আগামী ২ সেপ্টেম্বর ‘মেঘের কোলে রোদ’ খ্যাত নির্মাতা নারগিস আকতারের ‘পৌষ মাসের পিরীত’ মুক্তি পাচ্ছে। নতুন সিনেমার মুক্তি উপলক্ষ্যে চ্যানেল আই অনলাইনের সঙ্গে কথা বলেছেন এ নির্মাতা। তুলে ধরেছেন ‘পৌষ মাসের পিরীত’ চলচ্চিত্র নিয়ে তার ভাবনা ও অন্যান্য প্রসঙ্গ।
চ্যানেল আই অনলাইন: ‘পৌষ মাসের পিরীত’ ছবি নিয়ে প্রত্যাশা কতটুকু?
নারগিস আকতার: হাজারো সমস্যা পার করে ছবিটি হলে মুক্তি পাচ্ছে তাই প্রত্যাশা অনেক। দর্শক অনেকদিন পর গ্রামবাংলা ছবি দেখতে পাবে। যেখানে দর্শক খুঁজে পাবে মৌলিকধারার একটি গল্প। বহুদিন গ্রামবাংলা নিয়ে সিনেমা মুক্তি পায়নি ‘পৌষ মাসের পিরীত’ সেরকম একটি ছবি, যেখানে দেশের প্রকৃতি, গ্রাম মানুষের জনজীবন, প্রেম-ভালোবাসা সব কিছুই থাকবে।
চ্যানেল আই অনলাইন: এটি মূলত কোন ধারার ছবি?
নারগিস আকতার: ছবিটির নাম যেহেতু ‘পৌষ মাসের পিরীত’ সেহেতু রোমান্টিক ছবি। নরেন্দ্রনাথ মিত্রের ‘রস’ গল্প অবলম্বনে ‘পৌষ মাসের পিরীত’ ছবিটি নির্মাণ করা হয়েছে। যেখানে দেখানো হবে ভালোবাসা মাঝে মাঝে স্বার্থের জন্যও ব্যবহার করা হয় যেটি কোনোভাবেই কাম্য নয়। ছবিতে প্রধান চরিত্রটি নারীকেন্দ্রিক।
চ্যানেল আই অনলাইন: ছবিটি যেহেতু নারীকেন্দ্রিক সেহেতু পপি কতটুকু গল্পের চরিত্রের মত হয়েছেন?
নারগিস আকতার: এই ছবিটির জন্য পপি একদম পারফেক্ট। গল্প যেভাবে চেয়েছে পপি ঠিক সেরকমই। এই গল্পের চরিত্রে পপি ছাড়া আমার আর কাউকে ঠিক পারফেক্ট মনে হয়নি। ছবিতে সে ভালো অভিনয় করেছে। গল্প যেভাবে চেয়েছে পপি ঠিক সেভাবেই অভিনয় করেছে। ঠিক একইভাবে একজন খেজুঁর গাঁছির হিসেবে টনি ডায়েস একদম পারফেক্ট ছিল।
চ্যানেল আই অনলাইন: ছবি নির্মাণের আগেই ছবির কাস্ট ভেবে রাখেন?
নারগিস আকতার: একদম নয়। ছবির চিত্রনাট্যের সঙ্গে যাকে ডিমান্ড করবে সেই ওই চরিত্রে অভিনয় করবে। সে যে কেউ হতে পারে। আমি ছবি নির্মাণ করার আগে কখনোই ভাবি না ছবিতে কোন অভিনেতা বা কোন অভিনেত্রী অভিনয় করবে। ছবির চরিত্রে যাকে দরকার হবেই আমি তাকে নিয়েই কাজ করি।
চ্যানেল আই অনলাইন: ‘পৌষ মাসের পিরীত’ নিয়ে আপনাকে অনেক প্রতিবন্ধকতায় পড়তে হয়েছে?
