চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ

ফিফার ঘুষ-দুর্নীতি-অর্থ পাচারে ফুটবল দুনিয়ায় তোলপাড়

ফিফার ১৪ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ঘুষ-দুর্নীতি-অর্থ পাচারের অভিযোগ এবং সহ-সভাপতিসহ সাত কর্মকর্তার গ্রেফতারে ফুটবল দুনিয়া জুড়ে তোলপাড় শুরু হয়েছে। উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বিশ্বকাপসহ অন্য গুরুত্বপূর্ণ আসরের স্পন্সররাও।

ফিফার উপর আবারো এক হাত নিয়েছেন ফুটবল লিজেন্ড ম্যারাডোনা। তবে এফবিআই’র তদন্তে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ২০১৮ বিশ্বকাপের আয়োজক রাশিয়া। এরইমাঝে শুরু হয়েছে ফিফার ৬৫তম কংগ্রেস ও সভাপতি নির্বাচনের আনুষ্ঠানিকতা।

ফিফার সাত কর্মকর্তা গ্রেফতার হওয়ার পর নাটকীয় সব ঘটনায় উত্তাল ফুটবল দুনিয়া। গ্রেফতারদের অন্যতম ফিফার সাবেক সহ-সভাপতি জ্যাক ওয়ার্নার’কে পুলিশ গ্রেফতার করেনি, বরং তিনি নিজেই ত্রিনিদাদ এন্ড টোবাগো’র পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করেছেন বলে দাবি করেছে টিভি নেটওয়ার্ক সিসিএন টিভিসিক্স।

আত্মসমর্পণের আগে দেয়া সাক্ষাৎকারে ওয়ার্নার নিজেকে নির্দোষ এবং বিচলিত নন বলে জানিয়েছেন। অভিযোগ প্রসঙ্গে ওয়ার্নার বলেন, আমেরিকানদের এই অভিযোগে আমি মোটেও বিচলিত নই। কারণ তারা অভিযোগ করার আগে এ সম্পর্কে আমার কোন বক্তব্যের জন্য আসেনি। আমি আমরা আইনজীবির সাথে কথা বলেছি, যা বলার আদালতেই বলবো।

মুখ বাঁচাতে অভিযুক্ত ১৪ জনের ১১ জনকে সাময়িক বহিস্কার করেছে ফিফা। বহিস্কৃতদের মধ্যে আছেন বর্তমান ও সাবেক দুই সহ-সভাপতি জেফ্রি ওয়েব এবং জ্যাক  ওয়ার্নার।

ফিফার কেলেংকারি বিচলিত এবং আশংকিত করেছে কোকাকোলা সহ ফুটবলের শীর্ষ স্পন্সরদের। ন্যাক্কারজনক এই ঘটনা ফুটবলকে বিবর্ণ করছে বলে মন্তব্য করেছে কোকাকোলা।

বরাবর তথাকথিত প্রভাবশালীদের কঠোর সমালোচক ফুটবল ঈশ্বর দিয়েগো ম্যারাডোনা আবারো কঠোর সমালোচনায় বিদ্ধ করেছেন ফিফাকে।

ম্যারাডোনা ফিফার দূর্নীতি প্রসঙ্গে বলেন, আমি সব সময়ই বলে এসেছি ফিফা  ফুটবলের ভালো চায়না।তারা স্বচ্ছতায় বিশ্বাসী নয়। যারা অভিযুক্ত তাদের ফুটবলের প্রতি দরদ নেই। এই ঘটনার পরও নির্বাচনে জিততে চান ব্ল্যাটার। দেখা যাক পানি কতদূর গড়ায়।

তবে পাঁচবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট দিলমা রৌসেফ ফুটবলে দুর্নীতি নিয়ে তদন্ত চালানোর ব্যাপারে তার দেশের সীমাবদ্ধতার কথা জানিয়েছেন।

ব্রাজিলে প্রেসিডেন্ট দিলমা রৌসেফ ফুটবলের দূর্নীতি রোধে দেশের বর্তমান আইনকে দায়ী করে বলেন, আমাদের ফুটবলে অনিয়ম ও দুর্নীতি নিয়ে এরকম তদন্তের পথে বাধা ব্রাজিলের বিদ্যমান আইন। সে আইনে বেসরকারি খাতে এরকম তদন্ত করার অধিকার সরকারকে দেওয়া হয়নি। আমি জানিনা কোন আইনের ভিত্তিতে আমেরিকানরা ফিফার ব্যাপারে এমন তদন্ত করতে পেরেছে। তবে ফিফার এই কেলেংকারি ব্রাজিলের ফুটবলকে ক্ষতিগ্রস্থ করবে না।

মার্কিনীদের তদন্তকে তথাকথিত এবং আন্তর্জাতিক আইনের লংঘন বলে অভিযোগ করেছে ২০১৮’র আয়োজক ও যুক্তরাষ্ট্রের পুরনো প্রতিদ্বন্দ্বী রাশিয়া।

রাশিয়ার আইনসভার সদস্য ওলেগ পাখোলকভ যুক্তরাষ্ট্রের পদক্ষেপের নিন্দা করে বলেন, ফিফার মত এই বিশ্বনন্দিত প্রতিষ্ঠানের ব্যাপারে আমেরিকানদের এটা একটি হিংস্র আক্রমণ। তারা আন্তর্জাতিক আেইন ও রীতিনীতিকে বুঁড়ো আঙ্গুল দেখিয়েছে। আমরা জানি অনেকেই রাশিয়ার কাছ থেকে ২০১৮’র বিশ্বকাপ কেড়ে নিতে চায়।  

ফিফার কর্মকর্তাদের গ্রেফতারের ঘটনায় শুক্রবার অনুষ্ঠেয় ফিফা সভাপতি নির্বাচন স্থগিতের দাবি জানিয়েছে ইউরোপীয় ফুটবল ইউনিয়ন ইউয়েফা। দাবি মানা না হলে নির্বাচন বর্জনের হুমকিও দিয়েছে তারা।