অনূর্ধ্ব ১৯ বিশ্বকাপ ক্রিকেটে নেপাল কোয়ার্টার ফাইনাল নিশ্চিত করায় সেখানকার মানুষদের আনন্দের ঘটনার সাথে বাংলাদেশের ক্রিকেটেরও অতীত গৌরবের কথা স্মরণ করে ফেসবুকে একটি পোস্ট দিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, সমাজত্ত্ববিদ এবং লেখক আমিনুল ইসলাম।
ফেসবুকে আমিনুল ইসলাম লিখেন, আমার এখানে বেশ কিছু নেপালি পরিবার থাকে। আজ দুপুরে এখানকার নেপালিরা একটা পার্টির আয়োজন করেছিলো, আমাকেও দাওয়াত দিয়েছে। গিয়ে দেখি সবাই বেশ আনন্দ করছে। জিজ্ঞস করলাম
-পার্টি’র উদ্দেশ্য কি?
এক মাঝ বয়েসি নেপালি বলল
-বলো কি! আমরা তো ভাবলাম তুমি নিশ্চয় জানো! বাংলাদেশেই তো খেলা হচ্ছে। নেপাল দল অনূর্ধ্ব ১৯ বিশ্বকাপ কোয়ার্টার ফাইনালে উঠে গেছে। এই জন্য আমরা এই পার্টির আয়োজন করেছি।
আমি মোটামুটি সব লেভেলের ক্রিকেটেরই খোঁজ রাখার চেষ্টা করি। গত দুই দিন বাংলাদেশের কোন খেলা না থাকাতে আর খোঁজ নেয়া হচ্ছিলো না। তাই নেপালের ব্যাপারটা আর জানা হয়নি। কিন্তু নিজ দেশ থেকে হাজার মাইল দূরে বসে এই নেপালিদের আনন্দ দেখে আমার সেই দিনটির কথা মনে হচ্ছিলো।
মালয়েশিয়ায় খেলা হচ্ছিলো আইসিসি ট্রফি’র সেমিফাইনাল। জিতে গেলেই বিশ্বকাপে খেলা যাবে। আমার পরীক্ষা চলছে, তবুও আমি কানের কাছ থেকে রেডিও সরাই না। শেষমেশ যখন বাংলাদেশ জিতে গেলো, দৌড়ে রাস্তার মোড়ে চলে গিয়েছিলাম। শুধু আমি না, আমার মতো হাজার হাজার মানুষ সেদিন রাস্তায় নেমে এসছিলো। পুরো বাংলাদেশের মানুষ সেই দিন গায়ে রং মেখে আনন্দ উৎসব করেছিলো।
সেই বাংলাদেশ এখন টেস্ট ক্রিকেট খেলে; সাকিব, মুস্তাফিজদের মতো স্টার এখন বিশ্ব ক্রিকেটে রাজত্ব করে। কিন্তু সেই দিনটির কথা ভুলি কি করে। আজ নেপালিদের আনন্দ দেখে হঠাৎ সেই দিনটির কথা মনে হচ্ছিলো। প্রায় ঘরোয়া পরিবেশে এই নেপালিরা যে পার্টি’র আয়োজন করেছিলো, সেখানেও এরা টেস্ট প্লেয়িং দেশের মানুষ হিসেবে দেখলাম আমাকে বেশ সম্মান করে বলল
-নেপালের এই বিজয় সম্পর্কে তুমি কিছু বলো।
আমি কোন কিছু না ভেবে, আইসিসি ক্রিকেটে যেদিন আমরা ফাইনলে উঠে বিশ্বকাপ খেলার প্রথন টিকেট পেলাম সেই দিনটির কথাই বললাম। আমরাও একদিন নেপালের মতো’ই ছিলাম। আরও বললাম, নেপালও নিশ্চয় একদিন টেস্ট খেলবে, বিশ্ব ক্রিকেটে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করবে।
সেই সাথে শ্রদ্ধা বাংলাদেশ ক্রিকেটে অবদান রাখা সকল খেলোয়াড়, সংগঠক থেকে শুরু করে আমাদের মতো সাধারণ দর্শকদের। এখন আমরা বিশ্বকাপ আয়োজন করি, কাল হয়তো বিশ্বকাপও জিতবো।