খেলায়? মুশফিকের চিটাগং ভাইকিংস। অবাক হওয়ার কিছুই নেই, সোমবার মিরপুরে ঢাকাকে ৩ উইকেটে হারিয়ে যৌথভাবে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে উঠে এসেছে তারা।
সংক্ষিপ্ত স্কোর: ঢাকা ডায়নামাইটস-১৩৯/৯, চিটাগং ভাইকিংস-১৪৫/৭
কাগজে-কলমে খুব বড় শক্তির দল নয় চিটাগং; তবে মাঠের পারফরম্যান্সে এগিয়ে তারাই। এখনো পর্যন্ত এক ম্যাচ কম খেলেও ঢাকার সমান পয়েন্ট (১০) ভাইকিংসের। আট ম্যাচে সাকিবদের জয় পাঁচটিতে। মুশফিকদের সাত ম্যাচে পাঁচ জয়।
স্থানীয় ও বিদেশি ক্রিকেটারদের পারফরম্যান্সের ভারসাম্য তাদের নিয়ে এসেছে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষস্থানে। মাশরাফীদের হারিয়ে শুরু করা দলটি হার দেখেছে কেবল নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে, ডেভিড ওয়ার্নারের সিলেট সিক্সার্সের বিপক্ষে। পরে টানা হারায় মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের খুলনা টাইটানসকে (২ বার), কুমিল্লা ও ঢাকাকে।
সোমবার রাতের ম্যাচে ঢাকার দেয়া ১৪০ রানের লক্ষ্য এক বল ও ৩ উইকেট হাতে রেখে টপকে যায় চিটাগং। রবি ফ্রেইলিঙ্কের ১০ বলে ২৫ রানের ঝোড়ো ইনিংসে জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে তারা। মোহর শেখের শেষ ওভারে দরকার ছিল ১৬ রান। ৪ বলের ব্যবধানে ফ্রেইলিঙ্কের ব্যাটে আসা তিন ছক্কায় জয়ে নোঙর করে মুশফিকের দল।
শেষ ৬ ওভারে দরকার ছিল ৩৫ রান। হাতে ৫ উইকেট। নাঈম হাসান সাজঘরে ফিরলে ডট বলের মহড়ায় কঠিন হতে থাকে জয়ের পথ। শেষ দুই ওভারে দরকার পড়ে ২১ রান। হাতে ৪ উইকেট। ইনিংসের সর্বোচ্চ ৩৩ রান করা মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত ১৯তম ওভারের দ্বিতীয় বলে রান আউট হয়ে সাজঘরে ফিরলে জয়ের আশা কমে আসে দলটির। রুবেল হোসেন ওই ওভারে দেন মাত্র ৫ রান।
শেষ ওভারে ১৬ রানের কঠিন সমীকরণ মেলান ফ্রেইলিঙ্ক। প্রথম বলে ১ রান নিয়ে ফ্রেইলিঙ্ককে স্ট্রাইক দেন সানজামুল ইসলাম। পরের বলে মিড উইকেট দিয়ে বিশাল এক ছক্কা মারেন এ সাউথ আফ্রিকান। তার পরের বলে নেন ডাবলস। দানবীয় ভূমিকায় অবতীর্ণ হওয়া এ ডানহাতি সেটির পরের বলেও মারেন ছক্কা। তাতে ম্যাচ হয়ে যায় টাই। ২ বলে যখন ১ রান দরকার, তখন ফ্লাডলাইটের আলো কমে আসে যান্ত্রিক জটিলতায়। তবে ফ্রেইলিঙ্কের সামনে আলোকস্বল্পতাও বাধা হতে পারেনি। পরের বলে ছক্কা হাঁকিয়ে বীরদর্পে বেরিয়ে যান মাঠ থেকে।
বিফলে যায় সাকিবের দুর্দান্ত বোলিং। এ বাঁহাতি স্পিনার ৪ ওভারে মাত্র ১৬ রান দিয়ে নেন চার উইকেট। বিপিএলে প্রথম বোলার হিসেবে একশ উইকেট শিকারের খুব কাছে (৯৭) চলে এসেছেন সাকিব।
সন্ধ্যায় টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে সাকিবের (৩৪) দায়িত্বশীল ব্যাটিং আর নুরুল হাসান সোহান (২৭) ও শুভাগত হোমের (২৮) দুটি আক্রমণাত্মক ইনিংসে ৯ উইকেট হারিয়ে ১৩৯ রানের পুঁজি পায় ঢাকা।
মিডিয়াম পেসে ২৫ রানে ৩ উইকেট নেন ক্যামেরুন ডেলপোর্ট। দুটি করে উইকেট নেন ফ্রেইলিঙ্ক ও আবু জায়েদ।