২০২০ সালটি হলিউডের জন্য কঠিনতম বছর ছিল। তবে আশার আলো দেখিয়েছে ২০২১। এবছর খুলেছে সিনেমা হলগুলো। মুক্তি পেয়েছে বড় বাজেটের বেশ কয়েকটি সিনেমা। তার মাঝে ভালো ব্যবসাও করেছে অনেকগুলো। এক নজরে জেনে নিন এবছরের সেরা দশ হলিউড ছবি সম্পর্কে:
ডিউন: বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনীভিত্তিক ছবি এটি। ফ্র্যাঙ্ক হার্বার্টের ১৯৬৫ সালের উপন্যাস ডিউন অবলম্বনে একই নামে বড়পর্দার জন্য সিনেমাটি নির্মাণ করেছেন অস্কার মনোনীত পরিচালক ডেনিস ভিলেনিউভে। সিনেমাটিতে অভিনয় করেছেন টিমোথি চালামেট, রেবেকা ফার্গুসন, অস্কার আইজ্যাক, জোশ ব্রোলিন, স্টেলান স্কার্সগার্ড, ডেভ বুটিস্টা, চ্যাং চেন, জেনডায়া, স্টিফেন ম্যাককিনলি হেন্ডারসন ও অস্কারজয়ী জ্যাভিয়ের বারডেমসহ আরও অনেকে। সায়েন্স ফিকশন এই ছবিতে দেখা যায়, একজন প্রতিভাধর যুবক তার পরিবার ও মানব সভ্যতার ভবিষ্যৎ নিরাপদ করতে মহাবিশ্বের সবচেয়ে বিপদজনক গ্রহে যান। সেখানে কেবল তারাই বেঁচে থাকেন, যারা নিজেদের ভয়কে জয় করতে পারে।
স্পেন্সার: প্রিন্স চার্লসের সঙ্গে প্রয়াত ডায়ানার বিয়ে বিচ্ছেদের ঘটনা তুলে ধরা হয়েছে ‘স্পেন্সার’-এ। সব মিলিয়ে তিন দিনের একটু বেশি সময়ের গল্প বলা হয়েছে। গল্পের শুরু হয়েছে ইংল্যান্ডের নরফোকে অবস্থিত সান্ড্রিংহামে হাউজ অব উইন্ডসরে। কাহিনীতে দেখা গেছে, স্বামীর সঙ্গে বনিবনা না হওয়ার বিষয়টি বড়দিনের ছুটিতে উপলব্ধি করেন ডায়ানা। ‘স্পেন্সার’-এ প্রিন্সেস ডায়ানা চরিত্রে অভিনয় করেছেন ‘টোয়াইলাইট’ তারকা ক্রিস্টেন স্টুয়ার্ট।
দ্য কার্ড কাউন্টার: উইলিয়াম টেল নামের এক ব্যক্তিকে ঘিরে ছবির কাহিনী যিনি একজন অবসরপ্রাপ্ত সামরিক অফিসার। অস্থির অতীত ভুলতে নিজেকে জুয়ার জগতে ডুবিয়ে রাখেন তিনি। পোকার টুর্নামেন্টে খেলতে দেশজুড়ে ভ্রমণ করেন। একসময় তার সাথে পরিচয় হয় কির্ক নামের এক যুবকের সঙ্গে। এক সামরিক কর্নেলের ওপর প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য সেই যুবক উইলিয়ামের কাছে সাহায্য চান।
ড্রাইভ মাই কার: বছরের সবচেয়ে আলোচিত ছবিগুলোর একটি। কান চলচ্চিত্র উৎসবের ৭৪তম আসরে সেরা চিত্রনাট্য বিভাগে পুরস্কার জিতে নিয়েছে জাপানের ‘ড্রাইভ মাই কার’। তিন ঘণ্টার এই ছবি দেখার সময় এক মুহুর্তের জন্যও পর্দা থেকে চোখ সরাতে পারবেন না দর্শকরা। হারুকি মুরাকামির ছোটগল্প অবলম্বনে তৈরি হয়েছে ‘ড্রাইভ মাই কার’। এর গল্প মঞ্চ অভিনেতা ও নির্দেশক ইউসুকে কাফুকুকে ঘিরে। স্ত্রীর মৃত্যুর দুই বছর পর একটি নাট্যোৎসবে নির্দেশনা দেওয়ার প্রস্তাব পান তিনি। হিরোশিমায় যেতে স্বল্পভাষী মিসাকিকে গাড়ির ড্রাইভারের দায়িত্ব দেয় কাফুকু। তারা পথ চলতে চলতে সময় কাটাতে থাকে। ধীরে ধীরে স্ত্রীর রেখে যাওয়া রহস্যের মুখোমুখি হয় কাফুকু।
