চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

নিজের জালেই আটকে তামিম

সিলেট থেকে: মারকুটে ব্যাটসম্যান হিসেবে তামিম ইকবালকে চিনতেন সবাই। ম্যাচের শুরু থেকেই বোলারের উপর চড়াও হতে পারার বিশেষ প্রতিভা ছিল তার মধ্যে। ২২ গজে তামিমের সেই বিধ্বংসী রূপের দেখা মিলছে না কিছুতেই। নিজের উইকেটকে খুব গুরুত্ব দিতে গিয়ে ক্রমেই হারাচ্ছেন ছন্দ। ‘বুমবুম’ থেকে নামের পাশে এখন জুটছে ‘ডটডট’ তকমা!

তামিম খেলার ধরণ বদলেছেন অনেকদিন হল। শট কমিয়ে সতর্ক হয়ে ব্যাটিং করায় শুরুতে পাচ্ছিলেন সাফল্য। ইদানীং তার ব্যাটে রান না আসায় সেটিই এখন চিন্তার কারণ। এখান থেকে বেরিয়ে আসার কতটা তাগিদ অনুভব করছেন বাঁহাতি ব্যাটসম্যান সেটিও বোঝা যাচ্ছে না। দিনদিন কমছে স্ট্রাইকরেট।

সিলেটে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে ৪৩ বল খেলে তামিম করেছেন ২৪ রান। অন্যপ্রান্তে লিটন দাস খেলে গেছেন দুর্দান্ত। ১২০ স্ট্রাইকরেটে করে যান ১২৬ রান। দুই ওপেনারের ব্যাটিংয়ের ধরণ ছিল দুরকম। তাতে আরও স্পষ্ট হয়েছে অ্যাপ্রোচ।

বাংলাদেশের ৩২১ রানের দলীয় সংগ্রহের ম্যাচে ৫৫.৮১ স্ট্রাইকরেটে ব্যাটিং তামিমকে দাঁড় করিয়েছে কাঠগড়ায়। যদিও ব্যাটিং কোচ নিল ম্যাকেঞ্জি আস্থা হারাচ্ছেন না। তবে তিনিও অনুভব করছেন তামিমের ব্যাট থেকে আরও বাউন্ডারি প্রয়োজন।

দ্বিতীয় ওয়ানডে শুরুর আগেরদিন সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে ঐচ্ছিক অনুশীলনে এসে সাংবাদিকদের প্রশ্নের মুখে তামিমকে নিয়ে অনেক কথাই বলতে হয়েছে ম্যাকেঞ্জিকে। কোচ জানিয়েছেন, ধরে খেলার জন্য তামিমকে টিম ম্যানেজমেন্ট থেকে দেয়া হয়নি নির্দেশনা। তামিম নাকি নিজে নিজেই তৈরি করেছেন ধরে খেলার প্রবণতা।

‘তামিম জানে তার কী করা প্রয়োজন। এটা করে দিলে (ভূমিকা ঠিক করা) উল্টো ক্ষতির কারণ। আমাদের মাঝে কথা হয়েছে। আমরা অনুভব করছি তার আরও দুটো বাউন্ডারি বেশি মারা উচিত। খেলার ধরণ কেমন হবে সেটাও সেই বুঝবে। কেউ তামিমের হয়ে ব্যাট করবে না। তাকেই তার খেলাটা খেলতে হবে।’

‘দ্রুত বা ধীরগতিতে রান তোলা ব্যাপার না। আমরা জানি তার পারফরম্যান্স দলের জন্য কতটা দরকার। আগে সে এটা করেছেও। আমরা জানি সে কী করতে পারে। গত বছর বিপিএলের ফাইনালে আমরা তাকে বড় সেঞ্চুরি করতে দেখেছি।’

মঙ্গলবারের ম্যাচের আগে নেটে তামিমের ব্যাটিং স্ট্যান্স, পায়ের কাজ নিয়ে লম্বা সময় কাজ করেছেন ম্যাকেঞ্জি। তার আগে তামিম প্রসঙ্গে বললেন, ‘সে তার পরিকল্পনা জানে। আমরা এখানে স্কুল মাস্টার না। আমরা কাউকে বলব না কী শিখতে হবে, কী করতে হবে। আমরা মতামত, চিন্তা, টেকনিক্যাল বিষয়ে পরামর্শ দিবো। এরপর বাকিটা নির্দিষ্ট খেলোয়াড়ের ব্যাপার।’

‘আমরা একজন তরুণকে নিয়ে কথা বলছি না, সিনিয়র একজন খেলোয়াড়কে নিয়ে কথা বলছি। বিশ্বাস করুন, সে যদি ভুল করে তাহলে আমি বা আপনারা জানার আগে সে জানবে। তামিম নিজের উপর অনেক চাপ নিয়ে ফেলেছে। সে তার উইকেটের অনেক মূল্য দেয়, আগে তা করে সফলও হয়েছে। আরও কিছু বাউন্ডারি বেশি হলে ব্যাপারটা আর থাকবে না।’

উইকেটে মাত্রাতিরিক্ত ধীরস্থির থেকে বাংলাদেশের ইনিংস টেনে তোলার দায়িত্ব কাঁধে নিয়ে তামিম উল্টো ক্ষতি করছেন দলেরই। জিম্বাবুয়ের মতো বোলিং আক্রমণকেও কেনো এত সমীহ করছেন তিনি সেটি মেলাতে পারছেন না কেউই। নিজের জালে নিজেই আটকে চাপে ফেলছেন দলকে। খেলার ধরণ বদলালে হতে পারে সমস্যার সমাধান, আবারও সম্ভাবনার পথে ছুটতে পারেন তামিম!