যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংবাদমাধ্যম টাইম বর্ষসেরা ব্যক্তিত্ব ঘোষণা ছাড়াও প্রতি বছরই বিভিন্ন ধরণের ‘সেরা দশ’ তালিকা প্রকাশ করে। এর ধারাবাহিকতায় এবার তারা প্রকাশ করেছে ২০১৫ সালের সেরা দশ স্মার্টফোন অ্যাপের তালিকা।
চলুন দেখে নেয়া যাক টাইমের চোখে সেরা দশটি অ্যাপ কোনগুলো।
১০. ওয়ানশট (OneShot)
কখনো কখনো কোনো লেখার একটি বিশেষ অংশ অন্যদের দেখানোর জন্য আমরা সামাজিক মাধ্যমে শেয়ার করি। কিন্তু ওই বিশেষ অংশটিকে আলাদাভাবে তুলে ধরাটা বেশ কঠিন হয়ে পড়ে। আপনার এই কাজটিই করে দেবে ওয়ানশট নামের অ্যাপটি। অ্যাপটি ব্যবহার করে অংশটির একটা স্ক্রিনশট তুলুন। ওয়ানশট নিজ থেকেই স্ক্রিনশটের একটি লিংক তৈরি করে আপনার কমেন্টসহ শেয়ার করার ব্যবস্থা করে দেবে।
৯. লাইফলাইন (Lifeline)
মোবাইল গেম সম্পর্কে আপনার ধারণাই পাল্টে দেবে লাইফলাইন নামের গেমটি। অতীতের লেখানির্ভর অ্যাডভেঞ্চার জাতীয় কম্পিউটার গেমের স্বাদ পাবেন এই গেমে; কিন্তু তা হবে আধুনিকতার সসে ডোবানো।
গেমটিতে ভিনগ্রহে হারিয়ে যাওয়া এক নভোচারী আপনার সঙ্গে যোগাযোগ করবে। আপনার কাজ হলো বিভিন্ন কাজের সিদ্ধান্ত জানিয়ে তাকে বিপদ থেকে বাঁচিয়ে নিরাপদ গন্তব্যে পৌঁছে দেয়া। আপনার একটি ভুল সিদ্ধান্ত নভোচারীর মৃত্যুর কারণ হতে পারে। ৯৯ সেন্ট মূল্যে এই অ্যাপটি অ্যাপল ওয়াচেও কাজ করে।
৮. পজ (Pause)
বসের ই-মেইল, কাজের সময় বাসা থেকে আসা ফোনের পর ফোন– স্মার্টফোনের কারণে এভাবে বেশিরভাগ সময়ই আমরা ক্লান্ত ও বিরক্ত হয়ে পড়ি। এবার এসব বিশৃঙ্খলা থেকে একটু বিরাম নিন পজ অ্যাপটির মাধ্যমে একাগ্রতার চর্চা করতে করতে হালকা পাতলা ধ্যানচর্চাও করা হয়ে যাবে আপনার। মনটা কিছুক্ষণের জন্য হলেও প্রশান্ত হয়ে উঠবে।
৭. মাইক্রোসফট ট্রান্সলেটর (Microsoft Translator)
অনুবাদ করার টুলগুলো দিন দিন উন্নত থেকে আরো উন্নত হচ্ছে। তাদের অনুবাদ হচ্ছে আরো নিখুঁত। আগের ভুলগুলো সংশোধন করে উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করে প্রযুক্তি কোম্পানিগুলো বাজারে আনছে নতুন নতুন অনুবাদকারী অ্যাপ। তারই ধারাবাহিকতায় মাইক্রোসফট আনলো মাইক্রোসফট ট্রান্সলেটর। এখন পর্যন্ত প্রকাশিত অনুবাদকারী অ্যাপগুলোর মধ্যে এটিই সেরা, বিশেষ করে যারা দেশ-বিদেশে ভ্রমণ করেন তাদের জন্য।
৬. ফটোশপ ফিক্স (Photoshop Fix)
