‘সব ম্যাচেই নেইমারের দিকে চেয়ে থাকে ব্রাজিল। এখনো নিজেকে সেভাবে মেলে ধরতে পারেনি। সামনে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ। এ ম্যাচে ব্রাজিলের সাফল্য নেইমারের উপরই নির্ভর করবে।’
ব্রাজিল নকআউটে মেক্সিকোর বিপক্ষে নামার আগে নেইমার সম্পর্কে কথাগুলো বলেছিলেন রিভালদো। সঙ্গে মেক্সিকো ম্যাচে ব্রাজিলকেই এগিয়ে রেখেছিলেন সেলেসাওদের হয়ে ১৯৯৪ ও ২০০২ বিশ্বকাপজয়ী দলের অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার। সেটাই সত্যি হল। কাঙ্ক্ষিত জয় পেয়েছে ফেভারিট ব্রাজিলই। আর জ্বলে উঠেছেন দলের নিউক্লিয়াস নেইমারও। রাশিয়া বিশ্বকাপে দুই গোল হয়ে গেল তার।
সামারা অ্যারেনায় আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণের ম্যাচে শুরু থেকেই ছন্দে ছিলেন নেইমার। ব্রাজিল যদিও নিজেদের খুঁজে পেতে মিনিট বিশেক পার করে দেয়। পরে ক্ষণেক্ষণে প্রতিপক্ষ রক্ষণে ভয় ছড়াচ্ছিলেন নেইমার। বারকয়েক খুব কাছেও গেলেন। তবে দারুণ ছন্দে গড়ে ওঠা আক্রমণগুলো পরিণতি পাচ্ছিল না।
ব্রাজিলের সাফল্য না আসার সময়গুলোতে মেক্সিকোর দেয়াল ওচোয়া নিজের নামের প্রতি সুবিচারই করে যাচ্ছিলেন। তাতে প্রথমার্ধ সাফল্যহীনভাবে কাটে সেলেসাওদের। বিরতির পর ফিরে গোলের জন্য মরিয়া ব্রাজিল হামলে পড়তে থাকে ওচোয়ার সামনে। সাফল্য আসে দলের সেরা তারকা নেইমারের পায়েই। পরে দ্বিতীয় গোলটির উৎসও ছিলেন নেইমারই।
প্রথমে ৫১ মিনিটে ভাঙেন ওচোয়া-দেয়াল। দারুণ ক্ষিপ্রতায় ডি-বক্সের বামপ্রান্ত দিয়ে ক্রস করেছিলেন উইলিয়ান। ওচোয়া হাত বাড়িয়েছিলেন, কিন্তু ছুঁতে পারেননি। তার গ্লাভসে চুমু দিয়ে বেরিয়ে যাওয়া বল স্লাইড করে জালে জড়িয়ে সেলেসাওদের উল্লাসে মাতান নেইমার।
নেইমার পরেও ত্রাতা। তবে এবার সহযোগীর ভূমিকায়। ম্যাচের নির্ধারিত সময় বাকি তখন দুই মিনিট। এক গোলকে যেন নিরাপদ মনে করলেন না। প্রায় নিজেদের অর্ধ থেকে এক দৌড়ে পৌঁছে গেলেন মেক্সিকো রক্ষণে। প্রথম গোলের সময় তার দিকে যেভাবে বল বাড়িয়েছিলেন উইলিয়ান, নেইমার ঠিক তেমনই এক পাস দেন ফিরমিনোকে। ওচোয়া এবারও ঝাঁপালেন, পারলেন না। ফাঁকা জালে গোল করতে ভুল করেননি ফিরমিনোও।
ব্রাজিল তাতে কোয়ার্টার ফাইনালে নেইমারে ভর করেই। পরের রাউন্ডে তাদের প্রতিপক্ষ হবে রাতে বেলজিয়াম ও জাপান ম্যাচের বিজয়ী। নেইমার যেভাবে জ্বলছেন, প্রতিপক্ষকে জ্বালাচ্ছেন, তাতে যেকোনো প্রতিপক্ষই আর কঠিন নয় ব্রাজিলের সামনে!
ব্রাজিলের দুর্দান্ত জয়ের দিনে নেইমার এগিয়ে গেছেন পারফরম্যান্সের পরিসংখ্যানেও। এবার প্রতিপক্ষের রক্ষণে সবচেয়ে বেশি ২৩ শট নেয়া খেলোয়াড়টির নাম নেইমার। যার মধ্যে গোলমুখে অন টার্গেট সর্বোচ্চ ১২টি শটও তার। সতীর্থদের জন্য গোলের সুযোগ তৈরিতেও এগিয়ে নেইমার, ১৬বার। দুঃখের কথা, সবচেয়ে বেশি ২৩বার ফাউলের শিকারও তিনিই।