ফেনীর সোনাগাজীতে আগুনে পুড়িয়ে মাদ্রাসা ছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে হত্যার মামলায় অন্যতম অভিযুক্ত অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলার ঘনিষ্ঠ শাহাদাত হোসেনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
পুলিশ বুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) শুক্রবার রাত ১টার দিকে ময়মনসিংহের মুক্তাগাছা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে।
সিরাজউদ্দৌলার আরেক ঘনিষ্ঠ নূর উদ্দিনকেও ময়মনসিংহ থেকেই গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। অধ্যক্ষের মুক্তির দাবিতে আন্দোলনে নেতৃত্বদাতা এবং হত্যা মামলার দ্বিতীয় আসামি নূর উদ্দিনকে শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে ভালুকার সিডস্টোর এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে পিবিআই ময়মনসিংহ ব্রাঞ্চ।
এর আগে বৃহস্পতিবার রাতে পিবিআই সদস্যরা গ্রেপ্তার করেছিল মামলার চার নম্বর আসামি ফেনীর সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার পরিচালনা কমিটির সদস্য ও কাউন্সিলর মাকসুদ আলমকে (৪৫)। ঢাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল তাকে।
গত ২৭ মার্চ সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা সিরাজ উদ দৌলার বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগে মামলা করেন ওই ছাত্রীর মা। মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, ২৭ মার্চ সকাল ১০টার দিকে অধ্যক্ষ তার অফিসের পিয়ন নূরুল আমিনের মাধ্যমে ছাত্রীকে ডেকে নেন। পরীক্ষার আধঘণ্টা আগে প্রশ্নপত্র দেয়ার প্রলোভন দেখিয়ে ওই ছাত্রীকে লাঞ্ছিত করার চেষ্টা করেন অধ্যক্ষ। পরে পরিবারের দায়ের করা মামলায় গ্রেপ্তার হন তিনি।
সেই মামলা তুলে নিতে রাজি না হওয়ায় অধ্যক্ষের লোকজন গত ৬ এপ্রিল সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসায় আলিম পরীক্ষার কেন্দ্রে মাদ্রাসার ছাদে ডেকে নিয়ে নুসরাতের গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে পালিয়ে যায় মুখোশধারীরা।
আগুনে ঝলসে যাওয়া নুসরাত ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১০ এপ্রিল রাতে মারা যান।
গত সোমবার নুসরাতের ভাই মাহমুদুল হাসান নোমানের আগের দেয়া এজাহার পরিবর্তন করে সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলাকে প্রধান আসামি করে আটজনের নাম উল্লেখ করা হয়।
এছাড়া অজ্ঞাত বোরকা পরিহিত আরো চার নারীসহ অজ্ঞাত আরো অনেককে আসামি করা হয়েছে।
আসামিরা হলেন: মামলার প্রধান আসামি সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ এ এস এম সিরাজউদ দৌলা, ইংরেজি প্রভাষক আবছার উদ্দিন, পৌর কাউন্সিলর মাকসুদুল আলম মাকসুদ, ছাত্র শাহদাৎ হোসেন শামীম, সাবেক ছাত্র নুর উদ্দিন, জাবেদ হোসেন, জোবায়ের আহমেদ, হাফেজ আব্দুল কাদের।