ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের প্রধান নির্বাহী (সিইও) রাহুল জোহরির বিরুদ্ধে ওঠা যৌন নির্যাতনের অভিযোগ খতিয়ে দেখতে তিন সদস্যের কমিটি গড়েছে কমিটি অব অ্যাডমিনিস্ট্রেটর্স (সিওএ)। কমিটি তৈরি করে দিয়েছেন চেয়ারম্যান বিনোদ রাই। কিন্তু কমিটিরই আরেক সদস্য ডায়না এডুলজি সরাসরি পদত্যাগ চেয়েছেন প্রধান নির্বাহীর।
হ্যাশট্যাগ মি টু আন্দোলন শুরু হওয়ার পরেই লেখিকা হরনিধ কৌর নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক এক নারীর অভিযোগ তার টুইটারে তুলে ধরেছিলেন। সেই নারী অভিযোগ করেছিলেন, নতুন চাকরি নিয়ে কথা বলার জন্য তাকে গুরগ্রামে নিজ বাড়িতে নিয়ে গিয়েছিলেন জোহরি। সেসময় বোর্ডের বর্তমান সিইও’র স্ত্রী বাড়িতে ছিলেন না। সেখানেই যৌন হেনস্থা করা হয় তাকে। তখন অবশ্য বিসিসিআইয়ের দায়িত্বে ছিলেন না জোহরি। ছিলেন একটি টিভি চ্যানেলে কর্মকর্তা।
সোশ্যাল মিডিয়ায় এই বিস্ফোরক অভিযোগের পরই তোলপাড় শুরু হয়ে যায়। সিওএ জোহরির কাছে ব্যাখ্যা চায়। জোহরি জবাব দেয়ার জন্য ১৪ দিন সময় চেয়েছিলেন। জানিয়েছিলেন, আইনজীবীদের সঙ্গে কথা বলতে চান। বৃহস্পতিবার বোর্ডের তরফে এক বিবৃতিতে জানানো হয়, ২০ অক্টোবর জবাব জমা দিয়েছেন জোহরি। যাবতীয় অভিযোগ অস্বীকার করেছেন তিনি।
জোহরি জবাব দেয়ার পরই ২০ ও ২২ অক্টোবর আলোচনায় বসেছিল সিওএ। সেই বৈঠকে এ বিষয়ে তদন্ত করার জন্য একটি নিরপেক্ষ কমিটি গড়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। সিওএ’র অন্যতম সদস্য ডায়না এডুলজি চেয়েছিলেন এ রকম একটি অভিযোগ ওঠার পরে বোর্ডের স্বার্থে জোহরির পদত্যাগ করা উচিত। কিন্তু সিওএ চেয়ারম্যানের মত, যেহেতু অভিযোগ এসেছে এক অজ্ঞাতপরিচয়ের কাছ থেকে, তাই আগে সব খতিয়ে দেখা উচিত। তাছাড়া যে সময়ে যৌন হেনস্থার কথা বলা হয়েছে, তা জোহরির বোর্ডের সিইও পদে যোগ দেয়ার অনেক আগের কথা।
জোহরিকে নিয়ে সিওএ চেয়ারম্যান বিনোদ রাই এবং ডায়না এডুলজির মধ্যে মতপার্থক্য তৈরি হয়েছে ভালোভাবেই। এডুলজি মনে করেন, জোহরিকে সরানোর যথেষ্ট কারণ রয়েছে। তিনি সিওএ চেয়ারম্যানকে জানিয়ে দেন সেটা।
জোহরির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে তাকে কাজ চালিয়ে যেতে দেয়া হলে এডুলজি অ্যামিকাস কিউরি গোপাল সুব্রহ্মণ্যমের সঙ্গে কথা বলবেন বলে জানান। এরপরই আইনজ্ঞদের পরামর্শ নিয়ে কমিটি গড়া হয়েছে। যে কমিটিতে আছেন এলাহাবাদ হাইকোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি রাকেশ শর্মা। তিনি কমিটির চেয়ারম্যান। এছাড়া কমিটির অন্য দুই সদস্য নিয়োগ করা হয়েছে দিল্লি মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন বরখা সিংহ ও প্রাক্তন সিবিআই পরিচালক পি সি শর্মাকে।
গত তিন বছর বোর্ডের সিইও পদে রয়েছেন জোহরি। তার বিরুদ্ধে আরও একটি অভিযোগ নিয়ে বোর্ডে চর্চা শুরু হয়েছিল। কিন্তু তা একেবারেই গুরুত্ব দেয়া হয়নি বলে অভিযোগ করেছিলেন বিহারের ক্রিকেট কর্তা আদিত্য বর্মা। তিনি দাবি করেন, বোর্ডের এক মহিলা কর্মীকেও যৌন হেনস্থা করেছিলেন জোহরি। যার ফলে ইস্তফা দিতে বাধ্য হন তখন।