তিন সিটির নির্বাচনে মূল প্রার্থীদের সবাই নির্বাচনী ব্যয়সীমা লঙ্ঘন করেছেন বলে দাবি করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। সংস্থাটির মতে, নির্বাচনে বিএনপির চ্যালেঞ্জ নেয়ার সাহসই ছিলো না।
সিটি নির্বাচন পরবর্তী টিআইবি’র গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, দলীয় সমর্থন পেতে চট্টগ্রামের মেয়র প্রার্থীরা ২০ লাখ থেকে ৭ কোটি টাকা লেনদেন করেছেন।
তবে টিআইবি প্রতিবেদনে ঢাকায় এরকম মনোনয়ন বেচাকেনার কোনো অভিযোগ নেই।
ব্যয়সীমা লঙ্ঘনের দৌঁড়ে চট্টগ্রামের প্রার্থীদের মতে এগিয়ে ছিলেন ঢাকার মেয়রপ্রার্থীরাও। প্রার্থীদের আচরণবিধি, অনুমোদিত ব্যয়ের তিন গুণ বেশি ব্যয় এবং নির্বাচন কমিশন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ভূমিকার জন্য ২৮ এপ্রিলের নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ বলেছে টিআইবি।
টিআইবি’র ধানমণ্ডি কার্যালয়ে ‘ঢাকা উত্তর, ঢাকা দক্ষিণ ও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচন ২০১৫: প্রক্রিয়া পর্যবেক্ষণ’ শিরোনামে গবেষণা প্রতিবেদনে এসব তথ্য তুলে ধরা হয়।
২৮ এপ্রিল তিন সিটি নির্বাচনে প্রার্থীদের নির্বাচনী খরচ নিয়ে তিন সপ্তাহের মাথায় রিপোর্ট প্রকাশ করলো টিআইবি। সরকারি দল সমর্থিত প্রার্থীরা নির্বাচনী ব্যয়সীমা বেশি লঙ্ঘন করেছেন বলেও রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ঢাকা উত্তরের ব্যয়সীমা ছিল ৫০ লাখ টাকা। অথচ তিন মেয়র প্রার্থী ২০ লাখ থেকে প্রায় ৪ কোটি টাকা পর্যন্ত ব্যয় করেছেন। ঢাকা দক্ষিণে তিন মেয়র প্রার্থীর জন্য অনুমোদিত ব্যয়সীমা ছিল ৩০ লাখ টাকা। তারা ১ কোটি ৪৬ লাখ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ৩ কোটি ৫১ লাখ টাকা পর্যন্ত ব্যয় করেন। আর চট্টগ্রামের তিন মেয়রের জন্য ব্যয়সীমা ৩০ লাখ থাকলেও তারা ৬ কোটিরও বেশি টাকা খরচ করেছেন।
এ বিষয়ে টিআইবি’র নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, দলের বিশেষ ক্ষমতাবান ব্যক্তিদের অথবা দলের সমর্থন পাবার জন্য অর্থ ব্যয়ের সত্যতা পেয়েছে টিআইবি। তবে এর মধ্যে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি নির্বাচনে সমর্থন লাভের জন্য অর্থ লেনদেনের বিরাট ঘটনা না ঘটলেও চট্টগ্রামে লেনদেন হয়েছে ব্যাপকভাবে।
এ জন্য সিটি নির্বাচনকে ‘নির্বাচন’ বলে মানতে নারাজ তিনি।
নির্বাচনকে অরাজকতার হাত থেকে মুক্ত করতে আগামীতে ইভিএম (ইলেট্রনিক ভোটিং মেশিন) ছাড়া কোনো বিকল্প নেই বলেও জানান ইফতেখারুজ্জামান।
তিন সিটি করপোরেশনে নির্বাচনের চরিত্র দেখে টিআইবির ট্রাস্ট্রি ও সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার ডক্টর শামসুল হুদা বলেছেন, আগামীতে ইসিকে আরো মানসম্মতভাবে নির্বাচন করতে হবে।
প্রশাসনিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে নিরপেক্ষ না করলে দলীয় সরকারের অধীনে ২০১৯ সালের নির্বাচন অনুষ্ঠান সম্ভব হবে না বলে মনে করেন সাবেক সিইসি।