বাসভবনকে গাছপালা আর প্রাণীর অভায়াশ্রমে পরিণত করেছেন রাজশাহীর সাগরপাড়ার এক গৃহিনী। দোতলা বাসভবনের উঠোন থেকে ছাদ পর্যন্ত পূর্ণ করেছেন গাছপালা, পাখ-পাখালিতে। ছাদ কৃষিতেও দারুণ সাফল্য রয়েছে তার।
দোতলা ভবনের সদর দরজা খুললেই বাড়ির ভেতর মহল, একটি কক্ষ পেরোলেই উঠোন তারপরে সাজানো প্রকৃতি। অতি যত্নে আপন মনে বেড়ে উঠছে রাজ্যের গাছ পালা। উঠানে বনসাইয়ের সারি, দারুণ সুন্দর কবুতরের বেশ কয়েকটি ঘর, এক পাশে শান বাধানো পুকুর, ঘাটে নৌকো বাধা, সব মিলিয়ে এটি অন্য এক নিসর্গ।
প্রকৃতির এই রাজ্যে মায়ের ভূমিকায় রয়েছেন তনুশ্রী ভদ্র। তিনি বলেন, আমি আমার স্বামী ও আমার বড় ভাসুর এসব দেখাশুনা করি।
পাক পাখালি দেখাশুনা করেন এ বাসার আরেক সদস্য অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা সুশান্ত ভদ্র। তিনি বলেন, আমাদের এখানে হরেক রকমের কবুতর আছে, কোয়েল, লাভবার্ড, বাজিকর, মুনিয়া, ময়না আছে।
ছাদে চলছে সফল ছাদ কৃষি। এখানেও কয়েক’শ রকমের ফুল ফল সবজির সমারোহ। এ বাসার কেউই গাছ থেকে ছিঁড়ে ফল খান না কারণ গাছে ধরে থাকা ফলটিই তাদের কাছে সবচেয়ে উপভোগ্য।
তনুশ্রী ভদ্র বলেন, গাছে থাকলে ফল সুন্দর থাকবে, গাছের ফল গাছেই মানায়। আমি লেবু গাছের লেবুও ছিড়ব না, যদি লেবুর প্রয়োজন পড়ে তাহলে বাজার থেকে কিনে নিব।
তনুশ্রী স্বামী সুজিত কুমার ভদ্র বলছিলেন প্রাণীকূলের প্রতি প্রেম তাদের পারিবারিক ঐতিহ্য। তিনি বলেন, আমার বাবা মা ও সেই আমলে টিয়া পাখি পুষতো, দেশী কুকুর পুষতেন। আমি দীর্ঘদিন প্রায় বিশ বছর বিদেশে ছিলাম পরে দেশে এসে মনে হল এই জিনিসগুলো হলে ভালো হয়।
গাছ গাছালি ফুল ফল মিলিয়ে এক অদ্ভুত মায়ার জগত তৈরি হয়েছে এই বাসাটিতে। কি উঠান, কি ছাদ সবখানে প্রকৃতির প্রাধান্য। কোনো প্রয়োজন কিংবা বাণিজ্যিক চিন্তা ভাবনা থেকে নয় শুধুই মাত্র প্রকৃতিকে ভালোলাগার চিন্তা থেকেই ফুল ফল আর পাক পাখালির এই সাজানো বাগান। তনুশ্রী ভদ্র এবং তার পরিবার নিজ থেকেই উপলব্ধি করেছেন যে প্রকৃতিকে ভালবাসার যে প্রশান্তি তা অন্য কোন কিছুতে নেই।