বাংলাদেশের পুলিশ অনেক এগিয়ে গেছে। বিদেশে শান্তিরক্ষা মিশনে দায়িত্ব পালনসহ দেশে জঙ্গিবিরোধী অভিযানের সফল পরিচালনা ও সম্প্রতি মাদকের বিরুদ্ধে সময়োপযোগী অভিযান পরিচালনা করে বেশ প্রশংসা অর্জন করেছে। দেশের মাটিতে ও বিদেশে পুলিশ ক্রমাগত সাফল্যের সঙ্গে সুনাম কুড়িয়ে যাচ্ছে। এর ভেতর শুরু হয়েছে পুলিশ সপ্তাহ। পুলিশ সপ্তাহের শুরুতেই প্রধানমন্ত্রী বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদান রাখার জন্যে পুলিশ বাহিনীর যোগ্য সদস্যদের বিভিন্ন পদকে ভূষিত করেন।
তবে কথা থেকে যায় আমাদের দেশের পুলিশ কতটা জনবান্ধব। অনেক সাফল্যের পাশাপাশি তাদের রয়েছে প্রচুর দুর্বলতা, যা রাষ্ট্রের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান হিসেবে আমাদের আস্থার জায়গাটা নাড়িয়ে দেয়। বিশেষ করে পুলিশি মামলাগুলো সঠিক সময়ে গুরুত্ব না পাওয়ার কারণে বহু মানুষের দুর্ভোগ হয়। অনেক মানুষ মিথ্যা মামলার কারণে জীবনের সবচে মূল্যবান সময় কাটায় কারাগারে। দেখা যায় বিনা বিচারেও কারাগারে জীবনের মূল্যবান সময় নষ্ট হয় সাধারণ মানুষের। সাধারণ মানুষ পুলিশ বাহিনীকে ইতিবাচক জায়গা থেকে ভয় পায় না, ভয় পায় নেতিবাচক জায়গা থেকে। পুলিশ ধরলে বা আসলে হয়রানি বা টাকা পয়সাসহ নির্যাতনের ভয়ে মানুষ একপ্রকার পালিয়ে বাঁচে। এখনকার বাস্তবতা অনেকটা পাল্টে গেলেও সাধারণ মানুষের কাছে পুলিশের আস্থা অর্জন করতে হবে। মানুষ যেন পুলিশের কাছে নির্ভয়ে যেতে পারে এবং তাদের নিকট সঠিক সিদ্ধান্ত বা পদক্ষেপ আশা করতে পারে।
প্রধানমন্ত্রীর ভাষণেও পুলিশের প্রতি আস্থা বাড়ানোর তাগিদ এসেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পুলিশ বাহিনীকে আরো ‘জনবান্ধব’ হিসেবে গড়ে তোলার ওপর গুরুত্বারোপ করে দ্রুত বিচার নিশ্চিত করতে মামলায় পুলিশের কার্যক্রম যথাসময়ে নিষ্পত্তির জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি বলেন: দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে আপনাদের আরো জনবান্ধব পুলিশ সদস্য হিসেবে কাজ করতে হবে এবং জনগণের মাঝে বিশ্বাস ও আস্থা তৈরি করতে হবে।
আমরা মনে করি পুলিশ বাহিনীর অনেক উজ্জ্বল কাজ রয়েছে যা দুয়েকটি ভুলের কারণে ম্লাণ হয়ে যেতে পারে। সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে আমাদের। বিভিন্ন ক্ষেত্রে পুলিশের অবদানে জন্য পদকপ্রাপ্ত পুলিশদের প্রতি আমাদের অভিনন্দন। আমরা মনে করি পুলিশ বাহিনী এখন অনেক সুসংগঠিত। এখন সময় এসেছে জনগণের আস্থা অর্জনে আরো পেশাদারী মনোভাবের পরিচয় দেয়ার।