মিয়ানমারে মুসলিম রোহিঙ্গাদের ওপর নির্যাতন নিয়ে বিভিন্ন দেশ ও সংস্থা কথা বললেও নির্যাতন বন্ধে এখন পর্যন্ত কেউ তাদের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে পারেনি। এমনকি দুই শক্তিশালী দেশ ভারত ও চীনের পক্ষ থেকেও তেমন কোন উদ্যোগ নেই। কিন্তু এক্ষেত্রে একমাত্র বাংলাদেশ ব্যতিক্রম। রোহিঙ্গাদের ওপর এই নির্যাতনকে গণহত্যা হিসেবে উল্লেখ করেছে বাংলাদেশ সরকার।
নির্যাতনের মুখে দেশ ছেড়ে আসা লাখ লাখ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়েছে বাংলাদেশ। রোহিঙ্গাদের নির্যাতন করায় সরাসরি মিয়ানমারের সমালোচনা করেছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এই বিষয়টি নিয়ে ফেসবুকে লিখেছেন লেখক, গবেষক ও কবি মোরশেদ শফিউল হাসান।
তিনি লিখেছেন: দুই বৃহৎ ও প্রবল প্রতিবেশীর বিপরীত অবস্থানের মুখেও বাংলাদেশ সরকার বলতে পেরেছে, মিয়ানমারে যা ঘটছে তা গণহত্যা। আর রোহিঙ্গাদের আশ্রয়দান ও তাদের প্রতি মানবিক কর্তব্য পালনে বাংলাদেশ পিছপা হবে না। এই সাহস ও দৃঢ়তা প্রদর্শনের জন্য বাংলাদেশ সরকার বিশেষ করে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জানাই। তিনি আবারও প্রমাণ করলেন যে তিনি মুজিব-কন্যা।
তিনি লিখেছেন, বিভিন্ন সময় অনেক ব্যাপারেই সরকারের নীতি বা ভূমিকার সমালোচনা করলেও, মনে করছি এই একটি ব্যাপারে আজ সমগ্র জাতির উচিত সরকারের পেছনে শক্তভাবে দাঁড়ানো। অন্যান্য দেশের দৃষ্টান্ত থেকে শিক্ষা নিয়ে জাতীয় দুর্যোগ মোকাবেলায় বা জাতীয় স্বার্থের প্রশ্নে দলমত নির্বিশেষে সবার ঐক্যবদ্ধ হওয়া। আর এ ব্যাপারে সরকারেরও করণীয় আছে। সাময়িক বা সঙ্কীর্ণ দলীয় রাজনৈতিক বিবেচনার ঊর্ধ্বে উঠে সমস্যা মোকাবেলায় জাতীয় ঐকমত্য প্রতিষ্ঠায় উদ্যোগী হতে হবে তাদের।
তিনি আরও লিখেছেন, কোনো সরকারের পক্ষেই একক প্রচেষ্টায় আজ আমরা যে মহাবিপদ বা দুর্যোগের সম্মুখীন তা মোকাবেলা করা সম্ভব নয়। এ ব্যাপারে ১৯৭১ সালের ভারত কিংবা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধকালীন মিত্রশক্তির অন্তর্ভুক্ত দেশগুলোর দৃষ্টান্ত থেকে শিক্ষা নিতে পারি আমরা। রোহিঙ্গা সমস্যা নিয়ে আমরা যে কত বড় বিপদের মুখোমুখি তা হয়তো আমরা অনেকেই এখনো পুরোপুরি উপলব্ধি করতে পারছি না।