সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব গোলাম মুস্তাফার মৃত্যুবার্ষিকী আজ। ২০০৩ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি তিনি মারা যান। তিন শতাধিক চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন তিনি। পাশাপাশি আবৃত্তিকার হিসেবেও ছিলেন সমাদৃত। তার মেয়ে খ্যাতিমান অভিনেত্রী সুবর্ণা মুস্তাফা বাবার স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে বলেন, ‘ছোটবেলায় আমি খুব দুষ্টু ছিলাম। দুষ্টুমি করলে আম্মা আব্বার কাছে নালিশ দেওয়ার ভয় দেখাতেন। বাবার ফেরার সময় হলে আমি বাসার দরজার কাছে দাঁড়িয়ে থাকতাম। দৌড়ে বাবার কোলে উঠে আম্মা বলার আগেই বাবাকে আমার মতো করে বলে সব দিতাম। ফলে মা নালিশ দিলে সেটার গুরুত্ব কমে যেত। এভাবে কয়েকবার চালাকি করার পর বাবা ধরে ফেলেন। এরপর আমি দৌড়ে বাবার কোলে উঠে যখন বলতে যেতাম বাবা বলতেন, ‘তোমার সাথে এখন কোন কথা নয়। আগে তোমার আম্মার কাছে শুনব, তার পর তোমার থেকে শুনব। নিশ্চই কোন উল্টাপাল্টা করেছ।’
আজ সোমবার (২০ ফেব্রুয়ারি ) চ্যানেল আই ভবনে ‘ইউনিভার্সাল ফুড লিমিটেড তারকা কথন’ অনুষ্ঠানে বাবাকে নিয়ে স্মৃতিচারণ করেন অভিনেত্রী সুবর্ণা মুস্তাফা। বাবার সঙ্গে অভিনয় করা তার জন্য সৌভাগ্যের উল্লেখ করে বলেন, ‘আমরা একসঙ্গে নাটকে কাজ করেছি। শহিদুল আলম খোকনের পরিচালনায় ‘রাক্ষস’, ‘কমান্ডার’ ছবিতে অভিনয় করেছি। এই স্মৃতিগুলোই খুব মনে পড়ে।’
বাবার কাছ থেকে পাওয়া বড় শিক্ষার কথা বলতে গিয়ে সুবর্ণা মুস্তাফা বলেন, ‘বাবা শিখিয়েছেন আমার ভুল করার অধিকার আছে। এই শিক্ষাটা আমাকে সতেজ রাখে। এছাড়া তিনি শিখিয়েছেন, কোন অভিজ্ঞতা খারাপ না। সব অভিজ্ঞতা থেকেই শিক্ষনীয় কিছু না কিছু থাকে।’
পারিবারিক জীবনে কেমন ছিলেন গোলাম মুস্তাফা? সুবর্ণা মুস্তাফা বলেন, ‘মা অসুস্থ ছিলেন। শীত সহ্য করতে পারতেন না। তখন খুব গরম পড়ছে। আমি বাবাকে বললাম একটা এসি কিনতে। পাশের রুমে এসি থাকবে। আমাদের যখন গরম লাগবে সেই রুমে গিয়ে গা জুড়িয়ে আসব?’ বাবা বললেন, ‘এসির বাতাস খাওয়ার জন্য তোমার মাকে রেখে পাশের ঘরে যেতে বলছ?’
সুবর্ণা জানান, বাবার কাছ থেকে প্রতিনিয়ত জীবন আর দায়িত্ববোধ শিখেছেন। শিখেছেন মমত্ববোধ।