নারগিস আকতার: আসলে অনেক কষ্ট করেই ছবিটি শেষ করেছি। দেরি হওয়ার অন্যতম একটি কারণ ‘অর্থ সংকট’। সেই সব গল্প এখন শুনে আর লাভ নেই। আমার সন্তান যেভাবেই হোক বড় হয়েছে, এখন সে হাঁটবে।
চ্যানেল আই অনলাইন: কতটি হলে ছবিটি মুক্তি পাবে?
নারগিস আকতার: এটি খুব ভালো বলতে পারবেন ছবিটির পরিবেশক জাজ মাল্টিমিডিয়া। তবে ইচ্ছে ঢাকা ছাড়াও বাইরে মুক্তি দেওয়ার। অল্প হলেও মুক্তি পেলেও আমার কোনো সমস্যা নেই কারণ যারা নারগিস আকতারের ছবি দেখেন তারা অবশ্যই ছবিটি দেখতে যাবেন।
চ্যানেল আই অনলাইন: ছবির প্রচারণা শুরু হয়েছে?
নারগিস আকতার: ছবির প্রচারণা ওতো ঢাক-ঢোল পিটিয়ে করা হচ্ছে না। ফেসবুকে ‘পৌষ মাসের পিরীত’ নামে একটি পেজ খোলো হয়েছে। সেখানেই আমরা ছবি সর্ম্পকে অনেকে কিছু পোস্ট করছি। এছাড়া চ্যানেলে ছবি নিয়ে কথাবার্তা, টকশো চলছে।
চ্যানেল আই অনলাইল: ছবির সংবাদ সম্মেলনে পপি হাজির ছিলেন না এ নিয়ে ক্ষোভ ছিল আপনার?
নারগিস আকতার: আমি কোনো ক্ষোভ প্রকাশ করেনি। কারণ তিনি এ ছবির নায়িকা তার দায়িত্ব ছিল ছবিতে ঠিক মত অভিনয় করার এবং তিনি সেটা ঠিকমত করেছেন। এখন সেই ছবির সংবাদ সম্মেলনে যদি না আসেন এটি তার একান্ত ব্যাপার। ছবি শেষ হওয়ার পর যার যার কিছু দায়িত্ব থাকে সেই দায়িত্ব নিজ থেকে পালন করা উচিত। আমি এ নিয়ে পপিকে কোনো জোর করতে পারি না।
চ্যানেল আই অনলাইন: চলচ্চিত্র ইন্ডাস্ট্রিতে নারী র্নিমাতাদের টিকে থাকার উপায় কি?
নারগিস আকতার: দেখুন প্রথমেই বলি আমি নির্মাতাকে নারী-পুরুষ মনে করি না। নির্মাতা মানে নির্মাতা সে নারী বা পুরুষ হতে হবে। তবে তাদের টিকে থাকার জন্য প্রথমে দরকার নিজের প্রতি আত্মবিশ্বাস। এবং পরিচালকদের সঙ্গে প্রতিযোগীতা করার শক্ত মনোবল।
আমরা সাধারণত দেখি দু’একটি সিনেমা অনেকেই হারিয়ে যাচ্ছে। হারিয়ে যাওয়ার অনেক কারণ থাকে। তবে মূল কারণ হল প্রতিযোগীতা করতে না পারা, পরিশ্রমী না হাওয়া। এবং কাজটি গুছিয়ে না করা। সর্বোপরি ফ্যামিল সার্পোট না পাওয়া। ফ্যামিলির সার্পোট পেলেই অবশ্যই একটি নারী খুব ফ্রেশ কাজ উপহার দিতে পারেবে।
চ্যানেল আই অনলাইন: আপনি কতটুকু সার্পোট পান?
নারগিস আকতার: আজ আমি নারগিস আকতার হতে পেরেছি ফ্যামিলির কারণে। আমার জীবনসঙ্গী আমাকে সবসময় সার্পোট দিয়ে থাকেন। তাদের কারণেই আমি আমার কাজের ক্ষেত্রে কাজ করে শান্তি পাই।