সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকের প্রতিষ্ঠাতা ও সিইও মার্ক জুকারবার্গ তার ‘জিরো রেটিং’ ভিত্তিক ইন্টারনেট সেবা পৌঁছে দেবার পদক্ষেপ ‘ইন্টারনেট ডট অর্গ’ অবশ্যই ‘নেট নিউট্রাল’ বলে যুক্তি দেখিয়েছেন। ভারতের কিছু ইন্টারনেট ভিত্তিক প্রতিষ্ঠান তার এই কর্মসূচিকে ‘নেট নিউট্রাল’ নয় আখ্যা দিয়ে সেখান থেকে নিজেদের প্রত্যাহার করে নিলে জুকারবার্গ তার এই যুক্তি তুলে ধরেন।উল্লেখ্য ‘ইন্টারনেট ডট অর্গ’ প্রজেক্ট হচ্ছে ফেইসবুকের একটি নতুন অ্যাপ্লিকেশন। এর মাধ্যমে বিনামূল্যে মৌলিক কিছু সুবিধা যেমন চাকুরি খোঁজা, স্বাস্থ্য, শিক্ষা এবং বার্তা আদান প্রদান সেবা জনগনের দ্বার প্রান্তে পৌছে দেয়া যায়।
২০১৩ সালের আগস্টের ২০ তারিখে এটি যাত্রা শুরু করে। জাম্বিয়া, তানজানিয়া, কেনিয়া, কলম্বিয়া, ঘানা, ভারতসহ বেশ কয়েকটি দেশে এই সেবাটি কার্যকর আছে। স্যামসাং, মিডিয়াটেক, এরিকসন, মাইক্রোসফট, ওপেরা, রিলায়ান্স এবং কোয়ালকম নামক মোবাইল ফোন অপরেটর কোম্পানিগুলোর সহযোগে ফেইসবুক এই প্রজেক্টটি পরিচালনা করছে।
ফেইসবুকের এই প্রজেক্টের সমালোচনাকারীদের বক্তব্য হচ্ছে ফেইসবুকে এটি ইন্টারনেট সেবা প্রদানের ক্ষেত্রে নিরপেক্ষ নয়। নিরপেক্ষ এই অর্থে যে বিশ্বের সকল মানুষ একই দামে ইন্টারনেট সেবা পাবে। অর্থাৎ ফেইসবুক ছাড়া অন্য যে সামাজিক মাধ্যমগুলো আছে তারা ইন্টারনেট ব্যবহার করবে খরচ দিয়ে অথচ এই অ্যাপটিতে বিনামূল্যে ইন্টারনেট সুবিধা রাখা হয়েছে। এজন্য তা ‘নেট নিউট্রালিটি’র পরিপন্থি।
ভারতের কয়েকটি কোম্পানি এই প্রোজেক্ট থেকে নিজেদের সরিয়ে নেবার পর হিন্দুস্তান টাইমস এ বিষয়ে লেখে, জুকারবার্গ তার এই প্রোজেক্টের মাধ্যমে জনমনে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে। কারণ সবাই এখন ভাবছে ফেইসবুক আর ইন্টারনেট সেবা এক এবং একই।জুকারবার্গ তার ব্লগে এই সমালোচনাকারীদের জবাব দিয়েছেন। তিনি বলেন পৃথিবীর বিভিন্ন অংশে এখনও মানুষ ইন্টারনেট সেবা পাচ্ছেন না।
‘ইন্টারনেট ডট অর্গ’ খরচ কমিয়ে সবাইকে ইন্টারনেট সেবার আওতায় আনতে চাচ্ছে এবং এর মাধ্যমে সবাইকে সচেতন করতে চাইছে যে পৃথিবী এখন ইন্টারনেট ছাড়া অচল। তিনি বলেন, আমরা সবাই ‘নেট নিউট্রালিটি’ সমর্থন করি; সেই সাথে এও বিশ্বাস করি বৈশ্বিক সংযোগ এবং ‘নেট নিউট্রালিটি’র সহাবস্থান করা উচিত। কেননা ইন্টারনেট সংযোগ নেবার খরচ না থাকায় কেউ যদি নেটওয়ার্কের বাইরে থাকে তাহলে সে দায়বদ্ধতা আমাদের। ফলে নেটওয়ার্কের বাইরে না রেখে তাকে ইন্টারনেট সংযোগে নিয়ে আসাটাই কাম্য।