ত্রিশ বিঘা পাহাড়ি জমিতে লাউ চাষ করে সাফল্যের নজির গড়েছেন ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলার হাতিবেড় গ্রামের শিক্ষিত তরুণ বাবুল। পতিত জমি লিজ নিয়ে তার গড়া লাউবাগান এলাকার অন্যান্যদের কাছে এক অনুকরণীয় উদাহরণ।
পাল্টে গেছে ভালুকার পাহাড়ি এলাকার চেহারা। একটু আধটু পাকা আমনের ক্ষেতের পাশে এখন উঁকি দেয় ঘনসবুজ সুদীর্ঘ লাউয়ের মাচা। এই ত্রিশ বিঘা লাউয়ের ক্ষেত কোনো হাতযশওয়ালা কৃষকের নয়। এর সবটুকুই এলাকার হতদরিদ্র পরিবারের শিক্ষিত তরুণ বাবুলের লাউয়ের ক্ষেত।
বাবুল জানান, জায়গাগুলো আগে জঙ্গল ছিল। স্থানীয় শ্রমিক দিয়ে সেগুলো পরিষ্কার করিয়ে নেন তিনি। জমি বিক্রি করে ৪ লাখ টাকা যোগাড় করেন বাবুল। এর সঙ্গে আরও ৪ লাখ টাকা ধার নিয়ে লাউ চাষ শুরু করেন।
উদ্যোগের প্রথম প্রেরণা টিভি অনুষ্ঠান। বাবুল বলেন, “হৃদয়ে মাটি ও মানুষ অনুষ্ঠানটি দেখে আমি উৎসাহ পাই যে, আমি আগে কাজটা শুরু করি। সাফল্য আমি পাবো।”
বহু চ্যালেঞ্জ আর সঙ্কটের পথ পেরিয়ে এ বছরই লগ্নি করা টাকা তুলে লাভের মুখ দেখার আশা করছেন বাবুল।
তিনি জানান, ৪-৫ লাখ টাকার মতো লাউ এখন পর্যন্ত বিক্রি হয়েছে। আরও ৭-৮ লাখ টাকার মতো বিক্রি করার সম্ভাবনা রয়েছে। যদি বাজারের অবস্থা এখনকার মতোই থাকে তবে ঋণগুলো শোধ হবে আর লাভের সঙ্গে মাচাগুলোও ধরে রাখা যাবে বলে আশা করছেন বাবুল।
সাহসী কৃষি উদ্যোক্তা বাবুল বলছেন, কিছু সমস্যা ও প্রতিকূলতা এখনো রয়েছে। যেগুলো মোকাবেলা করা গেলে আরও উন্নতি করা সম্ভব হতো।
বাবুলের মতে, সারা বাংলাদেশে ব্যবসায়ীরা ঋণসহ অনেক সুযোগ-সুবিধা পায়। কিন্তু তিনি কোনো ধরণের ঋণসুবিধা পাননি। পোকামাকড় ক্ষেতে আক্রমণ করলে তিনি নিজের জ্ঞান থেকেই ওষুধ স্প্রে করেন।
একদিন পর পর দেড় থেকে দু’হাজার লাউ এই ক্ষেত থেকে কাটা হচ্ছে। স্থানীয় বাজার হয়ে সেগুলো আসছে রাজধানীর বাজারে।
স্থানীয় এক পাইকারি ব্যবসায়ী জানান, আগে উপার্জন করত শুধু পাইকাররাই। এখন কৃষকরাও ভালো পয়সা পায়।
বাবুল এখন বিশ্বাস করেন, সাফল্যের জন্য প্রয়োজনে যে কোনো ঝুঁকি নিতে হয়। বাবুলের স্বপ্ন বহুদূর যাওয়ার।