পরমাণু সমৃদ্ধকরণ কর্মসূচি সীমিত রাখার সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসার ঘোষণা দিয়েছে ইরান। রোববার দেশটির মন্ত্রিসভার এক বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয়।
ওই বৈঠকের পর এক বিবৃতিতে প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি জানিয়েছেন, ইরান আর ২০১৫ সালের পরমাণু চুক্তির কোনো নিষেধাজ্ঞা মানবে না। দেশটির পারমাণবিক প্রযুক্তি সমৃদ্ধ করার ক্ষমতা, সমৃদ্ধকরণের মাত্রা, পারমাণবিক উপাদান সংগ্রহ বা এ নিয়ে গবেষণা ও উন্নয়নকাজ আর সীমিত রাখবে না দেশটি।
তেহরানের প্রযুক্তিগত প্রয়োজনে এ কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে বলেও বিবৃতিতে জানানো হয়েছে।
ইরাকের বাগদাদে ইরানের শীর্ষ জেনারেল কাসেম সোলাইমানিকে হত্যার প্রতিবাদে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইরান সরকার।
তেহরান মার্কিন স্থাপনায় আঘাত হানলে জবাবে ইরানের ৫২ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় যুক্তরাষ্ট্র হামলা চালাতে প্রস্তুত রয়েছে বলে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের হুঁশিয়ারিকে উড়িয়ে দিয়েছেন ইরানের সেনাপ্রধান মেজর জেনারেল আবদুল রহিম মুসাভি। বলেছেন, ইরানের সঙ্গে সামরিক সংঘাতে জড়ানোর সাহস যুক্তরাষ্ট্রের নেই।
মার্কিন হামলায় শুক্রবার শীর্ষ সামরিক কমান্ডার কাসেম সোলাইমানির মৃত্যুতে ‘ভয়াবহ প্রতিশোধ’ নেয়ার ঘোষণা দিয়েছে ইরান। দেশটির সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ খামেনি বলেছেন, হামলাকারীদের জন্য বড় শাস্তি অপেক্ষা করছে। নিহত কাসেম সোলাইমানির জানাযায় রোববার তিনি নিজে ইমামতি করবেন বলেও জানিয়েছেন।
হত্যার ঘটনায় ক্ষোভে ফুঁসছে ইরান-মধ্যপ্রাচ্য। যদিও ট্রাম্প বলেছেন, সোলাইমানিকে যুক্তরাষ্ট্র হত্যা করেছে যুদ্ধ থামাতে, বাঁধাতে নয়, কিন্তু তারপরই এক টুইটবার্তায় তিনি বলেন, জেনারেল সোলাইমানির মৃত্যুর জবাবে যুক্তরাষ্ট্রের বেশ কিছু স্থাপনা ও সম্পত্তিতে আঘাত হানার কথা অনেক দম্ভভরে বলছে ইরান। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রও ইরানের ৫২টি স্থাপনা ও এলাকা চিহ্নিত করে রেখেছে, যার বেশ কয়েকটি অত্যন্ত উচ্চ পর্যায়ের এবং ইরান ও ইরানের সংস্কৃতির জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
‘তেহরান যুক্তরাষ্ট্রের কোনো স্থাপনা লক্ষ্য করে হামলা চালালে ইরান নিজেই খুব দ্রুত এবং খুবই ভয়াবহভাবে আঘাতের শিকার হবে,’ বলেন ট্রাম্প।
মার্কিন প্রেসিডেন্টের এ হুমকিকে যুদ্ধাপরাধের শামিল বলে মন্তব্য করেন ইরানের সেনাপ্রধান।
নিউইয়র্ক টাইমস জানায়, ট্রাম্পের এ মন্তব্যের পর তাকে ‘ভদ্রবেশী সন্ত্রাসী’ বলে তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন ইরানের তথ্য ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোহাম্মদ জাভা আজহারি জাহরুমি।
রোববার সোলাইমানির মরদেহ ইরাক থেকে নিজ দেশ ইরানে নেয়া হলে তার প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে আসেন লাখো মানুষ। মরদেহ স্থানীয় একটি বিমানবন্দরে পৌঁছানোর আগেই ঢল নামে জনতার। তার জানাযায় শরিক হন সব শ্রেণিপেশার অসংখ্য মানুষ।
সোমবার কয়েক দফা নামাজে জানাযার পর মঙ্গলবার জন্মস্থান কেরমানেই তার দাফন হওয়ার কথা রয়েছে।