দ্রুতই পুরান ঢাকার নাজিমউদ্দিন রোডের পুরনো কারাগারকে ঐতিহাসিক স্থাপনা হিসেবে ঘোষণা করা হবে বলে জানিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেছেন, আমাদের পুরনো কারাগারটি হবে নান্দনিক সৌন্দর্যমণ্ডিত ঐতিহাসিক স্থাপনা।
সোমবার বিকেলে শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় চিত্রশালা মিলনায়তনে জেলাখানাকে জাদুঘরে রূপান্তরে জন্য ডিজাইন প্রতিযোগিতা ক্যাম্পের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মন্ত্রী এ কথা বলেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, পুরান ঢাকার সাবেক কেন্দ্রীয় কারাগারটি ঐতিহাসিক স্থাপনা হিসেবে দর্শনীয় করে আমাদের নতুন প্রজন্মের কাছে রেখে যেতে চাই। মানুষ যাতে জানতে পারে এই স্মৃতিবিজড়িত কারাগারে আমাদের বঙ্গবন্ধু ১৭ বছর ছিলেন, আমাদের চার নেতারা ছিলেন, এছাড়াও আমাদের অন্যান্য নেতারাও এখানে থেকেছেন। শুধু বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ নয়, ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের সময়কার নেতারাও এখানে ছিলেন। এই জেলখানার একটি সুদীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে।
তিনি বলেন, ব্রিটিশ আমলের আগে এটি একটি ফোর্ট ছিল। তাছাড়া পুরান ঢাকার এই অংশের আলাদা সৌন্দর্য ছিল। সেই আদলেই জাদুঘর করা হবে। শিগগিরই সব স্থাপনা ও স্মৃতিবিজড়িত স্থানগুলোর সংস্কার কাজ শুরু হবে।
মন্ত্রী বলেন, প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে বঙ্গবন্ধু তথা মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস, চার নেতার স্মৃতি জাদুঘর এবং ঢাকার মধ্যযুগের ঐতিহ্য সংরক্ষণ করা যাবে। সেখানে উন্মুক্ত নাটক ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করা যাবে, গবেষণার সুযোগ থাকবে। পুরান ঢাকার ঐতিহ্যবাহী খাবারের ফুড কোর্ট, নির্মল বাতাসের জন্য থাকবে সুসজ্জিত জলাধারা, যা দর্শনার্থীদের জন্য আনন্দদায়ক হবে।
কারা মহা পরিদর্শক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সৈয়দ ইফতেখার উদ্দীন বলেন, ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার কেরানীগঞ্জে স্থানান্তরের পর বিদ্যমান কারাগারের জমি ও অবকাঠামো ব্যবহারের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাদের বেশ কিছু দিক নির্দেশনা দেন এবং একটি কমিটির মাধ্যমে জমি ব্যবহার সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় কার্যাদি বাস্তবায়নের নির্দেশনা প্রদান করেন। আমাদের জন্য আজকের দিনটি স্বপ্ন পূরণের মাইলফলক। আমরা আশা করছি ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরের মধ্যে আমরা কাজ শেষ করতে পারব।
ওপেন আর্কিটেকচারাল ডিজাইন প্রতিযোগিতায় ২৮টি প্রতিষ্ঠান অংশ নেয়। গত ৫ অক্টোবর বিকেল ৫টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত ডিজাইন জমা নেওয়া হয়। এতে ৩৪টি ডিজাইন জমা পড়ে।
প্রস্তাবিত এলাকায় তিনটি জোন করা হবে। জোন-এ তে মাল্টিপারপাস হল, কনভেনশন সেন্টার, সিনেপ্লেক্স, খাবার ঘর, সুইমিং পুল এবং অন্য সুবিধাসহ গাড়ি পার্কিং, ওয়েটার বডি ও ব্যাংক থাকবে।
জোন- বি তে বুক স্টোর, ফুলের দোকান, ভূগর্ভস্থ গাড়ির পার্কিং, বিদ্যমান ও ওয়েটার বডি। এছাড়া জোন-সি তে থাকবে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘর, চার নেতার কারাস্মৃতি জাদুঘর, কনফাইন্ড হেরিটেজ ও উদ্যান।
প্রতিযোগিতায় প্রথম স্থান অধিকার করেছেন স্থপতি আবদুর রশীদ ও তার দল, দ্বিতীয় হয়েছেন স্থপতি আমিনুল এহসান ও তার দল। সনদপ্রাপ্ত তিনজন হলেন- স্থপতি মেরিনা তাবাসসুম ও তার দল, স্থপতি শফিক হাসনাইন ও তার দল, স্থপতি আবুল ফজল মাহমুদুন নবী ও তার দল।