প্যারিসের ইতিহাসে ঘটে যাওয়া সবচেয়ে বড় ও ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলা এবং ইউরোপে চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতা বিনিয়োগের ক্ষেত্রে নিরুৎসাহ তৈরি করতে পারে বলে সতর্ক করে দিয়েছেন ইউরোপের অন্যতম বৃহৎ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি সিমেন্সের নির্বাহী পরিচালক জো ক্যাসার।
তিনি বলেন, বিনিয়োগ হচ্ছে একধরণের বিশ্বাস যা ভবিষ্যতের সঙ্গে সম্পৃক্ত। কিন্তু যখন এই ধরণের সন্ত্রাসী হামলা ও রাজনৈতিক অস্থিরতা চলে; তখন মানুষ বিনিয়োগে পিছপা হয়। একই সঙ্গে তারা ভবিষ্যতের ভালো সময়ের জন্য অপেক্ষা করে।
প্রায় সাড়ে ৩ লাখ কর্মচারী নিয়ে রাজত্ব করা ওই কোম্পানির নির্বাহী পরিচালকের মতো একই মন্তব্য করেন ইতালির অর্থমন্ত্রী পিয়েরে কারলো পাদোয়াঁ।
তিনি বলেন, ১৩ নভেম্বর প্যারিসে সন্ত্রাসী হামলা শুধু ১৩৯ জনের জীবনই কেড়ে নেয়নি, ইউরোপের অর্থনৈতিক ঘাটতি পুষিয়ে ওঠার জন্য একটি বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে।
পিয়েরে কারলো আরো বলেন, ওই সন্ত্রাসী হামলায় বিনিয়াগকারীদের ভরসা ও মনোবল দূর্বল হয়ে গেছে যা অর্থনীতি ও বিনিয়োগের জন্য বড় ক্ষতি। এই সঙ্কট থেকে ইউরোপের দেশগুলোকে বের করে নিয়ে আসা এখন অপরিহার্য হয়ে পড়েছে। কিন্তু বিনিয়োগ ছাড়া তা একেবারেই অসম্ভব।
বিশেষজ্ঞদের মতে, গত কয়েকমাসের তুলনায় অক্টোবরে ইউরোজোনের অর্থনৈতিক অবস্থার কিছুটা উন্নতি হয়েছিলো এবং বিনিয়োগ ১০৫.৯ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছিলো। কিন্তু প্যারিস এই ধরণের সন্ত্রাসী হামলা ও চলতি সপ্তাহে ব্রাসেলসে জারি করা কড়া নিরাপত্তার কারণে নভেম্বরে বিনিয়োগের হার কমবে।
আগামী সপ্তাহে ইউরোপীয় কমিশন চলতি মাসের বিনিয়োগের হার প্রকাশ করবে।
জো ক্যাসার বলেন, এখানকার ভূ-রাজনৈতিক পরিবেশে চলমান অস্থিরতা সত্বেও প্যারিস হামলার আগ পর্যন্ত চলতি মাসের প্রথম দিকে ধারণা করা হয়েছিলো ২০১৬ অর্থ বছরে ইউরোপে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি কিছুটা হলেও বৃদ্ধি পাবে।
বেলজিয়ামের রাজধানীতে কড়া নিরাপত্তা জারি করা সত্বেও সোমবার ব্রাসেলসে ইউরোজোনের অর্থমন্ত্রীরা এক বিশেষ বৈঠক করেছেন। বৈঠকে অর্থমন্ত্রীরা নিজ নিজ দেশের বাৎসরিক বাজেট, সাধারণ মানুষের আয়ের ওপর শরণার্থীরা সমস্যার প্রভাব ও গ্রিসে বেইল আউট পেমেন্ট নিয়ে আলোচনা করা হয়।