পাসিং: রেবেকা হল পরিচালিত প্রথম ছবি এটি। নেলা লারসেনের ১৯২৯ সালের একই নামের উপন্যাস অবলম্বনে ছবিটি তৈরি করা হয়েছে। দুই কৃষ্ণাঙ্গ বান্ধবী রিনি ও ক্যারেকে ঘিরে ছবির গল্প। ছোটবেলার পরে তাদের বহু বছর যোগাযোগ ছিল না। অনেক বছর পর যখন দেখা হয় তখন ক্ল্যারেকে দেখে চমকে যায় রিনি। ক্ল্যারের গায়ের রঙ বদলে গেছে, কৃষ্ণাঙ্গ পরিচয় লুকিয়ে বিয়ে হয়েছে বর্ণবাদী ব্যবসায়ীর সঙ্গে।
দ্য গ্রিন নাইট: ডেভিড লাওরি পরিচালিত ‘দ্য গ্রিন নাইট’ মধ্যযুগের উপকথার উপর নির্মিত মুভি। দর্শককে বুঁদ করে রাখার জন্য যা যা করা দরকার, তার সব কিছুই আছে ছবিতে। লাওরির শৈল্পিক চিন্তা, আর দেব প্যাটেলের অনবদ্য অভিনয় দর্শকদের গল্পের ভেতরে নিয়ে যায়। প্যাটেলকে দেখে গেছে স্যার গাউইন চরিত্রে। নির্ভীক যোদ্ধা হিসেবে পরিচয় পেতে গ্রিন নাইটের মুখোমুখি হতে যায় সে। এজন্য নিজের জীবন ঝুঁকিতে ফেলতে দেখা যায় তাকে।
দ্য লস্ট ডটার: ম্যাগি গাইলেনহাল পরিচালিত দ্য লস্ট ডটার ছবির মূল চরিত্রে অভিনয় করেছেন অলিভিয়া কোলম্যান। এলেনা ফেরান্টের একই নামের উপন্যাস অবলম্বনে তৈরি হয়েছে এই ছবি। সাহিত্যের অধ্যাপক লেডার গ্রীসে ছুটি কাটাতে এসে পরিচয় হয় নিনার সঙ্গে। নিনা একজন কমবয়সী মা, অভিভাবকত্ব তার কাছে মাঝে মাঝে খুব চাপের মনে হয়। নিজের অতীত সম্পর্কে খুব বেশি কিছু না জানালেও লেডা জানান, তিনি নিনার অবস্থা বুঝতে পারছেন। ছবির গল্প দর্শকের মাথায় খুব সহজেই প্রবেশ করে এবং দর্শককে ছবিতেই ডুবিয়ে রাখে।
লিকোরাইস পিজা: রোমান্টিক ঘরানার এই ছবি দুই বন্ধুকে ঘিরে। অ্যালানা কেন এবং ক্যারি ভ্যালেন্টাইন বড় হয়। তাদের বন্ধুত্ব প্রেমে রূপ নেয়।
দ্য পাওয়ার অব দ্য ডগ: ডার্ক ওয়েস্টার্ন ঘরানার ছবি ‘দ্য পাওয়ার অব দ্য ডগ’। নিউজিল্যান্ডের প্রখ্যাত পরিচালক জেন ক্যাম্পিয়ন ছবিটি নির্মাণ করেছেন এক যুগ বিরতির পর। থমাস স্যাভেজের ১৯৬৭ সালের একই নামের উপন্যাস অবলম্বনে তৈরি হয়েছে এই ছবি। ফিল নামের এক ব্যক্তি তার আশেপাশের সবার মনে নানা ভয় ঢুকায়। তার ভাই জর্জ নতুন বিয়ে করে স্ত্রী ও ছেলেকে বাড়িতে নিয়ে এলে, ফিল তাদেরকে নানাভাবে কষ্ট দেয়। পরে তার মনে ভালোবাসা জন্মায় তাদের জন্য।