মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনায় দায়ের করা মামলার চার নম্বর আসামি ফেনীর সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার পরিচালনা কমিটির সদস্য ও কাউন্সিলর মাকসুদ আলমকে (৪৫) ঢাকা থেকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন।
বৃহস্পতিবার রাতে গ্রেপ্তারের পর শুক্রবার সকালে তাকে পিবিআইয়ের ফেনী জেলা শাখার কর্মকর্তাদের হাতে হস্তান্তর করা হয়েছে।
ফেনী পিবিআই এর অতিরিক্ত বিশেষ পুলিশ সুপার মনিরুজ্জামান জানান: শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে আসামি হাতে পেয়েছি। পিবিআই ঢাকা মেট্রো ও ফেনী যৌথ অভিযানে তাকে রাতে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
গ্রেপ্তার মাকসুদ আলম সোনাগাজী পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ও সোনাগাজী পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক।
গত ৬ এপ্রিল সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসায় আলিম পরীক্ষার কেন্দ্রে মাদ্রাসার ছাদে ডেকে নিয়ে নুসরাতের গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে পালিয়ে যায় মুখোশধারীরা।
আগুনে ঝলসে যাওয়া নুসরাত ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১০ এপ্রিল রাতে মারা যায়।
গত ২৭ মার্চ সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা সিরাজউদ্দৌলার বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগে মামলা করেন ওই ছাত্রীর মা। মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, ২৭ মার্চ সকাল ১০টার দিকে অধ্যক্ষ তার অফিসের পিয়ন নূরুল আমিনের মাধ্যমে ছাত্রীকে ডেকে নেন। পরীক্ষার আধা ঘণ্টা আগে প্রশ্নপত্র দেয়ার প্রলোভন দেখিয়ে ওই ছাত্রীকে লাঞ্ছিত করার চেষ্টা করেন অধ্যক্ষ। পরে পরিবারের দায়ের করা মামলায় গ্রেপ্তার হন অধ্যক্ষ। সেই মামলা তুলে নিতে রাজি না হওয়ায় অধ্যক্ষের লোকজন ওই ছাত্রীর গায়ে আগুন দেয়।
গত সোমবার নুসরাতের ভাই মাহমুদুল হাসান নোমানের আগের দেওয়া এজাহার পরিবর্তন করে সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজউদ দৌলাকে প্রধান আসামি করে আটজনের নাম উল্লেখ করা হয়।
এছাড়া অজ্ঞাত বোরকা পরিহিত আরো চার নারীসহ অজ্ঞাত আরো অনেককে আসামি করা হয়েছে।
আসামিরা হলেন- মামলার প্রধান আসামি সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ এ এস এম সিরাজউদ দৌলা, ইংরেজি প্রভাষক আবছার উদ্দিন, পৌর কাউন্সিলর মাকসুদুল আলম মাকসুদ, ছাত্র শাহদাৎ হোসেন শামীম, সাবেক ছাত্র নুর উদ্দিন, জাবেদ হোসেন, জোবায়ের আহমেদ, হাফেজ আব্দুল কাদের।