পারিবারিক আদালতের মামলা পরিচালনার ক্ষেত্রে মূল ব্যক্তির অনুপস্থিতিতে অন্যকে ক্ষমতা অর্পণ করা তথা “পাওয়ার অফ অ্যাটর্নি” দেয়া যাবে কিনা এবং পারিবারিক মামলায় দেওয়ানী কার্যবিধির ১০ ও ১১ ধারার বাইরে অন্য ধারা প্রযোজ্য হবে কিনা সে প্রশ্নে চার অ্যামিকাস কিউরির অভিমত শুনবেন হাইকোর্ট।
সিলেটের পারিবারিক আদালতে করা এক মামলায় “পাওয়ার অফ অ্যাটর্নি” সংক্রান্ত রিভিশন আবেদনের শুনানি নিয়ে বিচারপতি এ কে এম আবদুল হাকিম, বিচারপতি মো: রুহুল কুদ্দুস ও বিচারপতি কাজী ইবাদত হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের বৃহত্তর বেঞ্চ চার অ্যামিকাস কিউরি (আদালত বন্ধু) নিয়োগ দেন। যে চার অ্যামিকাস কিউরির অভিমত হাইকোর্ট শুনবেন তারা হলেন: জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এম আই ফারুকী, এ এফ হাসান আরিফ, কামালুল আলম ও প্রবীর নিয়োগী। আজ অ্যামিকাস কিউরি নিয়োগের সময় হাইকোর্টে বাদীপক্ষে শুনানিতে ছিলেন ব্যারিস্টার মো: সাইদুল আলম খান। আর বিবাদী পক্ষে ছিলেন আইনজীবী এম খালেদ আহমেদ।
আজকের আদেশের বিষয়ে ব্যারিস্টার মো: সাইদুল আলম খান চ্যানেল আই অনলাইনকে বলেন: ‘এই মামলার বাদী এক নারী তার আমেরিকা প্রবাসী সাবেক স্বামীর বিরুদ্ধে দেনমোহর ও সন্তানের ভরনপোষণের দাবীতে মামলা করেন। সে মামলায় বিবাদী তার পক্ষে মামলা লড়াতে এক আত্মীয়কে “পাওয়ার অফ অ্যাটর্নি” করেন। কিন্তু “ফ্যামিলি কোর্ট অর্ডিন্যান্স-১৯৮৫” অনুযায়ী পারিবারিক মামলায় “পাওয়ার অফ অ্যাটর্নি” নেয়ার বিধান নেই বলে সিলেটের পারিবারিক আদালত এই মামলার বিবাদীর “পাওয়ার অফ অ্যাটর্নি” গ্রহণ না করে আদেশ দেন। এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে বিবাদী আপিল করলে সিলেটের জেলা জজ আদালত সে আপিল খারিজ করেন। তবে বিচারিক আদালতের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে একপর্যায়ে হাইকোর্টে রিভিশন আবেদন করে আমেরিকা প্রবাসী বিবাদী।
এরপর বিচারপতি মো: রুহুল কুদ্দুস ও বিচারপতি কাজী ইবাদত হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চে ওই রিভিশন আবেদনের শুনানি শুরু হয়। সে শুনানিতে পারিবারিক আদালতের মামলায় দেওয়ানী কার্যবিধির ১০ ও ১১ ধারার বাইরে অন্য কোন ধারা প্রযোজ্য হবে কিনা সে বিষয়ে হাইকোর্টের সামনে ভিন্ন ভিন্ন রায় পরিলক্ষিত হয়। একপর্যায়ে হাইকোর্ট বেঞ্চ এই রিভিশন আবেদনটি শুনানির জন্য বৃহত্তর বেঞ্চ গঠন করতে বিষয়টি প্রধান বিচারপতির কাছে প্রেরণ করেন। পরে প্রধান বিচারপতি রিভিশন আবেদনটি শুনানির জন্য তিন বিচারপতির সমন্বয়ে একটি বৃহত্তর হাইকোর্ট বেঞ্চ গঠন করে দেন। সে বেঞ্চে আজ রিভিশন আবেদনটি শুনানির জন্য এলে হাইকোর্ট চারজন জ্যেষ্ঠ আইনজীবীকে অ্যামিকাস কিউরি নিয়োগ দিন। আর এবিষয়ে পরবর্তী শুনানির জন্য আগামি ৮ মার্চ দিন ধার্য করেন।’