চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

নানা সংকটেও ব্যাংকগুলোতে বেড়েছে পরিচালন মুনাফা

নানা অনিয়ম আর সংকটের মধ্যেও গত ২০১৮-১৯ অর্থবছরের শেষ ৬ মাসে (জানুয়ারি-জুন) বেসরকারি ব্যাংকগুলোর অধিকাংশই ভালো পরিচালন মুনাফা করেছে। এর মধ্যে ইসলামী ব্যাংক সবচেয়ে ভাল অবস্থানে রয়েছে।

তবে খেলাপি ঋণের চাপ ও ৯ শতাংশ সুদ কার্যকর করতে গিয়ে রাষ্ট্রায়ত্ত খাতের ব্যাংকগুলোর মুনাফা কমে গেছে। জানা গেছে, অগ্রণী ও বেসিক ব্যাংকের এক শত কোটি টাকার মতো মুনাফা কমেছে। জনতা ব্যাংকের মুনাফাও কমবে বলে ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে।

তবে ব্যাংকিং খাতে রেকর্ড পরিমাণ খেলাপি ঋণ থাকায়, আলোচিত ব্যাংকগুলোর নিট মুনাফা কত দাঁড়াবে তা নিয়ে তৈরি হয়েছে সংশয়।

কারণ গত বছরের ডিসেম্বরে ব্যাংকগুলোর পরিচালন মুনাফা ছিল ২৬ হাজার ৬৪০ কোটি টাকা। তবে খেলাপি ঋণের কারণে প্রকৃত মুনাফা হয় মাত্র ৪ হাজার ৪০ কোটি টাকা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বেসরকারি ব্যাংকের এক ব্যবস্থাপনা পরিচালক জানান: যেকোনো ব্যবসার প্রবৃদ্ধি খুবই স্বাভাবিক। ব্যাংকগুলোর পরিচালন মুনাফাতেও গত বছরের একই সময়ের তুলনায় প্রবৃদ্ধি হয়েছে। তবে মুনাফা খুব বেশি বাড়বে তা নয়। এছাড়া ব্যাংকের পরিচালন মুনাফাও প্রকৃত মুনাফা নয়। বছর শেষে পরিচালন মুনাফা থেকে কর, প্রভিশনসহ অনেক কিছু বাদ দিয়ে নিট বা প্রকৃত মুনাফা হিসাব করা হয়ে থাকে। ফলে মুনাফা খুব বেশি বাড়বে বলে মনে হয় না।

নিয়ম অনুযায়ী, পরিচালন মুনাফা থেকে খেলাপি ঋণসহ বিভিন্ন খাতে সঞ্চিত সংরক্ষণ এবং আয়কর বাদ দেয়ার পর যা অবশিষ্ট থাকে, তা হচ্ছে নিট মুনাফা। অনেক ব্যাংকের ক্ষেত্রে দেখা যায়, মোটা অংকের পরিচালন মুনাফা হলেও নিট মুনাফা দাঁড়ায় একেবারেই নগন্য। তাই শুধু পরিচালন মুনাফার হিসাবের ভিত্তিতে শেয়ারবাজারে বিনিয়োগের মতো সিদ্ধান্ত না নেয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন বিশ্লেষকরা।

প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, এবছর সবচেয়ে বেশি পরিচালন মুনাফা করেছে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড। ২০১৯ সালের প্রথম ৬ মাসে ১ হাজার ২২৩ কোটি টাকার পরিচালন মুনাফা করেছে ব্যাংকটি। আগের বছরের একই সময়ে যা ছিল ১ হাজার ২৩ কোটি টাকা। সেই তুলনায় ২শ কোটি টাকা বেশি মুনাফা করেছে ইসলামী ব্যাংক।

সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের ২৯৫ কোটি টাকা, আগের বছর ছিল ২৭৫ কোটি টাকা; ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের ২৮১ কোটি টাকা, আগে ছিল ১২৮ কোটি টাকা; আল আরাফাহ ইসলামী ব্যাংকের ৪০৫ কোটি টাকা, আগে ছিল ২৬০ কোটি টাকা; শাহজালাল ইসলামী ব্যাংকের ৩২০ কোটি, আগে ছিল ২১৫ কোটি টাকা।

এছাড়া এক্সিম ব্যাংকের ৩৩০ কোটি টাকা, আগের বছর ছিল ৩২৫ কোটি; প্রিমিয়ার ব্যাংকের পরিচালন মুনাফা ২৬৪ কোটি টাকা, গত বছর ছিল ২১০ কোটি; সাউথ ইস্ট ব্যাংকের মুনাফা হয়েছে ৫০৫ কোটি টাকা, আগে ছিল ৪৫৬ কোটি; তবে পূবালী ব্যাংকের পরিচালন মুনাফা কমেছে। ব্যাংকটির জুন শেষে মুনাফা হয়েছে ৫৪০ কোটি টাকা, আগের বছর একই সময় ছিল ৪৫৭ কোটি। ডাচ বাংলা ব্যাংকের মুনাফা ৫১০ কোটি টাকা, আগে ছিল ৪১৮ কোটি; মার্কেন্টাইল ব্যাংকের ৩৩১ কোটি টাকা, গত বছর ছিল ৩২৫ কোটি; ঢাকা ব্যাংকের ৩০০ কোটি, আগের বছর ছিল ২৬০ কোটি টাকা।

মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের ২৭৩ কোটি টাকা, গত বছর ছিল ২২৯ কোটি। ন্যাশনাল ব্যাংকের পরিচালন মুনাফা কমেছে। ব্যাংকটির জুন শেষে মুনাফা হয়েছে ২৬৮ কোটি টাকা, যা আগের বছর ছিল ৩৩৭ কোটি; এনসিসি ব্যাংকের ৩৬২ কোটি টাকা, আগে ছিল ২৯৭ কোটি; ব্যাংক এশিয়ার ৪৬৫ কোটি টাকা, গত বছর ছিল ৪১৭ কোটি; আইএফআইসি ব্যাংকের ২৯৭ কোটি টাকা, আগের বছর ছিল ১৫৫ কোটি; চতুর্থ প্রজন্মের মিডল্যান্ড ব্যাংকের পরিচালন মুনাফা হয়েছে ৬৫ কোটি টাকা, যা আগের বছর ছিল ৩৭ কোটি; যমুনা ব্যাংকের ৩১১ কোটি, আগে ছিল ২৬৭ কোটি টাকা।

এনআরবিসি মুনাফা করেছে ৯০ কোটি টাকা, আগের বছর ছিল ৭৭ কোটি; সাউথ বাংলা এগ্রিকালচার অ্যান্ড কমার্স ব্যাংকের ৯০ কোটি টাকা; আগে ছিল ৮৮ কোটি; মেঘনা ব্যাংকের ৪৫ কোটি টাকা, গত বছর একই সময়ে ছিল ৩৫ কোটি; মধুমতি ব্যাংকের পরিচালন মুনাফা হয়েছে ৯৮ কোটি, গত বছর একই সময়ে ছিল ৯০ কোটি টাকা।