চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

প্রত্যাহারই সমাধান নয়, দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে

বাংলাদেশের স্বাধীনতা এবং গর্বের পতাকা অর্জনের জন্য জীবন বাজি রেখে যুদ্ধ করা বীর মুক্তিযোদ্ধাদের অবমাননার খবর প্রায়ই দেখা যায়। এ বিষয়টি বেদনাদায়ক হলেও এমনই এক ঘটনা ঘটেছে দিনাজপুরে।

ছেলের চাকরিচ্যুতির প্রতিবাদে মুক্তিযোদ্ধা ইসমাইল হোসেন মৃত্যুর পর রাষ্ট্রীয় মর্যাদা প্রত্যাখ্যান করেছেন। জাতীয় সংসদের হুইপকে লেখা চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে অভিমানী সেই মুক্তিযোদ্ধাকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদা ছাড়াই সমাহিত করা হয়।

রাষ্ট্রযন্ত্রের কতোটা অবহেলা আর ভোগান্তির শিকার হলে একজন মুক্তিযোদ্ধা স্থানীয় এমপিকে চিঠি লিখে রাষ্ট্রীয় মর্যাদা প্রত্যাখ্যান করতে পারেন, তা ভাবতেই গা শিউরে ওঠে। এটা পুরো জাতির জন্য লজ্জাজনক বলেই আমরা মনে করি।

তবে এটা ভেবে অন্তত আশ্বস্ত হওয়া যায় যে, এই মুক্তিযোদ্ধার সঙ্গে হওয়া অমানবিক কাণ্ডের প্রতিবাদ শুরু হয়েছে স্থানীয় পর্যায় থেকেই। জেলা প্রশাসককে প্রত্যাহারের দাবিতে ডিসি অফিস চত্বরে সোমবারও প্রতিবাদ সমাবেশ ও মানববন্ধন করেছেন মুক্তিযোদ্ধারা। ঘটনায় সেই এসিল্যান্ড আরিফুল ইসলাম এবং জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সহকারী কমিশনার মহসেন উদ্দিনকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।

এছাড়া জেলা প্রশাসকসহ ইউএনও এবং সেই এসিল্যান্ডকে অপসারণ ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ কেন্দ্রীয় কমিটি ঢাকায় জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ঘেরাও কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। একজন মুক্তিযোদ্ধার সঙ্গে ধৃষ্টতা দেখানোর অপরাধের সঙ্গে জড়িত সবার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি আমরাও চাই। এক্ষেত্রে প্রত্যাহার বা বদলি কোনো সমাধান নয়।

ওই মুক্তিযোদ্ধা মৃত্যুর আগে এক চিঠিতে স্থানীয় এমপি ইকবালুর রহিমকে দেয়া এক চিঠিতে লিখেছিলেন: জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে হঠাৎ যদি আমার মৃত্যু হয়, আমাকে যেন রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফন না করা হয়। কারণ এসিল্যান্ড, ইউএনও, এডিসি, ডিসি যারা আমার ছেলেকে চাকরিচ্যুত, বাস্তুচ্যুত করে পেটে লাথি মেরেছে, তাদের সালাম-স্যালুট আমার শেষ যাত্রার কফিনে আমি চাই না।

চ্যানেল আই অনলাইনের প্রতিবেদনে জানা গেছে, এসিল্যান্ড আরিফুল ইসলামসহ তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে অসংখ্য অভিযোগ করেছেন চাকরিচ্যুত নুর ইসলাম। এসব অভিযোগ আমলে নিয়ে শিগগিরই ওই এসিল্যান্ডের স্ত্রীসহ সংশ্লিষ্ট সবার বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

এভাবে অপমান আর অভিমান নিয়ে আর কোনো মুক্তিযোদ্ধাকে যেন চলে যেতে না হয়, তা নিশ্চিতে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণে সংশ্লিষ্টদের প্রতি আমরা আহ্বান জানাচ্ছি। আমরা শুধু দুজনের প্রত্যাহারই নয়, দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি। যাতে আগামীতে এই দেশে কেউ মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করতে না পারে।