দীর্ঘ এক মাসের অধিক সময় ধরে বন্যার পানিতে ভাসছে টাঙ্গাইলের অধিকাংশ জনপদ। এর মধ্যে অমানবিক দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন যমুনার বুকে জেগে উঠা বিস্তৃত চরের লাখো মানুষ। স্মরণকালের দীর্ঘস্থায়ী বন্যায় বেশিরভাগ মানুষের দিন কাটছে অনাহারে অর্ধাহারে। সরকারের পর্যাপ্ত ত্রাণ সহায়তার কথা বলা হলেও অধিকাংশ বানভাসির অভিযোগ ত্রাণ না পাওয়ার।
টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরের দুর্গম চরাঞ্চল গাবাসার মেঘারপটল গ্রাম। যার কোথাও উঁচু স্থান নেই ঠাঁই নেয়ার। এ চিত্র কেবল এই গ্রামের নয়। এই ইউনয়নের ৪৭ টি গ্রামের প্রায় ৪০ হাজার মানুষই দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। তাদের একজন ৮০ বছরের বৃদ্ধ বাদশা। ছেলেরা পৃথক হয়ে যাওয়ায় এই বয়সেও ঘানি টানছেন সংসারের। বয়সের ভারে বৃদ্ধ হলেও পাননি কোন সরকারি ভাতা। ভয়াবহ বন্যাতেও কোন প্রকার সহায়তা না পাওয়ার ক্ষোভ তার।
তেমনি আরেকজন বিধবা জমিলা বেগম। ৩০ বছর আগে বিধবা হলেও তার কপালেও জোটেনি কোন সহায়তা। মেয়েদের সহায়তায় এতদিন চললেও করোনায় তাদের কর্ম চলে যায়, তার সঙ্গে বন্যা ঠেলে দিয়েছে জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে। তারও আকুতি ত্রাণ সহায়তা পেয়ে বেঁচে থাকার।
শুধুমাত্র গাবসারা ইউনিয়নের বাদশা বা জামিলার মতো ৪০ হাজার মানুষ নয়। জেলার পাঁচটি উপজেলার দুর্গম চরাঞ্চলের সবত্রই এখন বানভাসি মানুষের হাহাকার।
একেবারেই ত্রাণ না পাওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা বলছেন বানভাসি মানুষের তুলনায় সরকারি ত্রাণের পরিমাণ কম। তাই সরকারের পাশাপাশি সকলকে বানভাসি মানুষের পাশে দাঁড়ানোর আহবান তাদের।
গাবসারা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো: মনির হোসেন বলেন, সরকারের ত্রাণ সহায়তা চলমান রয়েছে। বানভাসি সকলকেই পর্যায়ক্রমে ত্রাণের আওয়াতায় আনা হচ্ছে। জেলার ১২টি উপজেলার ১১টি উপজেলার প্রায় ৭০০ গ্রামের সাড়ে ৬ লাখ মানুষ বন্যা কবলিত হয়ে পড়েছে। এর বিপরীতে ৯০০ মে.টন চাল, নগদ ১৩ লাখ টাকা ও ১০ হাজার শুকনা প্যাকেট বরাদ্দ করা হয়েছে যা দীর্ঘ মেয়াদী বন্যায় চাহিদার তুলনায় খুবই সামান্য বলে অভিমত বানভাসি মানুষের।