ফটো এডিটিং সফটওয়্যারগুলোর মধ্যে বিখ্যাত একটি নাম অ্যাডোবি ফটোশপ। সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম এডিটিংয়ের জন্য পেশাদার ফটো এডিটরদের কাছে জনপ্রিয় এটি। কিন্তু এখন শুধু কম্পিউটারেই নয়, আপনার মুঠোফোনেও পেতে পারেন ফটোশপের অসাধারণ ক্ষমতার কিছু অংশ। ফটোশপ ফিক্স অ্যাপটি নিয়ে এসেছে অ্যাডোবি ফটোশপের বাছাই করা সেরা কিছু ফিচার, যেগুলো ব্যবহার করে শেয়ার করার আগে আপনার ছবিগুলো রিটাচ করে নিতে পারবেন।
৫. ক্লিন (Cleen)
আমাদের অনেকের জন্যই স্মার্টফোন আমাদের পয়েন্ট-অ্যান্ড-শ্যুট ডিজিটাল ক্যামেরার জায়গা দখল করে নিয়েছে। আর এ কারণেই অপ্রয়োজনীয় হাজারো ছবি তুলে জমা করে রেখে আমরা আমাদের ফোনের মূল্যবান মেমোরি ভরিয়ে রাখি। তাই অপ্রয়োজনীয় ছবিগুলো দ্রুত এবং ঝামেলামুক্তভাবে সরিয়ে ফেলতে আছে ক্লিন। অ্যাপটির ‘সোয়াইপ-টু-ডিলিট’ ইন্টারফেসে ডিভাইসের সব ছবি গোছানো এবং অপ্রয়োজনীয় ছবি মুছে ফেলা খুবই সোজা।
৪. পেরিস্কোপ (Periscope)
টুইটার-মালিকানাধীন এই অ্যাপটি বাজারে একমাত্র লাইভ ভিডিও স্ট্রিমিং অ্যাপ না হলেও এটাই টানে সবচেয়ে বেশি। এর পেছনে হয়তো কারণ হলো পেরিস্কোপে ভিডিও স্ট্রিমিংয়ের সময় ভিডিও দেখতে থাকা দর্শকের তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া, তারা কী দেখতে চায়, সেটা সাথে সাথে জানা যায়।
৩. স্টারবাকস মোবাইল অর্ডারিং (Starbucks Mobile Ordering)
যুক্তরাষ্ট্রে স্টারবাকস কফিশপের প্রতি ৫ অর্ডারের একটি করা হয় প্রতিষ্ঠানটির সুবিন্যস্ত মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে। সম্প্রতি অ্যাপটিতে নতুন একটি আপডেট যোগ করা হয়, যার সাহায্যে গ্রাহক স্টারবাকসের কফিশপে পৌঁছানোর আগেই কফির অর্ডার দিয়ে রাখতে পারেন, আবার সঙ্গে দামটাও মিটিয়ে দিতে পারেন। ফলে তাদের আর লাইনে দাঁড়িয়ে পছন্দের গরম গরম কফির জন্য অপেক্ষা করতে হয় না।
২. স্ন্যাপচ্যাট (Snapchat)
২০১১ সাল থেকে চালু থাকলেও এ বছরই প্রথম জনপ্রিয়তা পায় স্ন্যাপচ্যাট। এই ফটো-ম্যাসেজিং অ্যাপটির সেরা ফিচার হলো ফটো-স্টোরি তৈরির সুযোগ, যার সাধ্যমে অনেকগুলো ছবি একসঙ্গে সাজিয়ে ছবি দিয়ে মনের মতো করে একটি বিশেষ দিন বা ঘটনার কাহিনী বর্ণনা করা যায়।
১. এইচবিও নাও (HBO Now)
জনপ্রিয় ইংরেজি মুভি চ্যানেল এইচবিও বাজারে এনেছে এর নিজস্ব ভিডিও স্ট্রিমিং অ্যাপ। স্যাটেলাইট সংযোগ না থাকলেও এই অ্যাপের মাধ্যমে প্রতি মাসে ১৪.৯৯ ডলার খরচ করে অসাধারণ সব ইংরেজি মুভির পাশাপাশি এইচবিও’র নিজস্ব চিত্রায়ণের অন্যান্য চলচ্চিত্র এবং অনুষ্ঠান উপভোগ করা সম্ভব। প্রথমে শুধু অ্যাপল এক্সক্লুসিভ অ্যাপ হিসেবে যাত্রা শুরু করলেও এখন অ্যান্ড্রয়েডেও চলছে এইচবিও নাও।