নির্বাচন কমিশন গত রোববার টাঙ্গাইল-৪ আসনটি শূন্য ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশ করার পর থেকেই কালিহাতী আসনে বইছে উপনির্বাচনের আমেজ। আর এই নির্বাচনী আমেজের মধ্যেই দেখা হলো দুই ভাই কাদের সিদ্দিকী ও লতিফ সিদ্দিকীর।
উপনির্বাচনে বড়ভাই লতিফ সিদ্দিকীর শূন্য আসনে প্রথমবারে মতো নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করতে পারেন কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি কাদের সিদ্দিকী বীরউত্তম। এমনই খবর এখন টাঙ্গাইল-৪ আসনের সাধারণ মানুষের মুখে মুখে।
উপনির্বাচনের তারিখ এখনও ঘোষণা করেনি ইসি। এর আগে ১ সেপ্টেম্বর জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর কাছে লিখিত পদত্যাগপত্র জমা দেন আওয়ামী লীগের বহিস্কৃত প্রেসিডিয়াম সদস্য লতিফ সিদ্দিকী। তিনি আজ তার এলাকায় সমাবেশও করেন।
এর মধ্যেই শুক্রবার টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলার ছাতিহাটি গ্রামে বাবা-মায়ের কবর জিয়ারত ও জুমা’র নামাজ আদায় করতে আসেন কাদের সিদ্দিকী। সেসময় তিনি স্থানীয় জনসাধারণের উদ্দেশ্য বড় ভাই লতিফ সিদ্দিকী ও নির্বাচন বিষয়ে কথা বলেন।
পরে ঢাকা ফিরে যাওয়ার পথে উপজেলার বাগুটিয়া নামক স্থানে দেখা হয় একবছর পর নির্বাচনী এলাকায় আসা সদ্য সংসদ থেকে পদত্যাগকারী বড় ভাই আব্দুল লতিফ সিদ্দিকির সাথে। সেখানে তারা একে অপরকে জড়িয়ে ধরেন। এরপর এক সঙ্গে কিছু সময় কাটান।
নির্বাচনে অংশ নেওয়ার বিষয়ে বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী চ্যানেল আই অনলাইনকে জনান, এখনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। আগামীকাল (শনিবার) দলের কেন্দ্রীয় কমিটির একটি মিটিং আছে। সেখানে নেতাকর্মীদের সঙ্গে আলোচনা করে তাদের মতামত নেওয়া হবে।
‘নেতাকর্মীরা যদি নির্বাচনে অংশ নেওয়ার ব্যাপারে আগ্রহী থাকেন তাহলে তেমন কোনো সিদ্ধান্ত হতে পারে। শনিবার বিকেলে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে প্রেস ব্রিফিং করে সিদ্ধান্ত জানানো হবে।’
বড় ভাই লতিফ সিদ্দিকীর বিষয়ে তিনি বলেন, লতিফ সিদ্দিকীর কারণে আমি রাজনীতিতে এসেছিলাম, বঙ্গবন্ধুকে ভালবেসেছিলাম। লতিফ সিদ্দিকীকে অপমান করা মানে আমাকেই অপমান করা, রাজনীতিকেই অপমান করা, কালিহাতীর মানুষকে অপমান করা। সিদ্দিকী পরিবারকে ধ্বংশ করার যে ষড়যন্ত্র হচ্ছে তা রুখতে হবে।
কাদের সিদ্দিকী বলেন, মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানের বিরুদ্ধে আমাদের অস্ত্র ছিলো রাইফেল, কামান। আর এই পিতৃতুল্য বড়ভাই ও কালিহাতীবাসীর সম্মান রক্ষার যুদ্ধে আমাদের অস্ত্র হবে গামছা।
নয় দিনের দিল্লি সফর শেষে রোববার দেশে ফেরেন কাদের সিদ্দিকী। দেশে ফিরেই মন্ত্রিত্ব থেকে অব্যাহতি পাওয়া বড় ভাই আব্দুল লতিফ সিদ্দিকীর গুলশানের বাসভবনে তার সঙ্গে দেখা করেন। কাদের সিদ্দিকী ২৮ আগস্ট ভারতের রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জীর স্ত্রী শুভ্রা মুখার্জীর শ্রাদ্ধানুষ্ঠানে অংশ নিতে দিল্লী গিয়েছিলেন।
টাঙ্গাইলের ঐহিত্যবাহী সিদ্দিকী পরিবারের বসবাস টাঙ্গাইল-৪ কালিহাতী উপজেলাতে হলেও কাদের সিদ্দিকী সবসময় টাঙ্গাইল-৮ (সখিপুর-বাসাইল) থেকে নির্বাচন করেন। সাবেক আওয়ামী লীগ নেতা কাদের সিদ্দিকী এই টাঙ্গাইল-৮ আসনের সংসদ সদস্য পদ থেকেই ১৯৯৯ সালে পদত্যাগ করেছিলেন। একই বছর ১৫ নভেম্বর সেখানে উপনির্বাচনে অংশ নিয়ে পরাজিত হন। ১৯৯৯ সালের ২৪ ডিসেম্বর কাদের সিদ্দিকী কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ গঠন করেন।