বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেছেন, নির্বাচনের নামে এ অর্থহীন তামাশার কোনো প্রয়োজন ছিল না। নির্বাচন নিয়ে যেসব আশঙ্কা করা হয়েছিল তার প্রায় সবই এই নির্বাচনে হয়েছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
দুপুরে নির্বাচন ভবনে এক সংবাদ ব্রিফিং এ একথা বলেন মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল।
এসময় তিনি বলেন আজ সকালে নির্বাচন শুরু হওয়ার সময় আমাদের নেতা-কর্মীদের মধ্যে একটা প্রত্যাশা ছিল। কিন্তু সেই প্রত্যাশায় পদাঘাত করা হয়েছে। বাংলাদেশের মানুষকে হতাশ, বিষণ্ণ ও বিস্মিত করা হয়েছে। নির্বাচনের নামে এই অর্থহীন তামাশার কোনো প্রয়োজন ছিল বলে মনে করি না।
বিএনপির এ নেতা আরো বলেন, রাষ্ট্রপতির কাছ থেকে বা অন্যকোনো কায়দায় একটা গেজেট জারি করে নিলেই হতো যে, নৌকা ২৯৯ আসন বা দুইশ সাড়ে নিরানব্বই আসন পেয়ে গেছে। এমনটা হলেও অবাক হওয়ার কিছু থাকতো না। কিন্তু কিছু প্রক্রিয়া দেখিয়ে নির্বাচনকে হালাল করার ব্যবস্থা আজকে পরিপূর্ণ করা হলো। মানুষের বহুল প্রত্যাশিত নির্বাচনের সাথে যারা তামাশা করলেন, বিদ্রূপ করলেন, রক্তাক্ত করলেন, আহত করলেন। তারা বাংলাদেশের মানুষের হৃদয়কে ক্ষত বিক্ষত করেছেন।
আলাল বলেন, বহুল প্রতীক্ষিত ও বহুল প্রত্যাশিত নির্বাচনে সাধারণ মানুষের মধ্যে একটি জাগরণ এসেছিল। কিন্তু যেদিন আমরা দেখলাম নির্বাচনী ইতিহাসের ব্যতিক্রম ঘটিয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের পক্ষ থেকে জানানো হলো যে, নির্বাচনের দিন সমস্ত হাসপাতাল, সমস্ত ডাক্তার ও সকল অ্যাম্বুলেন্সকে স্ট্যান্ডবাই রাখার জন্য। সেদিনই আমরা ভেবে ছিলাম বোধ হয় নির্বাচনটা সাংঘর্ষিক পরিস্থিতির দিকে যাচ্ছে এবং প্রধান নির্বাচন কমিশনার হয়ত সেটা আগেই জেনেছিলেন। জেনেই উনি ভোটারদেরকে সতর্ক করেছিলেন। ওনার সেই আশঙ্কাটাই এখন সত্য বলে প্রমাণিত হচ্ছে।
আলাল আরো বলেন, আমরা যে কথাগুলো বলছিলাম। সে কথাগুলোকে গুজব বলে উড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছিল যে, ব্যালট পেপারে আগেই সিল মারা হবে, কোথাও কোথাও আগেই ব্যালট বাক্স ভরে রাখা হবে। ভোটারদেরকে ভয়-ভীতি দেখিয়ে মেরে পিটিয়ে কেন্দ্রে থেকে দূরে রাখা হবে। সেই চিত্রই কিন্তু আমরা আজ দেখছি এবং আমাদের আশঙ্কাই সত্যি বলে প্রমাণিত হলো।
আর আমরা নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করলে ভুল করা হবে, বিএনপি পিছিয়ে যাবে। বাংলাদেশের গণতন্ত্র বাধাগ্রস্ত হবে। তাই আমরা পরিপূর্ণ উদ্যমে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে দেখালাম দলীয় সরকারের অধীনে কোনো সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচন হতে পারে না।
আলাল বলেন, গতকাল থেকে আজ পর্যন্ত পাওয়া তথ্য অনুযায়ী সারাদেশের বিভিন্ন আসনে আমাদের এজেন্টদের বের করে দেওয়া হচ্ছে। প্রার্থীকে অবরুদ্ধ করে রাখা হচ্ছে বা কেন্দ্রে ঢুকতে দেয়া হচ্ছে না। ভোটারদেরকে ঢুকতে দেয়া হচ্ছে না। বিশেষ করে নারী ভোটারদেরকে প্রকাশ্যে নৌকায় ভোট দিতে বাধ্য করা হচ্ছে। অথবা তাদের সামনে সিল মেরে দেওয়া হচ্ছে। আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর কিছু অতিউৎসাহী সদস্যদের সহযোগিতায় এগুলো করা হচ্ছে। সারাদেশের সার্বিক নির্বাচনের চিত্রটা এরকম বলে দাবী করেন বিএনপির এ নেতা।
সাংবাদিকদের সাথে ব্রিফিং এর আগে নির্বাচন কমিশনে আজকের ভোটের বিষয়ে নানা অভিযোগ সম্বলিত একটি চিঠি দেওয়া হয় বিএনপির পক্ষ থেকে।